চট্টগ্রামে বাড়ছে করোনা, নতুন শনাক্ত ৫৩

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৬ জানুয়ারি, ২০২২ at ৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ

মাত্র চার দিনের ব্যবধানে করোনা সংক্রমণ অন্তত ৬ গুণ বেড়েছে চট্টগ্রামে। সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বগতিকে উদ্বেগজনক বলছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিভাগ সংশ্লিষ্টরা। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সকলকে এখনই সচেতন ও সতর্ক হওয়ার বিকল্প নেই জানিয়ে জনস্বাস্থ্য অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব ডা. সুশান্ত বড়ুয়া বলছেন, সংক্রমণের যে গতি দৃশ্যমান তা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। কেবল স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষে এই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ কঠিন। সরকারের সংশ্লিষ্ট সব বিভাগকে একযোগে এ নিয়ে কাজ করতে হবে। আর জনসাধারণের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে হবে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিধি প্রতিপালনে সরকারকে এখন থেকেই কঠোর অবস্থান নিতে হবে। কেবল কাগজে-কলমে নির্দেশনা জারির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। পরিকল্পনামাফিক দ্রুত ব্যবস্থা নিলে হয়তো বিপর্যয়কর পরিস্থিতির এড়ানো সম্ভব।
সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, নতুন বছরের প্রথম দিনে (১ জানুয়ারি) ১৬ জনের করোনা শনাক্ত হয় চট্টগ্রামে। আর ৫ জানুয়ারি করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫৩ জনের। হিসেবে চার দিনের ব্যবধানে শনাক্তের সংখ্যা প্রায় ৬ গুণ বেড়েছে। শুধু শনাক্তের সংখ্যা নয়, সংক্রমণ বৃদ্ধির হারও উদ্বেগজনক। ১ জানুয়ারি ১ হাজার ৪৮৯টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয় ৯ জনের। শনাক্তের হার ছিল ০.৬০ শতাংশ। চার দিনের ব্যবধানে (৫ জানুয়ারি) শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে তিন শতাংশ। এদিন (৫ জানুয়ারি) ১ হাজার ৫৮১ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫৩ জনের। শনাক্তের হার ৩.৩৫ শতাংশ। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য মতে, ১ জানুয়ারি ৯ জনের করোনা শনাক্তের পর ২ জানুয়ারি শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৬ জন। ৩ জানুয়ারি শনাক্ত হয় ২৩ জনের। ৪ জানুয়ারি শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৫ জনে। সর্বশেষ ৫ জানুয়ারি ৫৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে চট্টগ্রামে।
হিসেবে ৫ জানুয়ারি শনাক্তের এ সংখ্যা (৫৩ জন) গত কয়েক মাসে চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ। তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ডিসেম্বরের শেষ দিকে এসে করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে চট্টগ্রামে। আর জানুয়ারির প্রথম দিকে এসে সংক্রমণ ও শনাক্তের হার যেন লাফিয়ে বাড়ছে।
সংক্রমণ হার বৃদ্ধির বিষয়টি স্পষ্টত দৃশ্যমান জানিয়ে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, সারাদেশেই সংক্রমণ বাড়ছে। চট্টগ্রামেও বাড়ছে। এই সংক্রমণ বৃদ্ধি আমাদের যেন আশঙ্কার ইঙ্গিত দিচ্ছে। ঢাকায় এরইমধ্যে ভাইরাসের ওমিক্রন ধরন শনাক্ত হয়েছে। চট্টগ্রামেও এ ধরন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। যদিও এ নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এরইমধ্যে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে প্রতিপালনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে কেবল নির্দেশনা জারির মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণ সম্ভবপর নয়। সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। এখনই সতর্ক হতে হবে, সচেতন হতে হবে। বাধ্যতামূলক মাস্ক পরার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানতে হবে। সবাইকে ভ্যাকসিন গ্রহণেরও আহ্বান জানান সিভিল সার্জন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনতুন বছরে স্বপ্নপূরণ
পরবর্তী নিবন্ধবঙ্গোপসাগরে বিপুল গ্যাসের সন্ধান