কর্ণফুলী নদীর উপর চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানি নির্মিত শাহ আমানত সেতুর আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করা হয়েছিল শত বছর। কিন্তু নির্মাণের পর থেকেই সেতুটিতে নানান ত্রুটি ধরা পড়ে। এরমধ্যে গত কয়েক বছরে বড় ধরনের কয়েকটি মেরামত কাজ করা হয়। গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুর ক্রটি মেরামত এবং ঝুঁকি রোধে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের তত্ত্বাবধানে ইতালিয়ান একটি বিশেষজ্ঞ দল সেতুটি পরিদর্শন করেছেন। তারা সেতুর ত্রুটি চিহ্নিত করে ঝুঁকি রোধে লিখিত রিপোর্ট দেবেন। সেই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই সেতুটি মেরামত করবে সওজ। তবে ঝুঁকি এড়াতে এবং স্থায়ীত্বকাল বাড়ানোর জন্য বিশেষজ্ঞ দলের তাৎক্ষণিক পরামর্শে সেতুর উভয় পাশে গতিরোধক বসিয়েছে সওজ। এ ব্যাপারে সওজ চট্টগ্রাম অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা আজাদীকে জানান, ইতালিয়ান বিশেষজ্ঞদল গত ২১ ফেব্রুয়ারি কর্ণফুলী সেতু পরিদর্শন করেছেন। তারা সেতুর এঙপানশন জয়েন্টে কোনো ত্রুটি আছে কিনা সেটা দেখেছেন। সেতুর বর্তমান অবস্থা এবং সেতুর স্থায়িত্ব বাড়ানোর জন্য কী পদক্ষেপ নেয়া দরকার সেই ব্যাপারে তারা রিপোর্ট দেবেন।
প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর আয়ুষ্কাল ১০০ বছর হলেও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয়। এটি প্রতিটি সেতুর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। শাহ আমানত সেতুতে সবধরনের গাড়ি স্পিডে চলে। মূলত গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য তারা গতিরোধক বসানোর পরামর্শ দিয়েছেন। সে অনুযায়ী আমরা সেতুতে ইন এবং আউট পয়েন্টে গতিরোধক বসিয়েছি। ইতালিয়ান বিশেষজ্ঞ দল শুধু কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর জন্য আসেননি। তারা সারা বাংলাদেশে যতগুলো ব্রিজ আছে পর্যায়ক্রমে সবগুলো পরিদর্শন করবেন।
সওজের রহমতগঞ্জ অফিস জানায়, ৩৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে কর্ণফুলী সেতুটির নির্মাণ কাজ ২০১০ সালে শেষ হলে ঐ বছরের ৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। এরপর থেকে বহুল প্রতিক্ষিত কর্ণফুলী সেতু দিয়ে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। এর ফলে চট্টগ্রামের সঙ্গে বান্দরবান এবং পর্যটন নগরী কঙবাজারের সঙ্গে যোগাযোগের নতুন দিগন্ত সূচিত হয়। নির্মাণের ৭/৮ বছর পর থেকেই সেতুটিতে নিয়মিত মেরামত শুরু হয়। এরমধ্যে গত কয়েক বছরে বড় ধরনের কয়েকটি মেরামত করা হয়েছে। তবে সওজের প্রকৌশলীরা বলছেন- সেতুর আয়ুষ্কাল যাই হোক প্রতিবছর পরীক্ষা-নিরীক্ষার পাশাপাশি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয়।