দুই দিনের বড় পতনের প্রেক্ষাপটে দেশের পুঁজিবাজারে দৈনন্দিন শেয়ারদর কমার ক্ষেত্রে আবার সার্কিট ব্রেকার দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা; এতে আজ বুধবার থেকে কোনো শেয়ার কমতে পারবে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ। তবে আগের মতোই একদিনে সর্বোচ্চ দর বাড়তে পারবে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল মঙ্গলবার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। পরে এ বিষয়ে এক সার্কুলারে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। গতকাল বিএসইসি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নিম্নমুখী সার্কিট ব্রেকার ২ শতাংশ করার কথা জানান কমিশনার শামসুদ্দিন। তিনি তারল্য বাড়াতে পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিল (সিএমএসএফ) থেকে ১০০ কোটি টাকা দ্রুত বিনিয়োগের কথাও জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ জন্য সরকারি বিনিয়োগ সংস্থা আইসিবি কাজও শুরু করেছে। এ দুই খবরে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্সের পতন আগের দিন সোমবারের মতো সেঞ্চুরি ছাড়ালেও দিনের মাঝামাঝি সময় থেকে তা ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে। কমিশনার শামসুদ্দিন জানান, বুধবার থেকে আগের দিনের ক্লোজিং প্রাইজের উপর শেয়ারদর কমার সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশের নির্দেশনাটি কার্যকর হবে। তবে শেয়ার দর বাড়ার সীমা অপরিবর্তিত থাকবে।
সার্কিট ব্রেকারের আগের নিয়ম অনুযায়ী, ২০০ টাকার নিচে যে কোনো শেয়ার দিনে ১০ শতাংশ বাড়তে বা কমতে পারে। এরপর ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ, ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ, ২০০০ টাকা পর্যন্ত ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ, ৫০০০ টাকা পর্যন্ত ৫ শতাংশ এবং এর চেয়ে বেশি দরের শেয়ারের ক্ষেত্রে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ বাড়তে বা কমতে পারে।
ইউক্রেইনে যুদ্ধের জেরে সোমবার সকালে বিশ্ব বাজারে তেলের দাম ২০০৮ সালের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে গেলে ঢাকার পুঁজিবাজারে ভর করে আতঙ্ক। শেয়ার বিক্রির চাপে ডিএসইএক্স এক দিনেই ১৮২ দশমিক ১২ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৭৪ শতাংশ কমে যায়। শতাংশের হিসাবে এটা ছিল গত ১১ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন। লেনদেন হওয়া ৯৬ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম পড়ে যায় সোমবার। আগের দিনের মতোই মঙ্গলবার সকালেও বড় পতন চলছিল; এরপরই এ সিদ্ধান্ত এল। এমন প্রেক্ষাপটে নিয়ন্ত্রক সংস্থার দুই সিদ্ধান্তে বিনিয়োগকারীরা আশাবাদী হলে পতন থেমে ঊর্ধ্বমুখী হয় সূচক।
দিন শেষে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিন থেকে ১৭ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট বা দশমিক ২৮ শতাংশ বেড়ে ৬ হাজার ৪৭৪ দশমিক ২৯ পয়েন্ট অবস্থান করছে। গতকাল ঢাকার বাজারে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় ৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা বেড়ে ৭৪৬ কোটি ৯ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। আগের কর্মদিবসে যা ছিল ৭৪০ কোটি ২৬ লাখ টাকা।
এদিন চট্টগ্রামের পুঁজিবাজার সিএসইতেও সূচক ও লেনদেন বেড়েছে। এ বাজারের প্রধান সূচক সিএএসপিআই ২৮ দশমিক ৯১ পয়েন্ট বা দশমিক ১৫ শতাংশ বেড়ে অবস্থান করছে ১৯ হাজার ১৮ দশমিক শূন্য ২ পয়েন্টে। মঙ্গলবার এ বাজারে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় ৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ বা ১ কোটি ৩১ লাখ টাকা বেশি হয়েছে। মোট ২২ কোটি ৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিন ছিল ২০ কোটি ৭২ লাখ টাকা।












