ওমিক্রনেই কি মহামারি শেষ!

| বুধবার , ১৯ জানুয়ারি, ২০২২ at ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ

কোভিড মহামারি কবে শেষ হবে? আমি কবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারব? গত দুই বছরে এমন প্রশ্ন করেননি এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। আশার কথা, বিজ্ঞানীরা বলছেন, এসব প্রশ্নের উত্তর হবে, হয়ত শিগগির। তাদের অনেকে মনে করেন করোনাভাইরাসের ভ্যারিয়েন্টের ওপর প্রচণ্ড চাপ তৈরি হয়েছে এবং তার ফলে এটি দিনে দিনে দুর্বল হয়ে পড়ছে। এছাড়া সারা বিশ্বে লোকজনকে টিকা দেওয়ার কারণে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এসব থেকে ধরে নেওয়া যায়, মহামারির সময় ফুরিয়ে আসতে শুরু করেছে। তারা বলছেন, ইতোমধ্যে মহামারি শেষ হয়ে যেতে শুরু করেছে। এটি যে এখন শেষ পর্যায়ে তার লক্ষণ স্পষ্ট। খবর বিবিসি বাংলার।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, মহামারির পরে কী? জীবন কি আগের অবস্থায় ফিরে যাবে? নাকি তৈরি হবে নতুন পরিস্থিতি? ভাইরাসটি কি পৃথিবী থেকে একেবারে উধাও হয়ে যাবে?
বিজ্ঞানীরা বলছেন, কোভিড থাকবে। কিন্তু সেটা প্যান্ডেমিক হিসেবে নয়, থাকবে এন্ডেমিক হিসেবে। অর্থাৎ সামনে কোভিড-পরবর্তী নতুন এক বিশ্ব আসন্ন, যেখানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মহামারির মতো এত মানুষের মৃত্যু না হলেও এই অসুখটি আর দশটি সাধারণ রোগের মতোই থেকে যাবে।
যুক্তরাজ্যের লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রফেসর জুলিয়ান হিসকঙ বলেন, বলা যায় এ রকম পরিস্থিতিতে আমরা প্রায় পৌঁছে গেছি। বলতে পারেন মহামারি শেষ হতে শুরু করেছে। অন্ততপক্ষে যুক্তরাজ্যে। আমার মনে হয় ২০২২ সালে আমাদের জীবন প্যান্ডেমিকের আগের অবস্থায় ফিরে যাবে।
করোনার দুর্বল ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনই তার অন্যতম লক্ষণ। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, এই ভ্যারিয়েন্ট যত বেশি ছড়াবে ভাইরাসটি ততই দুর্বল হয়ে পড়বে। এর মধ্য দিয়েই অবসান ঘটবে এই শতাব্দীর সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্য সংকটের।
তবে আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ এস এম আলমগীর মনে করেন না শীঘ্রই মহামারির অবসান হচ্ছে। তিনি বলেন, গত একশ বছরে শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন ভাইরাসের প্যানডেমিক পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে সেসব মহামারি এক থেকে তিন বছর পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। সেই বিবেচনায় হয়ত বলা হচ্ছে এটাই শেষ বছর। কিন্তু এখানে অন্য প্রশ্নও রয়েছে। দুটো সম্ভাবনা আছে। আমরা ওমিক্রনের যত মিউটেশন দেখছি সেটি আবার ততই সংক্রমিত হচ্ছে। যখনই ভাইরাস ব্যাপক ট্রান্সমিশনে থাকে তখন ভাইরাসের আরো বেশি মিউটেশনের সম্ভাবনা থাকে। তখন হয়ত ভাইরাসটি দুর্বল হয়ে যেতে পারে। আবার শক্তিশালীও হতে পারে। এ কারণে প্যান্ডেমিক শেষ হয়ে যাচ্ছে কিনা সেটা বলার জন্য আরো কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। এখনো প্রতিদিন ২০/২৫ লাখের ওপর রোগী হচ্ছে, পাঁচ থেকে সাত হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। তাই কোনো ভ্যারিয়েন্ট দুর্বল হয়ে যাওয়ার ভবিষ্যদ্বাণী করার সময় এখনো আসেনি।
প্রফেসর হিসকঙ মনে করেন পরিস্থিতি বেশি খারাপ হওয়ার আশঙ্কা নেই। আগামীতে লকডাউন জারির সম্ভাবনা কম এবং সমাবেশের ওপরেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে না। কোভিড টেস্টও হয়ত এ বছরে উঠে যেতে পারে।
তবে এ এস এম আলমগীর বলেন, মাস্ক পরলে শ্বাসতন্ত্রের রোগের ঝুঁকি যে কমে যায় সেটা কিন্তু মানুষ এখন বুঝতে পারছে। এই মহামারির পর দীর্ঘদিন হয়ত এটা মানতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন টৈটং ইউপি চেয়ারম্যান
পরবর্তী নিবন্ধকন্টেনার ডিপোতে থাকা গাড়ির কাগজপত্র চুরি