চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সম্মেলন সফল করতে ১৩ দফা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সম্মেলনের জন্য মহানগরীর প্রতিটি ওয়ার্ড ও উত্তর-দক্ষিণের প্রতিটি উপজেলায় (ইউনিটের) ২৫ জন করে কাউন্সিলর তালিকা আগামী ১৮ মে এর মধ্যে কেন্দ্রে জমা দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম। গতকাল চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা যুবলীগের পৃথক সম্মেলন প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
উল্লেখ্য, আগামী ২৮ মে দক্ষিণ জেলা যুবলীগ, ২৯ মে উত্তর জেলা যুবলীগ এবং ৩০ মে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনকে সামনে রেখে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টায় কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সম্মেলন প্রস্তুতি সভা আন্দরকিল্লাস্থ দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বিকাল ৫টায় উত্তর জেলা যুবলীগের সম্মেলন প্রস্তুতি সভা দোস্ত বিল্ডিংস্থ দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় মহানগর যুবলীগের সম্মেলন প্রস্ততি সভা দারুল ফজল মার্কেটস্থ দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
তিন জেলার সম্মেলন প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম বলেছেন, এখন আর আগের সেই যুবলীগ নেই। যুবলীগ এখন নতুন মাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে, মানবিক যুবলীগে এগিয়ে যাচ্ছে। এখন যারা নতুন নেতৃত্বে আসতে চান-তাদের বায়োডাটা দেখে ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হবে। এখানে গোপনে কোনো কিছু করা হবে না, স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে। তবে যুবলীগে কোনো সন্ত্রাসী-মাস্তান-চাঁদাবাজদের স্থান হবে না।
ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম বলেন, সম্মেলন সফল করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। ঢাকার পর চট্টগ্রাম মহানগর গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট। মনে রাখতে হবে এই সংগঠন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজে শেখ ফজলুল হক মনির মাধ্যমে গঠন করেছেন। তাই কোনো কিছুর বিনিময়ে যুবলীগের নেতৃত্বে আসা যাবে না। ত্যাগী কর্মীর মূল্যায়ন অবশ্যই হবে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নানা ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করছেন। যুবলীগের প্রত্যেক কর্মীকে প্রধানমন্ত্রীর ভ্যানগার্ড হিসাবে কাজ করতে হবে। সম্মেলন সফল করতে হলে শৃঙ্খলাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। মহানগর যুবলীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এম.পি।
উত্তর জেলার প্রস্তুতি সভায় শেখ ফজলে নাঈম বলেন, উত্তর জেলা যুবলীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছে ২০০৩ সালে। এরপর ২০১৩ সালে এস এম আল মামুনকে সভাপতি এবং এস এম রাশেদুল আলমকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এই দীর্ঘ সময়ে উত্তর জেলায় নতুন কোনো নেতৃত্ব গড়ে ওঠেনি। অনেক মেধাবী নেতৃত্ব বঞ্চিত হয়েছে। যার ফলে অনেক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা যুবলীগে স্থান পাননি। অনেকেই যুবলীগের কোনো পদ-পদবী ছাড়াই এতো বছর পার্টি করেছেন। আমরা আপনাদেরকে আশ্বস্ত করতে চাই-যারা ত্যাগী-যারা দলের জন্য নিবেদিত কর্মী তাদেরকে সামনে নিয়ে আসতে। আমাদের কর্মকাণ্ডের জন্য যদি দল ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে কোনো ভাবেই মেনে নেয়া যাবে না।
সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, রাজনীতির জন্য চট্টগ্রাম মহানগর গুরুত্বপূর্ণ জেলা। তাই এই মহানগরে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন শক্তিশালী নেতৃত্ব আনতে হবে। যুবলীগের বর্তমানে চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম মহানগরে ভালো নেতৃত্ব উপহার দিবেন।
প্রতি ওয়ার্ড হতে ২৫ জন কাউন্সিলরের তালিকা ১৮ তারিখের মধ্যে জমা দিতে হবে। সংগঠন করবেন আপনারা, নতুন নেতত্বের মাধ্যমে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে আপনাদেরকে। দলের ত্যাগী-মেধাবী নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করবেন।
চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক মোঃ মহিউদ্দিন বাচ্চুর সভাপতিত্বে যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকার সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের উপ ক্রীড়া সম্পাদক মোঃ আবদুর রহমান, সহ-সম্পাদক নাসির উদ্দীন মিন্টু, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদ, দিদারুল আলম দিদার, মাহবুবুল হক সুমন প্রমুখ।
দক্ষিণ জেলা যুবলীগের প্রস্তুতি সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আ.ম.ম. টিপু সুলতান চৌধুরী। সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক পার্থ সারথী চৌধুরীর সঞ্চালনায় কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতারা বক্তব্য রাখেন।
এদিকে উত্তর জেলা যুবলীগের সম্মেলন প্রস্তুতি সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ও সীতাকুণ্ড উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আল মামুন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও হাটহাজারী উপজেলার চেয়ারম্যান এস এম রাশেদুল আলমের সঞ্চালনায় সভায় জেলার নেতারা বক্তব্য রাখেন।