জীবনযুদ্ধে হার না মানা এক আলোকবর্তিকা

সিরু বাঙালি

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২২ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৬:০৫ পূর্বাহ্ণ

শহীদ জায়া বেগম মুশতারী শফীকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারসহ শোষণমুক্ত অসামপ্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে এক আপোষহীন সংগ্রামী নাম উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধকালীন গ্রুপ কমান্ডার ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখক ও গবেষক সিরু বাঙালি বলেন, জীবনযুদ্ধে হার না মানা এক আলোকবর্তিকার নাম মুশতারী শফী। দেশ, সমাজ ও নারীর কল্যাণে হেঁটেছেন দীর্ঘ পথ। স্বাধীনতা সংগ্রামে হারিয়েছেন প্রাণপ্রিয় স্বামী ও আপন ছোট ভাইকে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ব্যাপারে ছিলেন আপোষহীন। লেখালেখির পাশাপাশি রাজপথে সক্রিয় ছিলেন আজীবন। দীর্ঘ সময়ের সাহিত্যচর্চায় রচনা করেছেনে অসংখ্য গ্রন্থ। সাহিত্য, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে রেখেছেন অনন্য অবদান।
তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠায়ও তাঁর অগ্রণী ভূমিকা ছিল। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রসহ আগরতলায় গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেছেন। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে গণআন্দোলন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিসহ শোষণমুক্ত অসামপ্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ঘর থেকে রাজপথ সর্বত্র সক্রিয় ছিলেন।
বেগম মুশতারী শফীর নামটি বললেই প্রথমে চোখের সামনে ভেসে ওঠে মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে গণআন্দোলনসহ এক আপোষহীন সংগ্রামীর নাম। একাধারে তিনি মুক্তিযুদ্ধের শব্দসৈনিক, সমাজ সংগঠক, নারীনেত্রী ও সাহিত্যিক। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে তিনি আমাদের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন শহীদ জায়া হিসেবে। অথচ মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান ঈর্ষনীয়।
সিরু বাঙালি বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে সব আন্দোলনে তিনি ছিলেন অগ্রভাগে। তাঁর জীবন এতটা কর্মব্যাপ্তিতে মোড়ানো ছিল যে, তা অবর্ণনীয়। প্রতিটি অধিকারে, সংগ্রামে তিনি হয়ে উঠেছেন অগ্রপথিক। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তাদের চট্টগ্রাম নগরীর এনায়েত বাজারস্থ মুশতারী লজ হয়ে উঠেছিল মুক্তিবাহিনীর গোলাবারুদ রাখার নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
তিনি বলেন, সারা দেশে প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক ও নাগরিক আন্দোলনে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল অবিস্মরণীয়। নব্বইয়ে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিকে চট্টগ্রামে ব্যাপক আকারে গড়ে তুলেছিলেন বেগম মুশতারী শফী। তিনি চলে গেলেন। কিন্তু তাঁর মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রাম আমাদেরকে পথ দেখাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৩০ বছরের স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে এবার কম
পরবর্তী নিবন্ধমুশতারী শফীদের কারণেই বিচার হয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের