করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ধরন ওমিক্রন মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে দৈনিক শনাক্ত রোগীর হারকে তুলে দিল ডেল্টার চূড়ার কাছাকাছি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল রোববার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ হাজারের কম নমুনা পরীক্ষা করে ১০ হাজার ৯০৬ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে, মৃত্যু হয়েছে আরও ১৪ জনের। তাতে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে দৈনিক শনাক্ত রোগীর হার দাঁড়াচ্ছে ৩১ দশমিক ২৯ শতাংশ, যা গত ২২ সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ। খবর বিডিনিউজের।
শনাক্তের হার এর চেয়ে বেশি ছিল সর্বশেষ গত বছরের ২২ জুলাই, সেদিন প্রতি ১০০টি নমুনা পরীক্ষায় ৩২ দশমিক ১৮টিতে কোভিড পজিটিভ আসে। সে সময় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দাপটের মধ্যে দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৬ হাজারও ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এরপর সংক্রমণ কমে এলে দৈনিক শনাক্ত রোগীর হার ডিসেম্বরে ২ শতাংশের নিচে নেমেছিল। জানুয়ারির শুরু থেকেই সংক্রমণের হার আবার হু হু করে বাড়ছে।
নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৮৫ হাজার ১৩৬ জনে। তাদের মধ্যে ২৮ হাজার ২২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনাভাইরাসে। সরকারি হিসাবে গত এক দিনে দেশে সেরে উঠেছেন ৭৮২ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৫ লাখ ৫৬ হাজার ৮৬১ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন। এই হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৫২ জন। অর্থাৎ এই সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে। আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ৯০ হাজার। ১৬ জানুয়ারি ছিল ৩৬ হাজার ৬৭৪ জন। অর্থাৎ, মাত্র এক সপ্তাহে সক্রিয় রোগী বেড়েছে প্রায় তিনগুন।
শনিবার নয় হাজার ৬১৪ জন নতুন রোগী শনাক্তের কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সে হিসাবে গত একদিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ১ হাজার ২৯২ জন, বা ১৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ৭ হাজার ২৯২ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের প্রায় ৬৬ শতাংশের বেশি। গত এক দিনে ঢাকা বিভাগের মধ্যে ঢাকা জেলায় ৬৫৮১ জন, গাজীপুরে ১৫৩ জন, নারায়ণগঞ্জে ১৩৬ জনের কোভিড শনাক্ত হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় ১০২৬ জন, কঙবাজারে ১৪০ জন; রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী জেলায় ১৪৯ জন, বগুড়ায় ১৪১ জন; খুলনা বিভাগের মধ্যে খুলনা জেলায় ১৫৩ জন, যাশোরে ১৯৪ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া সিলেট জেলায় ৩৯৭ জন এবং ময়মনসিংহে ৯৩ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে গত এক দিনে। যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের ছয়জন পুরুষ, আট জন নারী। তাদের মধ্যে পাঁচজন ছিলেন ঢাকা বিভাগের। চট্টগ্রাম বিভাগের দুজন, খুলনা বিভাগের একজন, বরিশাল বিভাগের একজন, সিলেট বিভাগের দুজন, রংপুর বিভাগের এক জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।