ভালোবাসা আবেগ বা অনুভূতিদ্যোতক একটি মাধুর্যময় শব্দ। এ শব্দটির মধ্যে অপরিমেয় শক্তি নিহিত আছে। কেবল ভারোবাসা দিয়ে পৃথিবীর সব বাধা জয় করা যায়। আবার এ ভালোবাসা দিয়েই ঘর বাঁধা যায়, স্বপ্ন দেখা যায়। ভালোবাসার অর্থ হলো সম্মান, শ্রদ্ধা, বিশ্বাস ও ভরসা। হৃদয়ের তীব্র অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ হলো ভালোবাসা। প্রকৃত ভালোবাসা কখনো ফুরিয়ে যায় না। ভালোবাসা কখনো পরিবর্তনও হয় না। সব সময় মানুষ শুধু বয়সেই বাঁচে না, ভালোবাসায় বেঁচে থাকে। শুধু মানুষের প্রতি ভালোবাসা নয়, সকল জীব ও জড় জগতের প্রতিও সমান ভালোবাসা থাকতে হবে। যেখানে ভালোবাসা নেই সেখানে বেঁচে থাকার ইচ্ছে শক্তিও থাকে না। প্রকৃত ভালোবাসা প্রাপ্তিতে নয়, বিসর্জনে। অপরের কাজে নিজেকে নিবেদন করতে পারাই হলো ভালোবাসা। অপরকে বুঝতে পারা, অপরের সুখে সুখ অনুভব করা, অপরের দুঃখে দুঃখবোধ করাই হলো ভালোবাসা। এ ভালোবাসা হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে হয়। এ অনুভব করার অনুভূতি অনেকের থাকে না, যার ফলে সৃষ্টি হয় প্রতিহিংসা ও অহংবোধ। ভালোবাসাহীন মানুষ প্রতিহিংসাপরায়ণ ও স্বার্থপর হয়ে থাকে। মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে থাকা বিদ্বেষের এ বিষবাষ্পকে অপসারণ করতে পারে ভালোবাসা। হিংসা, স্বার্থপরতা ও ধ্বংসযজ্ঞ সবকিছু বন্ধ হয়ে যাবে ভালোবাসার কারণে। সম্প্রীতির বন্ধনও মজবুত হবে শুধু এ ভালোবাসার জন্যে। হিংসা আর স্বার্থপরতার গ্রাসে অনেকেই মানবিকতাশূন্য হয়ে পড়ছে। হিংসা বিদ্বেষের কারণে সৃষ্ট নানা বিধ্বংসী অস্ত্র জাতিকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। ঘৃণা, অহংকার, জাত্যভিমানসহ সকল অস্ত্র কেবল ভালোবাসার কাছে পরাজিত হতে পারে। ভালোবাসার এই মহান অস্ত্রই পারে নিষ্ঠুর আচরণকে শান্ত করতে। জীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রশান্তি ও স্বস্তি নিয়ে আসতে পারে এ মহান ভালোবাসা। ভালোবাসার চেয়ে বড় শক্তি আর কিছু নেই। ভালোবাসা বিলিয়ে দিয়ে ভালোবাসা অর্জন করা উচিত। আর অনুক্ষণ এ অবিনাশী ভালোবাসায় বেঁচে থাকুক পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণ।
লেখক: শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক