চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের চলমান সমস্যা নিরসনে দুই দফা বৈঠক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ছাত্রপ্রতিনিধি, সিএনজি চালক, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও পুলিশ প্রশাসন এতে উপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘ মেয়াদী সমাধানের লক্ষ্যে এ বৈঠক করা হয়। বৈঠকে শিক্ষার্থীকে মারধরকারী স্থানীয় দোকানদার মো. জাবেদ মুচলেকা দিয়ে ছাড় পেয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুর ১টার দিকে হাটহাজারী থানায় প্রথম বৈঠক হয়। এসময় হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলামের কাছে দোকানদার জাবেদ মুচলেকা দেন। পরে বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) কার্যালয়ে দ্বিতীয় বৈঠক হয়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য আলোচনা করা হয়।
হাটহাজারী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর গায়ে হাত তুলে জাবেদ জঘন্য অপরাধ করেছে। আমরা ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে মামলা করতে বলেছি। কিন্তু ওই শিক্ষার্থী তা করেনি। তবে জাবেদ সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছে। একইসাথে জীবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করবে না- মর্মে মুচলেকা দিয়েছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীও তাকে ক্ষমা করে দিয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. শহিদুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, গত কয়েকদিনের চলমান বিষয় নিয়ে আমরা বৈঠকে বসেছি। এর মধ্যে মারধরকারী জাবেদকে আমরা শনাক্ত করে থানায় নিয়ে এসেছি। তিনি মুচলেকা দিয়েছেন। বাকি যারা শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ করেছে তাদের স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সাবধান করে দেবে বলে কথা দিয়েছে। কাল (আজ) আবার সিএনজি মালিক সমিতির সঙ্গে বসব চাকসুতে। তিনি বলেন, আমরা ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্ট থেকে নিউ মার্কেট পর্যন্ত বাস চালুর পরিকল্পনা নিয়েছি। এ ব্যাপারে বাস মালিকের সঙ্গে কথা হয়েছে। আর ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে বাস চালুর বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা আছে, তবে সেটা আগে সিন্ডিকেটে পাশ হতে হবে।
বৈঠকে হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাদাত হোসেন, হাটহাজারী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম, চবির ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. শহিদুল ইসলাম, সহকারী প্রক্টর জিয়াউল ইসলাম, রামেন্দু পারিয়াল, আহসানুল কবির পলাশ, অরুপ বড়ুয়া, ফতেহপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদিন, স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার এবং ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ছাত্রলীগের বিভিন্ন পক্ষের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে আরাফাত রায়হান নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী মোটরসাইকেল নিয়ে ১ নম্বর গেইট থেকে ক্যাম্পাসে আসার পথে একটি সিএনজি টেক্সির সঙ্গে সামান্য সংঘর্ষ হয়। এরপর স্থানীয় ওই সিএনজি চালককে সাবধানে গাড়ি চালাতে বলে আরাফাত। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে জাবেদ নামে এক দোকানদার এসে সেই শিক্ষার্থীকে মারধর শুরু করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা সিএনজি চলাচল বন্ধ করে দেয়। এর জের ধরে শহর থেকে ক্যাম্পাসে আসার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ শিক্ষার্থীকে এলোপাতাড়ি মারধর করে স্থানীয় ও সিএনজি চালকরা। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরাও মূল ফটক আটকে দিয়ে আন্দোলন শুরু করে।