দুবাই এক্সপোসহ বিভিন্ন আয়োজনে যোগ দিতে পাঁচ দিনের সফরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরকালে সেখানের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে গত বছরের ডিসেম্বরে মালদ্বীপ সফরের পর এটাই হচ্ছে শেখ হাসিনার প্রথম বিদেশযাত্রা। আজ মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা ছাড়বেন বলে গতকাল রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। খবর বিডিনিউজের।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামী ৮ মার্চ তারিখে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপনে দুবাই এঙপোতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণসহ দ্বিপক্ষীয় সফরের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের শাসক মুহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম। এই সফর ঘিরে মোট পাঁচটি সমঝোতা স্মারক চূড়ান্তের কাজ চলছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
দুবাই এঙপোকে বিশ্বে নিজেদের তুলে ধরার একটি ‘মোক্ষম প্ল্যাটফর্ম’ অভিহিত করে তিনি বলেন, সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে দেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরা ও বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নসহ অর্থনৈতিক খাতে আমাদের অর্জনগুলোকে তুলে ধরার মানসে এই সফরের সম্মতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। দুবাই এঙপোতে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন ঘুরে দেখবেন শেখ হাসিনা, যেখানে গত বছর থেকে বাংলাদেশের গল্প, বাংলাদেশের সাফল্যগাঁথা তুলে ধরা হয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিষ্ঠাতা শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ানের (প্রয়াত) স্ত্রী শেখ ফাতিমার সঙ্গেও দেখা করবেন বাংলাদেশের সরকার প্রধান। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী রাস আল খাইমাতে বাংলাদেশি কমিউনিটি স্কুল ‘বাংলাদেশ ইংলিশ প্রাইভেট স্কুলের’ নতুন ক্যাম্পাসে নির্মিতব্য ভবনের ভিত্তিস্থাপন করবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমিরাতের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচল নিয়েও সফরে আলোচনা করা হবে। আমি যখন ফেব্রুয়ারি মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে গিয়েছিলাম, সেসময় এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। এইবার প্রধানমন্ত্রীর সফরে তা আরও জোরালোভাবে উপস্থাপন করা হবে।
আমিরাতের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার। তবে বাণিজ্য ঘাটতি এখনও দেড় বিলিয়ন ডলারের মতো বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মোমেন বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমিরাতের সম্পর্ক আরও জোরালো করতে দুই দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মধ্যে ‘যৌথ ব্যবসায় ফোরাম’ আয়োজন করা হবে। যা আমাদের ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য খুবই লাভজনক হবে বলে আমি মনে করি। সৃষ্টি হতে পারে বিনিয়োগের নতুন ক্ষেত্র।
এক প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পতেঙ্গা সমদ্রবন্দর ব্যবস্থাপনার প্রস্তাব দিয়েছিল আরব আমিরাত। তবে বাংলাদেশ নিজেই সেটি তৈরি ও ব্যবস্থাপনার কাজ করবে। তবে, দেশে মোট তিনটি বে টার্মিনাল নির্মাণ করা হচ্ছে। তার একটির ব্যবস্থাপনা আরব আমিরাতকে দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সফর শেষে আগামী ১২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরবেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।