দিন দিন প্রকট হচ্ছে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব

ঈদের পর সম্মেলনের প্রস্তুতি কেন্দ্রের

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১১ এপ্রিল, ২০২২ at ৫:৫০ পূর্বাহ্ণ

আগামী জুনে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন করার টার্গেট রয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের। কেন্দ্রীয় নেতারা সম্মেলনের ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই নগর আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে। নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব দিন দিন প্রকট হয়ে উঠছে।
এদিকে সম্মেলনের জন্য ঈদের পরপর অসম্পন্ন ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলন করার জন্য নগরীর ১৫ থানায় ১৫টি সাংগঠনিক টিম গঠন করে দেন কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা চট্টগ্রামে বর্ধিত সভা করে ১৫ সাংগঠনিক টিমের আহ্বায়কদের নাম অনুমোদন দিয়েছেন। নগর আওয়ামী লীগের অন্য সদস্যদের নিয়ে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার জন্য নগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও সহসভাপতি ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুলকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। এই ৪ শীর্ষ নেতা বসে ১৫ সাংগঠনিক টিম পূর্ণাঙ্গ করলেও এখনো পর্যন্ত ১৫ সাংগঠনিক টিমের সদস্যদের তাদের কার্যক্রম শুরুর জন্য চিঠি দিয়ে না জানানোয় এ নিয়ে একাংশের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। ক্ষোভের অংশ হিসেবে নগর সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে কেন্দ্রে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ৯ এপ্রিল। সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী এবং নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের কাছে লিখিত অভিযোগ পাঠান।
এর আগে ৮ এপ্রিল রাতে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বহদ্দারহাটের বাসায় নগরীর ১৫ থানার সাংগঠনিক টিমের অধিকাংশ আহ্বায়ক বৈঠক করেন। বৈঠকে নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, সহসভাপতি ও সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, সাবেক প্রশাসক ও সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, সহসভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী ও বদিউল আলম, কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আদনান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক, অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, মশিউর রহমান চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরদিন কেন্দ্রে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২২ মার্চ হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে সন্ধ্যায় তিনি সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ঈদের পরে জুনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর সুবিধামতো একটি তারিখে নগর আওয়ামী লীগের কাউন্সিল করতে চাই। এজন্য ঈদের পরপরই মহানগর আওয়ামী লীগের অসম্পন্ন ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলন করার সিদ্বান্ত গ্রহণ করেছি। আজকে সাংগঠনিক টিম ভাগ করে দিলাম। এখন একদিনে ১৫টি ওয়ার্ড সম্মেলন করতে সমস্যা নেই। একই দিনে ১৫টি ইউনিট ও থানা সম্মেলন করতে সমস্যা নেই। একই দিনে একাধিক থানা সম্মেলন করতেও সমস্যা নেই। আগস্টে আমরা কোনো সম্মেলন করি না। সেজন্য আমাদের টার্গেট হচ্ছে জুনের মধ্যে সম্মেলন শেষ করতে চাই।
ওইদিন তিনি সাংবাদিকদের আরো জানিয়েছিলেন, আমরা নগরীর ১৫টি থানার সাংগঠনিক কার্যক্রম তদারকির জন্য ১৫টি সাংগঠনিক টিম গঠন করেছি। সাংগঠনিক টিমের প্রধানদের নাম অনুমোদন করেছি। সাংগঠনিক টিমের প্রধানদের নিয়ে মিটিং করলাম। সেই মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ২৩ মার্চ সন্ধ্যায় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, আ জ ম নাছির, রেজাউল করিম চৌধুরী, সহসভাপতি ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল বসে এই সাংগঠনিক টিমকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেবেন। বর্তমানে মহানগর আওয়ামী লীগের জীবিত ৬২ জন সদস্য আছেন। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বাদে বাকি ৬০ জনের মধ্যে ৪ জন করে ১৫টি সাংগঠনিক টিমে ভাগ করে দেওয়া হবে। এই সাংগঠনিক টিম সংশ্লিষ্ট থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক বা থানা আহ্বায়ক বা যুগ্ম আহ্বায়ক, ওয়ার্ড সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদককে সঙ্গে নিয়ে ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলনের ব্যবস্থা করবেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচিরকুট লিখে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা
পরবর্তী নিবন্ধআমাদের মধ্যে কেউ কেউ আত্মঘাতী আচরণে উন্মত্ত : নাছির