ধর্মের নামে কোনো গোষ্ঠী যাতে দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে না পারে, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। গতকাল রোববার জাতীয় সংসদে চলতি বছরের প্রথম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর নীতির কারণে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে, যা উন্নয়নের পূর্বশর্ত। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সামপ্রদায়িক সমপ্রীতির ক্ষেত্রে বিশ্বের জন্য একটি অনন্য উদাহরণ। দেশের সব সমপ্রদায়ের মানুষ যাতে সমপ্রীতি সহকারে স্ব-স্ব ধর্ম চর্চা করতে পারে, সে বিষয়ে সরকার সচেষ্ট রয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানসহ সব সমপ্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব উৎসবমুখর পরিবেশে ও শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, তথাপি ধর্মের নামে কোনো ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী যাতে দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করতে না পারে, সেদিকে আমাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
প্রতিবারের মতো এবারও মন্ত্রিসভার ঠিক করে দেওয়া ১৬৯ পৃষ্ঠা ভাষণের সংক্ষিপ্তসার পড়েন রাষ্ট্রপতি। বিকাল ৪টায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়। সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন। সাধারণত বছরের শুরুর অধিবেশনের প্রথম দিন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে এবার তা করা হয়নি। অধিবেশন শুরুর পর শোক প্রস্তাব গ্রহণ হয়। এরপর সভাপতিমণ্ডলী মনোনয়ন দেওয়া হয়। কোনো সংসদের প্রথম এবং নতুন বছরের প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণ দেওয়ার বিধান রয়েছে। পরে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর একটি ধন্যবাদ প্রস্তাব আনা হয়। পুরো অধিবেশনে ওই প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করেন সংসদ সদস্যরা। আলোচনা শেষে রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানিয়ে সংসদে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রশংসা করে আবদুল হামিদ বলেন, জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ করে তারই যোগ্য উত্তরসূরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে আজ বাঙালি জাতি এগিয়ে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর আজীবন লালিত স্বপ্ন সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার পথে।
জনপ্রতিনিধিদের সবকিছুর ঊর্ধ্বে জনস্বার্থকে স্থান দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। সংসদে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সরকারি ও বিরোধী দলের সদস্যদের প্রতিও আহ্বান জানান সাবেক স্পিকার আবদুল হামিদ।
দেশের সাত কোটি মানুষকে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি আশা করেন, দেশের অধিকাংশ জনগণকে টিকার আওতায় আনা হবে। ওমিক্রন নিয়ে সরকারের উদ্দেশে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন যাতে আমাদের দেশে ছড়াতে না পারে সেজন্য সরকারকে সতর্কতা অবলম্বনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।