টিকটকার নিউটন বড়ুয়া। ফেসবুকে তার আপলোড করা বিভিন্ন ভিডিও দেখে তরুণীদের অনেকেই তার বন্ধু হয়েছেন। কিন্তু তাদের জানা নেই ২৮ বছরের এই যুবক টিকটক-কন্টেন্ট প্রচারের আড়ালে মূলত ফেসবুকে তরুণীদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন। পরে সেই ভিডিও দেখিয়ে ভুক্তভোগী তরুণীদের ব্ল্যাকমেইল করে হাতিয়ে নেন টাকা। রাউজান পৌর এলাকা থেকে নিউটন বড়ুয়াকে গ্রেপ্তার করে গতকাল রোববার আদালতে পাঠিয়েছে রাউজান থানা পুলিশ। তিনি পটিয়া উপজেলার ভাটিখাইন ইউনিয়নের মৃত কাজল বড়ুয়ার ছেলে। গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে আসতে থাকে তার সম্পর্কে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সাত বছর আগে নিউটনের সঙ্গে বান্দরবানের লামা উপজেলার বাসিন্দা এক নারীর বিয়ে হয়। তাদের সংসারে এক ছেলে সন্তান রয়েছে। নিউটনের স্থায়ী তেমন কোনো পেশা ছিল না। এক বছর আগে ফেসবুকে তার সঙ্গে রাউজান এলাকায় এক কলেজ ছাত্রীর পরিচয় ও সম্পর্ক হয়। এরপর তিনি খাগড়াছড়িতে চাকরি করতে যাবেন বলে স্ত্রীকে রেখে আসেন বাবার বাড়িতে। রাউজানে এসে ওই কলেজ ছাত্রীর কাছে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে এক বছর ধরে জড়ান শারীরিক সম্পর্কে। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রী নিউটনের প্রথম বিয়ের কথা জেনে যান। একপর্যায়ে ভিডিও ধারণ করে সেগুলো প্রচার করার কথা বলে ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রীকে হুমকি দেন। ব্ল্যাকমেইল করে হাতিয়ে নেন দেড় লাখ টাকা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রীর মা বাদী হয়ে রাউজান থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় একটি মামলা করেন।
রাঙ্গুনিয়া সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, বাস্তবে এক সন্তানের বাবা হলেও নিউটন বড়ুয়া নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে ওই কলেজ ছাত্রীর সঙ্গে প্রেম ও পরবর্তীতে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলেন। এছাড়াও তিনি এসব ব্যক্তিগত মুহূর্তের ভিডিওচিত্র ধারণ করে সেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রীর কাছ থেকে দেড় লক্ষ টাকা আদায় করেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে রাউজান থানায় মামলা দায়ের করার পর আমরা অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত নিউটনকে গ্রেপ্তার করি। তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্ণোগ্রাফি আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা করা হয়েছে।