গৃহবধূ পারভিন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. ইসহাককে (২৭) ছয় বছর পর গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে র্যাব-৭। আটক ইসহাক হাটহাজারী থানার ফটিকা এলাকার মো. কামাল হোসেনের ছেলে। গত সোমবার বিকেলে র্যাব-৭’র অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, ২০১৬ সালের ৫ মার্চ সন্ধ্যায় বায়েজিদ বোস্তামি থানার রৌফাবাদের বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির একটি ভবনের ষষ্ঠতলায় নিজ ফ্ল্যাটে পারভিন আক্তার (৩৬) খুন হন। এ সময় দুর্বৃত্তরা ফ্ল্যাট থেকে স্বর্ণালংকার, মোবাইল, ট্যাব এবং নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় তার স্বামী নুরুল আলম বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। পরবর্তী সময়ে পুলিশ চারজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আসামিরা হলেন মো. ইয়াসিন, মো. মনসুর, আবু তৈয়ব এবং মো. ইসহাক। ২০২১ সালের ৩ মার্চ আদালত হত্যার অপরাধে প্রত্যেককে মৃত্যুদণ্ড এবং ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। ইয়াসিন ছাড়া তিন আসামি শুরু থেকেই পলাতক ছিলেন।
তিনি আরও জানান, এই ইয়াসিন মামলার বাদি নুরুল আলমের নিকট আত্মীয়। নুরুল আলম ও তার ভাই আব্দুস শুক্কুর বিদেশে থাকতেন। ইয়াসিনকে শুক্কুর বিদেশে নিয়ে গিয়েছিলেন। পরে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হলে শুক্কুর তাকে দেশে ফেরত পাঠান। এর ফলে ইয়াসিন দু’জনের ওপর ক্ষুদ্ধ হন। প্রতিশোধ নিতে বন্ধু মনসুরের পরিকল্পনায় ইয়াসিন তৈয়ব ও ইসহাক নামে দু’জনকে ভাড়া করে নুরুল আলমের বাসায় ঢুকে ছেলের সামনে গৃহবধূর শাড়ি খুলে তাকে বেঁধে রেখে লুটপাট করে। যাওয়ার সময় ওই শাড়ি দিয়ে তার শ্বাসরোধ এবং মাথায় ভারি বস্তু দিয়ে আঘাত করে চলে যায়। আহত পারভিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
ঘটনার পর ইসহাক পালিয়ে ওমান চলে যায়। গত ডিসেম্বরে সে দেশে ফিরে আসে। তাকে ধরার জন্য ফাঁদ পাতে র্যাব। প্রথমে তার ছোট ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় গোপন করে বন্ধুত্ব করে র্যাবের একজন। তার কাছ থেকে ইসহাকের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে। কিন্তু দুই মাসে ইসহাক ১৭টি মোবাইলের সিম পরিবর্তন করে। সম্প্রতি ছোট ভাইয়ের বিয়ে উপলক্ষে সে এলাকায় ফিরে আসে। আগে থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে।