প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার দুই স্পিনার মহারাজ এবং হারমার বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন উড়িয়ে দিয়েছিলেন। ক্রিকেট বিশ্বে এ দুজন তেমন স্বীকৃত স্পিনার নন। তারপরও প্রথম টেস্টে হারের পর এই দুই প্রোটিয়াস স্পিনারকে নিয়ে নিশ্চয়ই কাজ করেছে টাইগার টিম ম্যানেজম্যান্ট। তবে কতটা কাজ করেছে সেটা প্রমাণ পাওয়া গেল পরের টেস্টে। প্রথম টেস্টে চতুর্থ ইনিংসে এই দুই প্রোটিয়াস স্পিনার যতটানা দাপট দেখিয়েছিল দ্বিতীয় টেস্টে আরো বেশি দাপট দেখালেন বল হাতে। আর তাতে পরিণতি যা হওয়ার তাই হয়েছে। প্রথম টেস্টে ২২০ রানে হারানো বাংলাদেশকে এবার হারাল ৩৩২ রানের বিশাল ব্যবধানে। তবে এই টেস্টে শেষ ইনিংসে বাংলাদেশ খানিকটা উন্নতি করেছে। ডারবান টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে ৫৩ রানে গুটিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ জোহানেসবার্গ টেস্টে করেছে ৮০ রান। হন্তারক যথারীতি মহারাজ এবং হারমার। প্রথম টেস্টের মত এই টেস্টেও চতুর্থ ইনিংসে মহারাজ নিয়েছেন ৭ উইকেট। ২০০৭ সালের শ্রীলঙ্কা সফরের পর এই প্রথম টানা দুই টেস্টে একশর নিচে গুটিয়ে গেল বাংলাদেশ।
দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য ব্যাপারটি ঠিক উল্টো। টানা দুই টেস্টে তারা গড়েছে গৌরবময় কীর্তি। ডারবানের চতুর্থ ইনিংসের মতো এখানেও দুই বোলার মিলেই গুঁটিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশকে। সেই টেস্টের মতো এবারও কেশভ মহারাজের শিকার ৭ উইকেট। সাইমন হার্মারের ৩টি। মহারাজ নিজে গড়েছেন অনন্য এক কীর্তি। টেস্ট ইতিহাসে প্রথম বোলার হিসেবে টানা দুই টেস্টে চতুর্থ ইনিংসে নিয়েছেন ৭ উইকেট।
আগের দিন ২৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে হারের প্রহর গুনছিল বাংলাদেশ। দেখার বিষয় ছিল চতুর্থ দিন বাকি ৭ জনকে নিয়ে কতটা ব্যাট করতে পারে টাইগাররা। কিন্তু শেষ দিনে এক ঘণ্টার বেশি ব্যাট করতে পারল না মোমিনুলের দল। আগের দিনের সাথে আর ৬ রান যোগ করতেই ফিরেন মুশফিক। তিনি ফিরলেন ১ রান করে। ৫ রান পর ৩৮ রানের মাথায় ফিরেন মোমিনুল। পুরো সিরিজে চরম ব্যর্থ টাইগার দলপতি ফিরেন ৫ রান করে। রানের খাতা খোলা হয়নি ইয়াসির আলি রাব্বির। চাপের মুখে কখনোই দাঁড়াতে পারছেন না রাব্বি। আরো একবার হতাশার মিছিলে যোগ দিলেন এই তরুণ।
এরপর লিটন দাশ এবং মেহেদী হাসান মিরাজের ২৫ রানের জুটিটা না হলে হয়তো প্রথম টেস্টের চাইতেও বড় লজ্জায় পড়তে হতো বাংলাদেশকে। লিটন ২৭ এবং মিরাজ ২০ রান করে কোনমতে মান রক্ষা করে বাংলাদেশের। পরের তিন ব্যাটসম্যানের কেউই রানের খাতা খুলতে পারেনি। ফলে ৮০ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ মাত্র ২৩.৩ ওভারে। দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিনার কেশভ মহারাজ ৪০ রানে ৭ উইকেট নিয়ে ধ্বসিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। আর তার সঙ্গী হারমারের শিকার তিনটি। প্রথম টেস্টের চতুর্থ ইনিংসের মত এই টেস্টের চতুর্থ ইনিংসেও বোলার পরিবর্তন করতে হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকাকে। দুই টেস্টে বাংলাদেশকে গুটিয়ে দেওয়া কেশভ মহারাজ জিতেছেন ম্যাচ এবং সিরিজ সেরার পুরষ্কার দুটি।












