ফ্রেন্ডস ক্লাবের কাছে হেরে ব্রাদার্সের শিরোপা স্বপ্নে বড় ধাক্কা

ক্রীড়া প্রতিবেদক | রবিবার , ১৩ মার্চ, ২০২২ at ১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ

শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে শক্তিশালী দল গড়ে এবারের প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে অবতীর্ণ হয়েছিল ব্রাদার্স ইউনিয়ন। কিন্তু গ্রুপ পর্বে ইস্পাহানী স্পোর্টিং ক্লাবের কাছে হেরে এক সময় তাদের সুপার ফোর পর্বে যাওয়াটা কঠিন হয়ে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত শক্তিশালী প্রতিপক্ষ পাইরেটস অব চিটাগাংকে পরাজিত করে সুপার ফোর পর্বে জায়গা করে নেয় ব্রাদার্স। কিন্তু সুপার ফোর পর্বে শুরুটা ভাল করতে পারলনা ব্রাদার্স। ফ্রেন্ডস ক্লাবের কাছে হেরে গেল সুপার ফোর পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে। আর এর ফলে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন বড় একটা ধাক্কা খেল ব্রাদার্সের। গতকাল জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে রোমাঞ্চ জাগানো এক ম্যাচে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ১ উইকেটে পরাজিত করে ফেন্ডস ক্লাবই শিরোপা নির্ধারনী পর্বে এগিয়ে থাকল। এক সময় মনে হচ্ছিল ম্যাচটি সহজে জিতে যাবে ফ্রেন্ডস ক্লাব। কিন্তু দুর্দান্তভাবে ফিরে আবার ম্যাচের লাগাম নিজেদের হাতে নিয়ে নেয় ব্রাদার্স। শুধু তাই নয় এক সময় মনে হচ্ছিল ম্যাচের ফল এক রকম পকেটে ঢুকে গেছে ব্রাদার্সের। কিন্তু শেষটা রক্ষা হলোনা ব্রাদার্সের। দারুনভাবে রোমাঞ্চ জাগিয়ে শ্বাসরূদ্ধকর ম্যাচটি জিতে নিল ফ্রেন্ডস ক্লাব। আর তাতে শিরোপা স্বপ্ন অনেকটাই শেষ হয়ে গেল ব্রাদার্সের। কারন গ্রুপ পর্বে একটি ম্যাচে হেরে তারা সুপার ফোরে এসেছে। এখন আবাহনীর জন্য রাস্তাটা সহজ হয়ে গেল। পরের ম্যাচে ফ্রেন্ডস ক্লাবকে হারাতে পারলেই আবাহনীর শিরোপা জেতা অনেকটাই নিশ্চিত।
গতকাল টসে হেরে ব্যাট করতে নামা ব্রাদার্স ইউনিয়ন শুরুটা ভাল করতে পারেনি। ২৮ রানে প্রথম উইকেট হারানো ব্রাদার্স ৩০ রানে হারায় দ্বিতীয় উইকেট। তৃতীয় উইকেটে ৩২ রান যোগ করেন নাকিব এবং মাহিদুল। ২৪ রান করে ফিরেন নাকিব। এরপর মাহিদুল এবং মাহমুদুল মিলে যোগ করেন ৩৭ রান। ৩২ রান করে ফিরেন মাহিদুল। তবে পঞ্চম উইকেটে মাহমুদুল এবং হাবিবুর মিলে দলকে যখন টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন মনে হচ্ছিল বড় স্কোরের দিকে এগুচ্ছে ব্রাদার্স। কিন্তু ১৭১ রানের মাথায় ৭২ রানের এজুটি ভাঙ্গতেই বড় স্কো গড়ার আশা শেষ হয়ে যায় ব্রাদার্সের। শেষ পর্যন্ত ১১ বল বাকি থাকতে ২১৫ রানে অল আউট হয় ব্রাদার্স। দলের পক্ষে মাহমুদুল ৭৪ বলে ৪৩, হাবিবুর ৬৩ বলে ৪৭ এবং সাইমন ১৫ বলে ২৫ রান করেন। ফেন্ডস ক্লাবের পক্ষে ২৭ রানে ৪টি উইকেট নেন সাদ্দাম। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন আসাদুজ্জামান এবং হিমেল।
২১৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দারুন সুচনা করেছিলেন ফ্রেন্ডস ক্লাবের দুই ওপেনার রবিন এবং আলিফ। ১০০ রানে গিয়ে বিচ্ছিন্ন হন দুজন। ৪৭ রান করা আলিফকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙ্গেন ওবায়দুল্লাহ। দ্বিতীয় উইকেটে রবিন এবং রিপন মিলে যোগ করেন ৪৬ রান। ৭৮ বলে ৮টি চার এবং ৪টি ছক্কার সাহায্যে ৮৪ রান করে ফিরেন রবিন। এরপর আর বড় কোন জুটি গড়ে তুলতে পারেনি ফ্রেন্ডস ক্লাবের ব্যাটাররা। সে সাথে নিয়মিত বিরতিতে উইকেটও হারাতে থাকে। ফলে এক সময় নিজেদের নিয়ন্ত্রনে থাকা ম্যাচটি নিয়ন্ত্রন হারাতে থাকে ফ্রেন্ডস ক্লাব। সময় যতই গড়াচ্ছিল ততই ম্যাচের নিয়ন্ত্রন চলে যাচ্ছিল ব্রাদার্সের হাতে। বিশেষ করে দ্বিতীয় স্পেলে বল করতে এসে ফ্রেন্ডস ক্লাবের ভিত নাড়িয়ে দেন জাতীয় দলের তারকা স্পিনার নাঈম হাসান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নাঈম পারেননি তার দলকে জেতাতে। বিশেষ করে একেবারে শেষ ওভারে সাদ্দামের দৃঢ়তায় ৩ বল হাতে রেখে ১ উইকেটের রোমাঞ্চকর এক জয় তুলে নিয়ে আনন্দে মাতে ফ্রেন্ডস ক্লাবের খেলোয়াড় কর্মকর্তারা। অপরদিকে তীরে এসে তরি ডুবিয়ে হতাশায় পুড়ে ব্রাদার্সের খেলোয়াড় কর্মকর্তারা। ফ্রেন্ডসের পক্ষে রিপন ১৭, আইচ মোল্লা ১৬, হিমেল ১৬ এবং সাদ্দাম ৯ বলে ১৭ রান করে অপরাজিত থাকেন। ব্রাদার্সের পক্ষে ৩২ রানে ৪ উইকেট নেন নাঈম। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মাহিম এবং ওবায়দুল্লাহ। ম্যাচ সেরা হয়েছেন ফ্রেন্ডস ক্লাবের মাহফুজুল ইসলাম রবিন। তার হাতে পুরষ্কার তুলে দেন ফ্রেন্ডস ক্লাবের সাধারন সম্পাদক শ্যামা প্রাসাদ চৌধুরী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবঙ্গবন্ধু কাপ অনূর্ধ্ব-১৮ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে ব্রাদার্স ক্রিকেট একাডেমির জয়
পরবর্তী নিবন্ধইয়েমেনে দুই মাসে ৪৭ শিশু নিহত : ইউনিসেফ