৩৮ চিকিৎসক, ১২ ঘণ্টার অস্ত্রোপচার

আলাদা দেহ পেল লাবিবা-লামিসা

| মঙ্গলবার , ২২ মার্চ, ২০২২ at ৮:৩৬ পূর্বাহ্ণ

তৃতীয় দফায় ১২ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে আলাদা হল জোড়া জমজ শিশু লাবিবা-লামিসা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গতকাল সোমবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত চলা এই অস্ত্রোপচারে যুক্ত ছিলেন ৩৮ জন চিকিৎসকের একটি দল। এরপর রাত ৯টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হয়, অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে, শিশু দুটির জ্ঞান ফিরেছে। খবর বিডিনিউজের। নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার যদুনাথপুর গ্রামের লাল মিয়া-মনুফা বেগমের সন্তান লাবিবা-লামিসা। ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল তাদের জন্ম। জোড়া শিশু দুটির যখন নয় দিন বয়স, তখন রংপুর মেডিকেল কলেজে গেলে তাদের ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। সেসময় তাদের এক দফা অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকরা এক বছর পর আসতে বলেন। গত ১৩ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেলে তাদের দ্বিতীয় দফা অস্ত্রোপচার করা হয়। তার তিন মাস পর সোমবার অস্ত্রোপচারে আলাদা করা হল শিশু দুটিকে।
সংবাদ সম্মেলনে অস্ত্রোপচারের বিস্তারিত তুলে ধরেন চিকিৎসক দলের প্রধান এবং হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আশরাফ-উল হক কাজল। তিনি বলেন, শিশু দুটির যোনীদ্বার ও মলদ্বার পৃথক করা প্রথমে করা হয়। এটি করে শিশু সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকরা। ওদের যোনীদ্বার, পায়ুপথ ও প্রস্রাবের রাস্তা একসঙ্গে জোড়া লাগানো ছিল। ওগুলোকে ক্ষতি না করে পৃথক করা বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল। আমরা সেটা সফলভাবে করতে সক্ষম হয়েছি। তাদের জোড়া মেরুদণ্ড আলাদা করারও চ্যালেঞ্জের ছিল বলে জানান তিনি। ওদের মেরুদণ্ড নিচের দিকে জোড়া লাগানো ছিল। স্পাইনাল কর্ডে যদি আঘাত লাগে, তাহলে স্থায়ীভাবে পক্ষাঘাতগ্রস্থ হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এটা নিয়ে খুব ভয় ছিল। কিন্তু নিউরোসার্জনদের দল ওই অস্ত্রোপচারও সফলভাবে শেষ করেছেন।
সফল বলার ব্যাখ্যায় অধ্যাপক আশরাফ বলেন, সফল বলছি কারণ, দুটো বাচ্চা পৃথক হওয়ার পর তারা পা নাড়তে পারছে। যদি পা নাড়তে না পারত, তাহলে আমরা বুঝতাম তাদের স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তারা দুজন পঙ্গু হয়ে যেতে পারত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগভীর নিম্নচাপ রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে বাংলাদেশ শঙ্কামুক্ত
পরবর্তী নিবন্ধ‘ঝুঁকির’ কথা বলে অর্ধশত বছরের বৃক্ষ নিধন