টাইগারদের দুর্দান্ত এক বিকাল

ক্রীড়া প্রতিবেদক | মঙ্গলবার , ১৭ মে, ২০২২ at ৪:৪৫ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের বিকেল অসাধারণ কেটেছে বাংলাদেশ দলের। বিশেষ করে শেষ সেশনে নাঈম হাসানের বোলিং এর পাশাপাশি তামিম-জয়ের দুর্দান্ত ব্যাটিং বাংলাদেশ শিবিরে এনে দিয়েছে স্বস্তি। টেস্টের প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশ দলের স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথ বলেছিলেন তারা শ্রীলংকাকে চারশর নিচে অল আউট করতে চায়। কোচের কথা রাখলেন দলের বোলাররা। বিশেষ করে বলতে গেলে স্পিনার নাঈম হাসান। এই তরুণের ঘূর্ণি জাদুতে দ্বিতীয় দিনের খেলা এক ঘণ্টা বাকি থাকতে ৩৯৭ রানে অল আউট হয় শ্রীলংকা।
জবাব দিতে নেমে দারুণ শুরু করেছেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং মাহমুদুল হাসান জয়। দুজন অবিচ্ছিন্ন থেকে ৭৬ রান তুলে নিয়েছেন। যদিও এখনো ৩২৮ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। তারপরও শুরুটা দারুণ আশা জাগানিয়া।
চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দুদিনের লড়াইটা হয়েছে মূলত অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস এবং নাঈম হাসানের মধ্যে। ব্যাট হাতে দারুণ উজ্জল্য ছড়ানো ম্যাথিউসের জবাব হয়ে ছিলেন বল হাতে ঘূর্ণি জাদু দেখানো নাঈম হাসান। দুজনের দ্রুপদী লড়াইয়ে জয়টা নাঈমেরই। কারণ তার হাতেই যে ম্যাথিউসের প্রাণ গেছে। স্বপ্নের সাথে হাত মেলাতে গিয়েও ফিরতে হলো হাত না মিলিয়ে। ম্যাথিউসকে ফিরতে হয়েছে ১৯৯ রানে আর তার দলকে ৩৯৭ রানে। বাংলাদেশের বিপক্ষে যেন একাই লড়াই করছিলেন অ্যঞ্জেলো ম্যাথিউস। তার দলের ৩৯৭ রানের মধ্যে ১৯৯ রান ম্যাথিউসের। টানা ১১ ঘণ্টা ফিল্ডিং করার পর ব্যাট হাতে কেমন করে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা তা নিয়ে শংকার মধ্যে ছিলেন অনেকেই। তবে বোলারদের অনুপ্রেরণাকে সামনে রেখে ব্যাটিংয়েও দারুণ শুরু করেছে বাংলাদেশ দলের দুই ওপেনার তামিম এবং মাহমুদুল হাসান জয়।
দ্বিতীয় দিন শেষে দুজন অবিচ্ছিন্ন আছেন ৭৬ রানে।
আগের দিনের ২৫৮ রান নিয়ে গতকাল সকালে আবার ব্যাট করতে নামেন দুই লংকান অপরাজিত ব্যাটসম্যান ম্যাথিউস এবং চন্ডিমাল। বেশ ভালই এগিয়ে যাচ্ছিলেন দুজন। আগের দিনের ৭৫ রানের সাথে আরো ৬১ রান যোগ করার পর এ জুটি ভাঙ্গেন নাঈম হাসান। তার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেন ৬৬ রান করা চন্ডিমাল। একই ওভারে ডিকভেলাকেও ফেরান নাঈম। সে সেশনে আর কোনো উইকেট নিতে পারেনি বাংলাদেশ। লাঞ্চের পর এবার সাকিবের জোড়া আঘাত। পরপর দুই বলে রামেশ মেন্ডিস এবং লাসিথ এম্বুলডেনিয়াকে ফিরিয়ে শ্রীলংকাকে সাড়ে তিনশর মধ্যে থামিয়ে দেওয়ার পথ প্রশস্ত করে দেন সাকিব।
কিন্তু লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন ম্যাথিউস। নবম উইকেটে বিশ্ব ফার্নান্ডোকে নিয়ে ৬২ রান যোগ করেন ম্যাথিউস। যেখানে ফার্নান্ডোর অবদান ৮৪ বলে ১৭। চা বিরতির আগে শরীফুলের বলে মাথায় আঘাত পেলে চা বিরতির পর আর মাঠে নামেননি ফার্নান্ডো। তার পরিবর্তে মাঠে নামনে আশিথা ফার্নান্ডো। কিন্তু বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে দেননি নাঈম। নিজের পঞ্চম শিকারে পরিণত করে ফেরান নাঈম। লড়াই তখন কেবল ম্যাথিউসের। কারণ তিনি তখন ডাবল সেঞ্চুরির একেবারে দ্বারপ্রান্তে। ধীরে ধীরে পৌঁছে গেলেন ১৯৯ রানে। কিন্তু হার মানতে হলো নাঈমের কাছে। হতাশা নিয়ে ম্যাথিউস ফিরলেও নাঈম ছাড়িয়ে গেছেন নিজেকে। ম্যাথিউসকে ফিরিয়ে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মত ইনিংসে ৬ উইকেট নিলেন চট্টগ্রামের এই তরুণ স্পিনার। শ্রীলংকা থামে ৩৯৭ রানে। ম্যাথিউসের ১৯৯ রানের ইনিংসটি খেলেছেন তিনি ৫৬৮ মিনিট ক্রিজে থেকে। বল খেলেছেন ৩৯৭ টি। চার মেরেছেন ১৯টি আর ছক্কা একটি। বাংলাদেশের পক্ষে ১০৫ রানে ৬টি উইকেট নেন নাঈম। ৬০ রানে ৩টি উইকেট নেন সাকিব আল হাসান।
ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই দারুণ আত্নবিশ্বাসী ছিলেন তামিম এবং জয়। দুজন দিনের বাকি সময় পার করে দিয়েছেন একেবারে নির্বিঘ্নে। রানও তুলেছেন বেশ ভাল গতিতে। ১৯ ওভারে ৭৬ রান তুলে দিন শেষ করেন দুজন। তামিম ৩৫ এবং জয় ৩১ রান নিয়ে আজ আবার ব্যাট করতে নামবেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিটিসিএলের দুই কর্মচারীর কারাদণ্ড
পরবর্তী নিবন্ধসাড়ে ৯ ঘণ্টা অস্ত্রোপচারে কবজি প্রতিস্থাপন