পানির ট্যাংকে ফেলে সেদিন যেভাবে হত্যা করা হয় আরাফকে

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৯ মে, ২০২২ at ৭:৪৬ পূর্বাহ্ণ

আবদুল কাইয়ুমের স্বপ্ন ছিল ছেলে আরাফ বড় হয়ে ডাক্তার হবে। তার সেই স্বপ্ন মুছে যায় ২০২০ সালের ৬ জুন বিকেলে। মিয়াখান নগরের বাসিন্দা মো. ফরিদের পরিকল্পনায় বাড়িওয়ালা নুরুল আলমকে ফাঁসাতে সেদিন দুই বছরের শিশু আবদুর রহমান আরাফকে হত্যা করে ভবনের দারোয়ান মো. হাসান ও তার মা নাজমা বেগম। পরদিন ৭ জুন বাড়ির ছাদে পানির ট্যাংক থেকে আরাফের নিথর দেহটি উদ্ধার করে থানা পুলিশ।

মামলার আসামি ফরিদের সঙ্গে ১৯ নম্বর দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল আলম মিয়ার পূর্ব থেকে বিরোধ ছিল। আসামি হাসান নাজমা বেগমের ছেলে। হাসানের সহায়তায় নাজমা বেগম আরাফকে হত্যা করে। আরাফ নুরুল আলম মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া আবদুল কাইয়ুমের ছেলে।

বেসরকারি একটি ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী আবদুল কাইয়ুম ও গৃহিনী ফারহানা ইসলাম দম্পতির একমাত্র সন্তান ছিল আরাফ। ঘটনার দিন বিকেলে মিয়াখান নগরে ভবনের সামনে গাড়ি রাখার জায়গায় খেলছিল দুই বছরের শিশুটি। মায়ের কাছে চানাচুর খাওয়ার পর সে পানি খেতে চেয়েছিল। এ সময় আরাফের মা ফারহানা ইসলাম পানি আনতে ঘরের ভেতরে যান। ফিরে এসে দেখেন ছেলে নেই। এ ফাঁকে আদর করার ছলে আরাফকে নিয়ে ভবনের ছাদে চলে যান নাজমা বেগম। সেখানে পানির ট্যাংকে ফেলে আরাফকে হত্যা করা হয়। আরাফকে নিয়ে যাওয়ার সময় হাসান ভবনের নিচে গেটের কাছে দাঁড়ানো ছিলেন।

আটতলা ওই ভবনের মালিক ছিলেন ১৯ নম্বর দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী নুরুল আলম মিয়া। তাকে মামলায় ফাঁসানোর জন্য ওই ভবনের বাসিন্দা কোনো শিশুকে হত্যা করতে নাজমাকে ২০ হাজার টাকার লোভ দেখিয়েছিলেন পাশের বাড়ির ফরিদ। নুরুল আলম মিয়ার ভাই ইয়াছিন চৌধুরী আশু বিএনপির সমর্থন নিয়ে ওই নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। ফরিদ ছিলেন তারই অনুসারী। তাছাড়া নুরুল আলম মিয়ার প্রচারে হামলার ঘটনায় ফরিদকেও আসামি করা হয়েছিল, সে কারণে তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন। আর ঋণগ্রস্ত হয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত নাজমা টাকার জন্য ফরিদের ওই প্রলোভনে সাড়া দেন বলে তদন্তকারীদের ভাষ্য।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতিন আসামির মৃত্যুদণ্ড
পরবর্তী নিবন্ধইপিজেডে আগুনে পুড়েছে ৭১ দোকান-বসতঘর, বৃদ্ধের মৃত্যু