পোশাক খাতের সর্বোচ্চ অবচয় হার ১৬ শতাংশ থেকে প্রায় দ্বিগুণ বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করেছে সরকার; তবে তা ‘প্রত্যাখানের’ কথা জানিয়েছে বিকেএমইএ। গতকাল রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি অনুবিভাগের এক আদেশে দুই দশকের বেশি সময় আগের এ নীতি পরিবর্তন করা হয়। আদেশে বলা হয়, বেসিক কাপড়ে সর্বোচ্চ অবচয় ধরা হবে ২৭ শতাংশ, বিশেষ কাপড়ে ৩০ শতাংশ এবং সুয়েটার ও মোজার ক্ষেত্রে ৪ শতাংশ অবচয় ধরা হবে। অবিলম্বে এ আদেশ কার্যকর হবে। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় শর্ত-নির্দেশনা জারি করতে পারবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়। খবর বিডিনিউজের।
পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএ গত এক বছর ধরে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ অবচয় সুবিধা আদায় করতে সরকারের সঙ্গে দর কষাকষি করছে। এ আদেশের বিষয়ে জানতে চাইলে বিকেএমইএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আমরা এ আদেশ প্রত্যাখ্যান করছি। আগামীকাল (আজ সোমবার) আনুষ্ঠানিকভাবে জানাব। অবচয় সুবিধার আওতায় একজন পণ্য আমদানিকারক আমদানি পণ্যের শুল্কায়নের ক্ষেত্রে ছাড় পেয়ে থাকেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ‘নিট গার্মেন্টে সুতা থেকে কাপড় তৈরি এবং কাপড় থেকে পোশাক তৈরিতে অবচয় হার পুর্র্ননিধারণ’ শীর্ষক এ আদেশে বলা হয়, নিট গার্মেন্টে সুতা থেকে কাপড় তৈরি এবং কাপড় থেকে পোশাক তৈরিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ১৯৯৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর জারি করা অবচয় হার বাতিল করা হয়েছে। এর পরিবর্তে বেসিক নিট বা টিশার্ট, পোলো শার্ট, ট্রাউজার, শর্টস, স্কার্টস, পায়জামা ও এ ধরনের পণ্যে সর্বোচ্চ ২৭ শতাংশ অবচয়ন ধরা হয়েছে। রম্পার্স, টেঙ্ক টপস, গাউন, হুডি, লিঞ্জারস এবং এ ধরনের অন্যান্য স্পেশাল আইটেমের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ অবচয়ন ধরা হয়েছে। অপরদিকে সুয়েটার ও মোজার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ অবচয়ন ধরা হয়েছে।
পোশাক রপ্তানিকারকরা রপ্তানি আদেশের বিপরীতে যেসব কাঁচামাল আনেন, সেখান থেকে অবচয় সুবিধা কাজে লাগিয়ে শুল্কছাড় পেয়ে থাকেন। এটির হার বাড়লে কিছুটা বাড়তি শুল্ক সুবিধা পাওয়া যায়। আর সরকার নির্ধারিত অবচয় প্রকৃত অবচয়ের শেষে কম হলে আমদানি করা কাঁচামালে অবচয় লোকসানের পাশাপাশি শুল্কজনিত লোকসানের মুখে পড়েন কারখানা মালিকরা। আবার সরকার নির্ধারিত অবচয়ের চেয়ে কম অবচয়ে পোশাক তৈরি করা গেলে উদ্বৃত্ত কাপড় ও অন্যান্য কাঁচামাল অন্য কাজে ব্যবহার করতে পারেন ব্যবসায়ীরা।
গত জানুয়ারি মাসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া এক আবেদনে ৩৮ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৫৫ শতাংশ অবচয়ের একটি হিসাব দেখিয়েছে বিকেএমইএ। এক্ষেত্রে প্রযুক্তির আধুনিকায়ন, পোশাকখাতে নতুন নতুন মেশিনারিজ সংযোজন, ক্রেতার চাহিদা ও রুচিতে পরিবর্তনসহ বিভিন্ন কারণ তুলে ধরা হয়েছে।