পেনশন মঞ্জুরির ফাইল আটকিয়ে ঘুষ গ্রহণের একটি মামলায় বিটিসিএলের দুই কর্মচারীর বিভিন্ন মেয়াদের সাজা হয়েছে। তারা হলেন, বিটিসিএল চট্টগ্রাম কার্যালয়ের প্রধান সহকারী কাম-ক্যাশিয়ার মো. গিয়াস উদ্দীন ও টেলিফোন অপারেটর মো. হুমায়ুন কবির।
এদের মধ্যে মো. গিয়াস উদ্দীনকে দণ্ডবিধির ১৬১/১৬৫(ক) ধারায় দুই বছরের সাজা, ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় আরও দুই বছরের সাজা ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অপরজন মো. হুমায়ুন কবিরকে দণ্ডবিধির ১৬১/১৬৫(ক) ধারায় এক বছরের সাজা, ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় ১ বছরের সাজা ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক মাসের সাজা দেয়া হয়।
গতকাল চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মুন্সী আব্দুল মজিদের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামি কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন। পরবর্তীতে আসামি মো. গিয়াস উদ্দীনকে কারাগারে পাঠিয়ে মো. হুমায়ুন কবিরের জামিন মঞ্জুর করা হয়। সাজার মেয়াদ এক বছর হওয়ায় ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬(২) ধারা অনুযায়ী আপীলের শর্তে এবং আবেদনের প্রেক্ষিতে ৩০ দিনের অন্তর্বর্তী এ জামিন মঞ্জুর করা হয়। দুদুক পিপি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু আজাদীকে এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সন্দেহাতীতভাবে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত দুই আসামিকে এ সাজা দিয়েছেন। পুরো বিচার পক্রিয়ায় ১৪ জন সাক্ষীর মধ্য থেকে গুরুত্বপূর্ণ ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। পিপি বলেন, ঘটনার সময় আসামিদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানোর হয়েছিল। পরবর্তীতে তারা জামিন পান।
২০১৬ সালের ১৭ আগস্ট নগরীর নন্দনকানন এলাকায় থাকা বিটিসিএল, চট্টগ্রাম কার্যালয়ে পেনশন মঞ্জুরির ফাইল আটকিয়ে কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম ভূইয়ার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণের এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি জানতে পেরে সেখানে তাৎক্ষনিক অভিযান চালায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাব্বির রহমান। উক্ত অভিযানে সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামি হাতে নাতে গ্রেপ্তার হয়। এ ঘটনায় দুদক, চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সাবেক উপ-সহকারী পরিচালক মানিক লাল দাশ বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় মামলাটি দায়ের করেন। আদালতসূত্র জানায়, মামলা দায়ের পরবর্তী দুদক, চট্টগ্রাম-১ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. মোশারফ হোসেন মৃধা তদন্তের দায়িত্ব পান। তদন্ত শেষে তিনি পরের বছরের ২১ মে বিটিসিএল কর্মকর্তা মো. গিয়াস উদ্দীন ও মো. হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। পরবর্তীতে একই বছরের ২৪ জুলাই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক।