নানা প্রাণীর সাথে এবার ভেসে এলো মস্তকবিহীন লাশ

হিমছড়ি সৈকত

কক্সবাজার প্রতিনিধি | শুক্রবার , ২৫ মার্চ, ২০২২ at ৭:৪৫ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজার শহরের কলাতলী সৈকতের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সামুদ্রিক জোয়ারের সাথে হাজার হাজার মরা মাছ ভেসে আসে গত শনিবার। পরদিন রোববার উখিয়ার পাটুয়ারটেক সৈকতে ভেসে আসে একটি মরা ডলফিন। এ দুটো ঘটনার রেশ না কাটতেই গত বুধবার মধ্যরাতে হিমছড়ি সৈকতে ভেসে এলো মানুষের মস্তকবিহীন লাশসহ নানা প্রাণির মৃতদেহ। বুধবার রাতে মেরিন ড্রাইভের দরিয়ানগর-হিমছড়ি ১ নং ব্রিজ পয়েন্টের সামনের সৈকতে গলিত মৃতদেহটির সাথে আরো ভেসে আসে মরা কচ্ছপ, প্লাস্টিকের জুতা, স্যান্ডেল, ব্যাগ, দড়ি, জাল, ককসিট, কাঠ, বাঁশ এবং প্লাস্টিকের টুকরা।
স্থানীয় বাসিন্দা বাহাদুর জানান, বুধবার রাত ১১ টার দিকে সামুদ্রিক জোয়ারের সাথে সৈকতে বর্জ্য ভেসে আসতে থাকে। এ সময় মরা কাছিমসহ নানা ধরনের বর্জ্যের সাথে ভেসে আসে গলাবিহীন গলিত মৃতদেহটি। পরে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে হিমছড়ি ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে সৈকতেই পুঁতে ফেলে। তিনি জানান, বর্জ্য আসার সময় দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছিল এবং সামুদ্রিক ঢেউ সরাসরি কূলে আচড়ে পড়ছিল। তবে মাঝেমধ্যে দমকা হাওয়াও বইছিল।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, দরিয়ানগর-হিমছড়ি পয়েন্ট সৈকতের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নানা ধরনের বর্জ্য ভেসে এসেছে। যেখানে প্লাস্টিকের জুতা, স্যান্ডেল, ব্যাগ, দড়ি, জাল, ককসিট, কাঠ, বাঁশ এবং প্লাস্টিকের টুকরা ছাড়াও মরা কচ্ছপ, সাপ ও মস্তকবিহীন মৃতদেহও ছিল। এর আগে ২০২০ সালের জুলাই মাসে দুই দফায় বর্জ্য-বন্যা দেখা দেয় একই সৈকতে। এ সময় নানা বর্জ্যের সাথে মরা কচ্ছপ, সাপসহ আরো বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণির মৃতদেহ ভেসে এসেছিল। হিমছড়ি সৈকতে গত বছর এপ্রিল মাসে পরপর দুদিনে দুটি মরা তিমি ভেসে আসে। ২০২০ সালের এপ্রিল মাসের শুরুতেও টেকনাফ সৈকতে দুটি মরা ডলফিন ভেসে আসে। এর কয়েকদিন আগে ডলফিন দুটিকে কক্সবাজার শহরের কলাতলী সৈকতে খেলা করতে দেখা যায়।
রামু থানার ওসি আনোয়ারুল হোসাইন বলেন, হিমছড়ি সৈকতে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির মস্তকবিহীন মৃতদেহ ভেসে আসার খবর পেয়ে তা উদ্ধার করা হয়েছে। লাশটি এতই গলিত ছিল যে, শরীর থেকে মাংশ পঁচে হাড়গোড় বেরিয়ে এসেছে। লাশের শরীরে হাফপ্যান্ট পরা দেখে মৃতদেহটি কোনো জেলের এবং এক মাসের বেশি আগে সাগরে ডুবেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ডিএনএ টেস্ট ছাড়া মৃতদেহটির পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব নয়। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে হিমছড়ি ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে সৈকতেই পুঁতে ফেলেছে। মৃতদেহটির কোন দাবিদার পাওয়া গেলে পরিচয় শনাক্তের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকলকাতা বন্দরে ডুবল বাংলাদেশি জাহাজ
পরবর্তী নিবন্ধছোট ভাইয়ের কোদালের কোপে জখম বড় দুই ভাই