চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) শিক্ষাবর্ষ সমারম্ভ (ওরিয়েন্টেশন) অনুষ্ঠানে একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেছেন, অন্ধকার দূর করতে যেমন আলোর প্রয়োজন হয়, তেমনি মনের অন্ধকার দূর করতে জ্ঞানের প্রয়োজন। তাই বেশি বেশি করে পড়তে হবে, জানতে হবে। তা না হলে জ্ঞানের পরিধি বাড়বে না। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, জীবনে অনেক সমস্যা, বাধা-বিপত্তি আসবে। তারপরও কাজ করে যেতে হবে, লেগে থাকতে হবে। তাহলেই জীবনে সাফল্য অর্জন করতে পারবে।
এম এ মালেক বলেন, জীবনে তিনজন মানুষ কোনোদিনই তোমাদের অকল্যাণ কামনা করবেন না। একজন তোমার বাবা, একজন তোমার মা এবং একজন তোমার শিক্ষক। এই তিনজনের যাবতীয় কর্মকাণ্ড, আদেশ নির্দেশ সবই তোমাদের কল্যাণে। তাই জীবনে এই তিনজনের অবাধ্য হয়ো না। তিনি গতকাল বুধবার সিভাসু অডিটোরিয়ামে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবর্ষ সমারম্ভ অনুষ্ঠানে সমারম্ভ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ) প্রফেসর ড. ওমর ফারুক মিয়াজীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, এ বছর শিক্ষায় একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ফিশারিজ অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নূরুল আবছার খান এবং ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন প্রফেসর ড. মো. আশরাফ আলি বিশ্বাস। স্বাগত বক্তব্য দেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তাসনিম ইমাম। অন্যান্যের মধ্যে ফুড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের কো-অর্ডিনেটর এবং ফুড প্রসেসিং অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শিরীণ আক্তার বক্তব্য রাখেন।
সমারম্ভ বক্তা, দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক নবীন শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি সচ্চরিত্রবান ও ভালো মানুষ হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, তোমরা নিজেরা যদি ভালো হও, সচ্চরিত্রবান হও-তাহলে দেশ ভালো থাকবে, আমরা এগিয়ে যাব। তোমরা চরিত্রবান এবং সৎ হলেই কেবল তোমার প্রতিবেশি বা অন্যদের সৎ ও চরিত্রবান হওয়ার কথা বলতে পারবে। নোবেল বিজয়ী মালালা ইউসুফজাইকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, একটি কলম, একটি বই এবং একজন শিশু পৃথিবীকে পাল্টে দিতে পারে। তোমরা আমাদের পৃথিবী পাল্টে দেয়ার হাতিয়ার হয়ে উঠো।
দৈনিক আজাদী সম্পাদক সিভাসু প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে দৈনিক পূর্বকোণের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরীর অবদানের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সিভাসু উপাচার্য প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ নবীন শিক্ষার্থীদের মাদক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হল জ্ঞানচর্চা, জ্ঞানসৃষ্টি ও জ্ঞান বিতরণের জায়গা। তোমরা নিজেদেরকে গবেষণামূলক কাজে সম্পৃক্ত করবে। আর গবেষণা কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য সবধরনের সুযোগ-সুবিধা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে। তিনি নিজের দরজা সবসময় খোলা থাকে বলে উল্লেখ করে বলেন, যে কোনো সমস্যায় যে কোনো সময় আমার কাছে আসবে, আমাকে বলবে। আমরা একই পরিবারের সদস্য হিসেবে তোমাদের যে কোনো সমস্যার সমাধান করবো। তবে কোনো অবস্থাতেই কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা, সন্ত্রাস এবং মাদক আমরা সহ্য করবো না। তিনি ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের। এই ক্যাম্পাস আমাদের। আমাদের প্রিয় এই প্রতিষ্ঠানকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার যে কার্যক্রম চলছে তা ভবিষ্যতের দিনগুলোতেও অব্যাহত রাখতে ছাত্র শিক্ষক এবং অভিভাবকদের একযোগে কাজ করতে হবে।