ইউক্রেনে রাশিয়ার রক্তক্ষয়ী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার ৫০টি শহরে যুদ্ধবিরোধীদের বিক্ষোভে ১৩০০’র বেশি বিক্ষোভকারী আটক হয়েছে বলে জানিয়েছে রাশিয়ার স্বতন্ত্র মানবাধিকার গোষ্ঠী ওভিডি-ইনফো।
ইউক্রেনের সমর্থনে গতকাল বৃহস্পতিবার রাশিয়াজুড়ে বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করেছে যুদ্ধ-বিরোধীরা। রাজধানী মস্কো এবং সেন্ট পিটার্সবাগ সহ অন্যান্য শহর থেকে বহু বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা আসার পরই যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। মানবাধিকার সংগঠনটি জানিয়েছে, শুধু রাজধানী মস্কোতেই পুলিশ আটক করেছে ৬৬০ জনকে।
বাকিরা আটক হয়েছে সেন্ট পিটার্সবার্গ, নোভোসিব্রিস্ক, ইয়াকাটেরিনবার্গ এবং অন্যান্য শহর থেকে।
বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর রাশিয়ার বেশ কিছু সংখ্যক অধিকার কর্মী স্যোশাল মিডিয়ায় লোকজনকে প্রতিবাদে রাস্তায় নামার আহ্বান জানায।
ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, মস্কোয় বিক্ষোভকারীরা ‘যুদ্ধকে না বলুন’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে রাস্তায় মিছিল করেছে। কিছু প্ল্যাকার্ডে সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনাও করা হয়।
মস্কোর বিক্ষোভে যোগ দেওয়া এক যুবক ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা বিবিসিকে বলেছে, আজ যা ঘটেছে তা মর্যাদাহানিকর। ইউক্রেনে আমাদের অনেকেরই আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব আছে। তাদের জন্য এই যুদ্ধ এক বিশ্বাসঘাতকতা।
আরেক বিক্ষোভকারী প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, আমি মর্মাহত। আমার স্বজন, প্রিয়জনরা ইউক্রেনে থাকে। তাদেরকে ফোনে আমি কী বলব? তোমরা ওখানেই অবরুদ্ধ হয়ে থাক-এমন কথা বলব?
সেভেৎলানা ভলকোভা নামের আরেক বিক্ষোভকারী বলেন, “আমার মনে হচ্ছে কর্তৃপক্ষের মাথা খারাপ হয়ে গেছে।”
লোকজন প্রচারণার ফাঁদে পা দিয়ে বোকা বনে গেছে বলেও মন্তব্য করে তিনি বলেন, “রাশিয়ায় খুব কম মানুষই বিক্ষোভ করছে। অনেকেই প্রতিবাদ জানাতে ভয় পাচ্ছে।”
পুলিশ সেভেৎলানাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি চীৎকার করে বলেন, “আপনারা কার সঙ্গে লড়ছেন? পুতিনকে গ্রেপ্তার করুন।”
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে ইউক্রেন থেকে আসা হুমকির মুখে সেখানে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
এই পদক্ষেপে তিনি অন্য দেশগুলোকে হস্তক্ষেপ না করার আহ্বান জানান এবং অন্যথায় তারা ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করবে বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন।