চট্টগ্রামের মাঠে বরিশালের কাছে টানা দুই ম্যাচে হারল খুলনা টাইগার্স। বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম দিনে খুলনাকে ১৭ রানে হারানো বরিশাল গতকাল দ্বিতীয় মোকাবেলায়ও জয় পেয়েছে। গতকাল সাকিবের দলের কাছে ৬ রানে হেরেছে মুশফিকের খুলনা। এই জয়ের ফলে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলো বরিশাল। ৫ ম্যাচে তাদের সংগ্রহ ৬ পয়েন্ট। চট্টগ্রামের সংগ্রহ ৬ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট। বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বে রান বন্যা হলেও গতকাল তেমন বড় স্কোর গড়তে পারেনি বরিশাল। আর জবাব দিতে নেমে রানের জন্য আরো বেশি লড়াই করতে হয়েছে খুলনার ব্যাটম্যানদের। বিশেষ করে শুরুতে সাকিবের বোলিংয়ের কাছে এক রকম দিশেহারা হয়ে পড়ে খুলনার ব্যাটাররা। তবে সময় যত গড়াচ্ছিল ততই মরা ম্যাচটিতে প্রাণ ফিরে এনেছিলেন মুশফিক এবং ইয়াসির আলি। যা শেষ পর্যন্ত তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এক ম্যাচে পরিণত হয়। আর সে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে শেষ হাসিটা হাসে বরিশাল। আর হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় খুলনাকে।
টসে জিতে ব্যাট করতে নামা বরিশাল শুরুতেই ধাক্কা খায়। দ্বিতীয় ওভারেই ফিরেন ডুয়াইন ভ্রাবো। ক্রিস গেইলকেও ভয়ংকর হতে দেননি খালেদ আহমেদ। বোল্ড করে গেইলকে ফেরান এই পেসার। মাত্র ৪ রান করেন গেইল। সাকিবের সাথে ভুল বোঝাবুঝিতে তৌহিদ হৃদয় রান আউট হয়ে ফিরলে ২৪ রানে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বরিশাল। এরপর নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের চেষ্টায় নামেন সাকিব। বেশ ভালই এগিয়ে যাচ্ছিলেন দুজন। ৭৯ রানের জুটি গড়েন দুজন। ২৭ বলে ২টি চার এবং ৩টি ছক্কার সাহায্যে ৪১ রান করে সাকিব ফিরলে ভাঙ্গে এ জুটি। এক ওভার পরে ফিরেন নাজমুল হোসেন শান্তও। ৪০ বলে ৩টি চার এবং ২টি ছক্কার সাহায্যে ৪৫ রান করে শান্ত ফিরলে আবার চাপে পড়ে বরিশাল। এরপর আর কোন ব্যাটার দাঁড়াতে পারেনি খুলনার বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে। ১০৯ রানে ৫ উইকেট হারানো বরিশাল পরের ৫ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৩৬ রান যোগ করতে সক্ষম হয়। পরের ব্যাটারদের কেউই উল্লেখ করার মতো স্কোর করতে পারেনি। শেষ ছয় ব্যাটারের মধ্যে মুজিবের ১২ এবং সোহানের ১০ রান ছিল উল্লেখযোগ্য বাকিরা কেউই দুই অংকের ঘরে যেতে পারেনি। ৭ বল বাকি থাকতে ১৪৫ রানে অল আউট হয় বরিশাল। খুলনার পক্ষে ৩টি উইকেট নেন খালেদ। ২টি করে নিয়েছেন কামরুল ইসলাম রাব্বি এবং ফরহাদ রেজা।
জবাব দিতে নামা খুলনার শুরুটা ছিল বেশ সাবধানী। বিশেষ করে সৌম্য সরকার ছিলেন ধীর স্থির। কিন্তু এই ম্যাচেও রান করতে পারলেন না সৌম্য। ২২ বলে ১৩ রান করে ফিরেছেন সাকিবের বলে। রনি তালুকদার এসেও সে খোলস থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। সাকিবের বলে ফিরেন ১২ বলে ৬ রান করে। এরপর ডুয়াইল ভ্রাবো ভেল্কি। দশম ওভারে বল করতে এসে তৃতীয় বলে ফেরালেন আন্দ্রে ফ্লেচারকে। আর শেষ বলে ফেরালেন থিসারা পেরেরাকে। ফ্লেচার ফিরেন ২৩ বলে ১২ রান করে। সবার ব্যাটিং টি-টোয়েন্টির সাথে বেমানান। দশ ওভার শেষে খুলনার রান ৪ উইকেটে ৩৫। দলের সে বিপর্যয়কর অবস্থা থেকে ইয়াসির আলিকে নিয়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিলেন অধিনায়ক মুশফিক। নিশ্চিত হারের মুখ থেকে ম্যাচটাকে একরকম বের করে নিয়ে এসেছিলেন দুজন। গড়েছিলেন ৭৯ রানের জুটি। কিন্তু রানের প্রয়োজনে মারতে গিয়ে আউট হয়ে ফিরলেন মুশফিক। করেছেন ২২ বলে ৩৩ রান। মেরেছেন তিনটি চার এবং একটি ছক্কা। মুশফিক আউট হওয়ার পরপরই নিজের হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ইয়াসির আলি। ৩০ বলে করা হাফ সেঞ্চুরিতে ৪টি চার এবং তিনটি ছক্কা মেরেছেন। শেষ ওভারে খুলনার জয়ের জন্য দরকার পড়ে ২১ রান। প্রথম বলে ১ রানের বেশি নিতে পারেনি ইয়াসির। দ্বিতীয় বলে প্রাসান্না নেন ৪ রান। তৃতীয় বলে দারুণ এক ক্যাচে প্রাসান্নাকে ফেরান। চতুর্থ বলে ইয়াসির নেন দুই রান। পঞ্চম বলে নেন এক রান। আর শেষ বলে মেহেদী ছক্কা মরালেও ৬ রানের হার এড়াতে পারেনি খুলনা। ইয়াসির আলি অপরাজিত ছিলেন ৩৪ বলে ৫৭ রান করে। বরিশালের পক্ষে ভ্রাবো নেন ৩টি উইকেট। ২টি নিয়েছেন সাকিব।












