পরিবেশ অধিদপ্তরের নাম ভাঙিয়ে টাকা দাবি, হুমকি

চক্রের বিরুদ্ধে তিন থানায় ডায়েরি সহায়তা চাওয়া হয়েছে র‌্যাবের

চকরিয়া প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ১৭ মার্চ, ২০২২ at ৬:২৭ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজার সদর ও বিভিন্ন উপজেলায় পরিবেশ অধিদপ্তরের নাম ভাঙিয়ে ইটভাটা, বিভিন্ন হাসপাতালসহ শিল্পোদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানে টাকা দাবিসহ হুমকি প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। এই ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তিন থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। একইসাথে প্রতারক চক্রের তৎপরতা বন্ধে সহায়তা চাওয়া হয়েছে র‌্যাবের।
ধারণা করা হচ্ছে, পরিবেশ অধিদপ্তরের সাম্প্রতিক সময়ের অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে মাঠে তৎপর হয়েছে সংঘবদ্ধ একটি প্রতারক চক্রটি। পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও ড্রাইভাবের নাম ভাঙিয়ে প্রতারক চক্রটি ইতোমধ্যে কিছু প্রতিষ্ঠান থেকে টাকাও হাতিয়েছে। বিষয়টি নজরে আসার পর পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের উপ-পরিচালক (ডিডি) শেখ মো. নাজমুল হুদা বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর, চকরিয়া ও রামু থানায় পৃথক সাধারণ ডায়েরি রুজু করেছে। এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য র‌্যাব-১৫ এর কমান্ডিং অফিসারকেও অনুরোধ করা হয়েছে। পরিবেশ কর্মকর্তার করা সাধারণ ডায়েরিতে জানানো হয়, চকরিয়া পৌরশহরের এশিয়ান হাসপাতালের ম্যানেজার গত ৮ মার্চ অভিযোগ করেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক নজরুল ইসলাম খান পরিচয় দিয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তি ০১৮২৩৯৬৭৪৯৩ নম্বর থেকে ফোন করে নগদ অ্যাকাউন্টে মোটা অংকের টাকা পাঠাতে বলা হয়। না হয় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে বড় অংকের জরিমানা করার হুমকি দেওয়া হয়। এর আগে ৫ মার্চ ঈদগাঁও উপজেলার টিকে ব্রিকস-এর মালিক তকীকে ০১৭২৩৫৫৫৩৩২ নম্বর থেকে ফোন করে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের কর্মকর্তা মাহবুব পরিচয় দিয়ে টাকা দাবি করা হয়। না দিলে অভিযান পরিচালনা করে ইটভাটা ভেঙে ফেলার হুমকি প্রদান করা হয়। একইভাবে চকরিয়ার জমজম হাসপাতাল, মা-শিশু জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ০১৩২১৮৯০৫০৭ ও ০১৭৫৯২৩৪৬৮৮ নম্বর থেকে ফোন করে টাকা দাবি করা হয়। এছাড়া সম্প্রতি রামুর কেবিসি ইটভাটার মালিককে ০১৪০৭৪০৬৬৭৩ নম্বর থেকে ফোন করে পরিবেশের ড্রাইভার পরিচয়ে অভিযানের ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি করা হয়।
সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের অপতৎপরতায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের পরিদর্শক মাহবুবুল ইসলাম। তিনি বলেন, সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রটি ইতোমধ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে টাকা হাতিয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে কারা সম্পৃক্ত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সত্যতা নিশ্চিত করে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শেখ মো. নাজমুল হুদা আজাদীকে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে উপরোক্ত মোবাইল নম্বর থেকে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়ে মোটা অংকের টাকা চাওয়া হচ্ছে। জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন শিল্পোদ্যোক্তার কাছ থেকে এমন অভিযোগ পাওয়ার পর আমরাও অবাক। তাই চক্রটিকে শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনটি থানা ও র‌্যাবের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশিশু আইন মেনে মিতু-বাবুলের সন্তানদের জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ
পরবর্তী নিবন্ধসৈকতের ঝাউবাগান থেকে অস্ত্রসহ ৪ ছিনতাইকারী আটক