আনোয়ারার থেকে অপহরণ করে পটিয়ায় নিয়ে একজনের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় ছয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেছেন আদালত। পুলিশ সদস্যরা হলেন- কন্সটেবল আব্দুল নবী (২৭), এসকান্দার হোসেন (২৬), মনিরুল ইসলাম (২৫), মো. শাকিল (২৫), মো. মাসুদ (২৬) ও মো. মোরশেদ বিল্লাহ (২৫)। তাদের মধ্যে আব্দুল নবী, মনিরুল ইসলাম ও মো. মাসুদের বাড়ি আনোয়ারায়। অন্যদের বাড়িও চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায়। গতকাল রোববার চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুন নাহার পিবিআইয়ের দেয়া উক্ত চার্জশিট গ্রহণ করেন। কোর্ট পরিদর্শক হুমাউন কবির আজাদীকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন- রোববার চার্জশিট গ্রহণ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য ছিল। সেই অনুযায়ী চার্জশিটটি গৃহীত হয়। মামলার পরবর্তী তারিখ ২৬ জানুয়ারি। সেদিন পর্যন্ত আসামিরা জামিনে থাকবেন।
আদালতসূত্র জানায়, অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় ঘটনায় ছয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে গত ৪ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, ছয় পুলিশ সদস্য একই ব্যাচে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। তাদের বাড়ি চট্টগ্রামে ডিউটি শেষে তারা একে অপরের সাথে মিলিত হতেন এবং নিয়মিত মোবাইল ফোনে কথা বলতেন। তারা অপহরণের শিকার ও মামলার বাদী আব্দুল মান্নানের ভাই আব্দুর নূরের জুয়া খেলার বিষয়ে অবগত ছিলেন। সে অনুযায়ী তথ্য উপাত্তও সংগ্রহ করা হয়। এক পর্যায়ে ঘটনার দিন রাতে ডিবি পরিচয়ে তারা বৈরাগ এলাকায় বাদীর বাড়িতে গিয়ে আব্দুর নূরকে খুঁজতে থাকেন। তাকে না পেয়ে মান্নানকে মোটর সাইকেলের পেছনে বসিয়ে নিয়ে যান। এতে আরও উল্লেখ করা হয়, ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে চারটি মোটর সাইকেলে করে মান্নানের বাড়িতে হানা দেন আসামিরা। ব্যবহার করা হয় ডিবি লেখা একটি জ্যাকেট। তারা বাড়ি থেকে মান্নানকে ভেল্লাপাড়ার কৈয়াগ্রাম রাস্তার মাথা থেকে ভেতরে মফিজের চায়ের টংয়ে নিয়ে যায়। মুক্তিপণ হিসেবে ১০ লাখ টাকা দিতে বলেন। না দিলে মাদক মামলার ভয় দেখান। কোনো উপায় না দেখে মান্নান তাদের প্রস্তাবে রাজি হয়ে স্বজনদের ফোন করেন। স্বজনরা ভোরের দিকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা দিয়ে মান্নানকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান। এ ঘটনায় অজ্ঞাত ৮ জনের বিরুদ্ধে আনোয়ারা থানায় মামলা হয়।