জাতীয় পর্যায়ে ‘গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ’ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে চট্টগ্রামের ডা. কনক কান্তি বড়ুয়াসহ ১০ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২২ এর জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনীত করা হয়েছে। গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য, প্রখ্যাত নিউরোসার্জন অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার বাড়ি মীরসরাই উপজেলার হাইতকান্দি ইউনিয়নের দমদমা গ্রামে। গতকাল সন্ধ্যায় তিনি আজাদীকে বলেন, রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পাওয়া সবসময় গৌরবের। কখনো রাষ্ট্র আমাকে পুরস্কৃত করবে, এই ভেবে কাজ করিনি। তবে সম্মাননা পেলে কাজ করার উৎসাহ আরো বেড়ে যায়। আমি স্বাস্থ্যসেবা ও গবেষণা খাতে আরো বেশি কাজ করার চেষ্টা করব। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর এই সময়ে আমাকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেয়ায় আমার আনন্দের মাত্রা আরো বেড়ে গেল। আমাকে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত করায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।
উল্লেখ্য, ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া ১৯৭৭ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। ১৯৯০ সালে এফসিপিএস, ২০০৩ সালে এমএস (নিউরো সার্জারি) ও ২০০৪ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বিএসএমএমইউর নিউরো সার্জারি বিভাগের সভাপতি ও সার্জারি অনুষদের ডিনের দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৭ সালে তিনি বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের ২৪ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০২১ সালের ২৩ মার্চ উপাচার্যের পদ থেকে অবসরে যান।
নিউরো সার্জারিতে অসামান্য অবদানের জন্য ২০১৮ সালে তিনি আন্তর্জাতিক বিএমএএনএ রিকগনিশন অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। ২০১৯ সালে অধ্যাপক পিএস রামানি লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পান। এ পর্যন্ত তার ৪৭টিরও বেশি গবেষণাপত্র দেশি-বিদেশি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
এদিকে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ ক্যাটাগরিতে পদক পাচ্ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী, শহীদ কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা (বীর বিক্রম), আব্দুল জলিল, সিরাজ উদ্দীন আহমেদ, মরহুম মোহাম্মদ ছহিউদ্দিন বিশ্বাস ও মরহুম সিরাজুল হক। চিকিৎসায় আরো পাচ্ছেন অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল ইসলাম। সাহিত্যে মরহুম মো. আমির হামজা ও স্থাপত্যে মরহুম স্থপতি সৈয়দ মাইনুল হোসেন। এবার প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট এ পুরস্কার পাচ্ছে। এটি দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় বেসামরিক পুরস্কার। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর এ পুরস্কার দিয়ে আসছে।
আমির হামজাকে নিয়ে শোরগোল : বাংলানিউজ জানায়, সাহিত্যে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২২’ এর জন্য মনোনীত হয়েছেন মো. আমির হামজা। তার নাম অনেককে কৌতূহলী করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা-সমালোচনা করছেন অনেকে। তালিকায় আমির হামজা নামটি দেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিস্ময় প্রকাশ করেন অনেকে।
তার প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘বাঘের থাবা’। মুজিববর্ষ উপলক্ষে ‘পৃথিবীর মানচিত্রে একটি মুজিব তুমি’ শীর্ষক গানের বইটি কবির প্রকাশিত দ্বিতীয় গ্রন্থ। ‘একুশের পাঁচালি’ নামে তার আরেকটি বই প্রকাশ হয়েছে। তিনি মারা যান ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি।