চট্টগ্রাম বন্দরে কার্নেট ডি প্যাসেজ বা শুল্কমুক্ত সুবিধায় আসা বিলাসবহুল ১১০ টি গাড়ি নিলামে তোলে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে অনুমোদন পায় মাত্র তিনটি গাড়ি। গতকাল বুধবার বিকেলে কাস্টমসের অকশন শেডে গাড়ি তিনটির দুটি গাড়ি ক্রেতাদের হাতে তুলে দেন কাস্টমস কমিশনার মো. ফখরুল আলম। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষা ও নানাবিধ জটিলতা পেরিয়ে আমরা অবশেষে তিনটি গাড়ি অনুমোদন দিতে সক্ষম হয়েছি। এতদিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ক্লিয়ারেন্স পারমিট (সিপি) সংক্রান্ত জটিলতায় সর্বোচ্চ বিড করার পরে বিডারদের কাছে গাড়ি বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। তবে এখন সেই ঝামেলা আর রইলো না। এবার আমরা ৫টি গাড়ি বিক্রয় অনুমোদন দিতে পারতাম। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে শর্তের কারণে আমরা দিতে পারিনি। তবে আমরা এখন শতভাগ গাড়ির সিপি পেয়েছি। এখন আর কোনো আইনগত জটিলতা রইলো না। দ্রুত সেইসব গাড়ি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মনোনীত প্রতিনিধির উপস্থিতিতে নিলাম কার্যক্রম সম্পন্ন করবো।
কাস্টমসের নিলাম শাখা থেকে জানা গেছে, এবারের নিলামে জার্মানির তৈরি জেডফোর স্পোর্ট অটো মডেলের বিএমডব্লিউ কারটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার ২৫০ টাকা মূল্য পরিশোধ করে পেয়েছেন আগ্রাবাদ নিমতলার সাইফ অটো মোবাইলসের মো. সাইফুদ্দিন। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ গাড়িটির সংরক্ষিত মূল্য ধরে ১ কোটি ২৯ লাখ ৫৯ হাজার ২৯১ টাকা। অন্যদিকে ১ কোটি ২৯ লাখ টাকা মূল্যের ২০০৪ মডেলের টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার গাড়িটি নিলামে বিক্রি হয় মাত্র ৪৮ লাখ ১৭ হাজার ৬১৮ টাকায়। গাড়িটি পেয়েছেন খুলনার সুপার জুট মিলস লিমিটেডের কর্ণধার এম ফিরোজ আহমেদ। অপরদিকে ফারজানা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাজি মো. সেলিম ২ কোটি ৩৮ লাখ টাকার বিএমডব্লিউ ৭৩০এলডি এসই মডেলের গাড়িটি কিনেছেন ৬২ লাখ ২৭ হাজার ৫০০ টাকায়।
নিলাম শাখার কর্মকর্তারা জানান, অবিক্রিত আরো ১০৭ গাড়ির মধ্যে রয়েছে জার্মানি, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের তৈরি বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ বেঞ্জ, ল্যান্ড ক্রুজার, ল্যান্ড রোভার, জাগুয়ার, মিতসুবিশি, টয়োটা এবং লেঙাস জিপের মতো বিলাসবহুল গাড়ি।
উল্লেখ্য, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কার্নেট সুবিধায় গাড়ি আমদানির সুবিধা দেয়া হয়ে থাকে। তবে নির্দিষ্ট সময় পর আবার সেগুলো ফিরিয়ে নিতে হয়। বাংলাদেশে যারা শুল্কমুক্ত এই সুবিধা ব্যবহার করে এসব গাড়ি এনেছেন তাদের বেশির ভাগই প্রবাসী বাংলাদেশি, যাদের দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে। সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে তাদের অনেকেই এসব গাড়ি কার্নেট সুবিধায় এনে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাই এসব গাড়ি আমদানির ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হলে একসময় আমদানিকারকরা গাড়িগুলো খালাস করে নেননি।









