যুদ্ধকে অজুহাত বানিয়ে ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি

দুদিনে মণপ্রতি বেড়েছে ৪০০ টাকা

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৭:০৬ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে ইউরোপের দেশ ইউক্রেনে চলমান রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে দেশের ভোজ্যতেলের বাজারে। গত দুদিনের ব্যবধানে পাম ও সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে মণপ্রতি সর্বোচ্চ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের বুকিং দর বাড়লেও দেশের বাজারে ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে দাম বৃদ্ধি করছেন এমন অভিযোগ ভোক্তাদের। ভোক্তারা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে কোনো পণ্যের বুকিং দর বাড়লেও তার প্রভাব পড়তে ৩ মাস পর্যন্ত সময় লাগার কথা। কারণ এখন যেসব ভোজ্যতেল বাজারে এসেছে সেগুলো আগের বুকিংয়ে আমদানি করা। কিন্তু যুদ্ধকে অজুহাত বানিয়ে এখন ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো দাম বৃদ্ধি করে যাচ্ছেন। তাই সরকারকে বিষয়টি কঠোরভাবে নজরদারি করতে হবে।
খাতুনগঞ্জের ভোগ্যপণ্যের বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে পাইকারিতে মণপ্রতি (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার ৯০০ টাকা। যা সর্বশেষ বুধবার বিক্রি হয়েছে ৬ হাজার ৫০০ টাকায়। অন্যদিকে বর্তমানে পাম বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার টাকায়, যা গত বুধবার বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার ৭০০ টাকায়। এ ব্যাপারে চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ভোজ্যতেলসহ প্রায় সব ধরনের ভোজ্যতেলের দাম বাড়ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দরবৃদ্ধির কারণে মূলত আমাদের দেশের বাজারে দাম বাড়ছে। অনেকে অভিযোগ করেন, ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে দাম বৃদ্ধি করে থাকেন। আসলে বিষয়টি সঠিক নয়।
জানতে চাইলে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশেন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমাদের দেশে ভোগ্যপণ্যের বাজার পুরোটাই ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে থাকে। ব্যবসায়ীরা কখনো ভোজ্যতেল, কখনো পেঁয়াজ, কখনো চাল-ডাল, আবার কখনো চিনি নিয়ে চিনিমিনি খেলে। আন্তর্জাতিক বাজারে ২ ডলার দাম বাড়লেও তারা দ্বিগুণ দাম বাড়িয়ে দেন। তারা নিত্যনতুন অজুহাতে দাম বাড়িয়ে থাকেন। এখন যেমন রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের অজুহাতে প্রায় সব ধরণের ভোগ্যপণ্যের বাজার বৃদ্ধি করছেন। আমরা বারবার প্রশাসনকে বাজার মনিটরিংয়ের কথা বলে আসছি। দেখা যাচ্ছে, শুধুমাত্র রমজান এলেই বাজার মনিটরিং জোরদার হয়।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ গত ৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক লিটার সয়াবিনের দাম ৮ টাকা বাড়িয়ে ১৬৮ টাকা নির্ধারণ করে সরকার। এছাড়া খোলা সয়াবিন তেলের দাম ৭ টাকা বাড়িয়ে ১৪৩, বোতলজাত সয়াবিনের পাঁচ লিটারের দাম ৩৫ টাকা বাড়িয়ে ৭৯৫ এবং পাম তেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়ে ১৩৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এর আগে ২০২১ সালের ১৯ অক্টোবর সরকার নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬০ ও খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৩৬ টাকা নির্ধারিত হয়েছিল। এছাড়া বোতলজাত সয়াবিনের পাঁচ লিটারের দাম ৭৬০ ও পাম তেলের দাম ছিল প্রতি লিটার ১১৮ টাকা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিশেষ গণটিকা ক্যাম্পেইন আজ
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন বিকল