মিত্রবাহিনী ঢাকা বেতার কেন্দ্র স্তব্ধ করে দেয়

আজাদী ডেস্ক | শুক্রবার , ১০ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৬:০৭ পূর্বাহ্ণ

চূড়ান্ত বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ। ঢাকা ছাড়া অধিকাংশ দেশের অধিকাংশ জেলা শত্রুমুক্ত। প্রাণ বাঁচাতে পালাচ্ছে পাক হানাদার ও স্বাধীনতার শত্রু রাজাকার-আলবদর, শান্তি কমিটির সদস্যরা। অকুতোভয় মিত্রবাহিনী সদর্পে চারদিক ঘেরাও করে ঢাকার সন্নিকটে চলে এসেছে। ঢাকায় পরিকল্পিত চূড়ান্ত হামলা চালিয়ে শত্রুদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে তারা।
ডিসেম্বরের এদিন মিত্রবাহিনীর জঙ্গি বিমানগুলো ঢাকা বেতার কেন্দ্র স্তব্ধ করে দিল, বোমা-রকেট ছুঁড়ে বিধ্বস্ত করে দিল ঢাকার কুর্মিটোলা বিমানবন্দর। পরাজয় নিশ্চিত, তবুও আত্মসমর্পণের আগে বাঙালির নিশ্চিত স্বাধীনতা কেড়ে নিতে তখনও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিধ্বস্ত পাক শাসকরা।
একাত্তরের এদিন ৫৭ নম্বর ডিভিশন বিশ্বকে দেখিয়ে দিল মিত্রবাহিনী কিভাবে মুক্তিযুদ্ধে নদীর বাধা অতিক্রম করে। ভোর থেকে ভৈরব বাজারের ৩/৪ মাইল দক্ষিণে হেলিকপ্টার করে নামানো হলো ৫৭নং ডিভিশনের সৈন্য। সারাদিন ধরে মেঘনা অতিক্রমের সেই অভিযান চলে। প্রথম বাহিনীটা ওপারে নেমেই ঘাঁটি গেড়ে বসল। কিছুটা উত্তরে ভৈরব বাজারের কাছেই তখন পাকিস্তানি সৈন্যদের বড় একটা মজুদ। ব্রিজটার একটা অংশ ভেঙে দিয়ে নদীর পশ্চিম পারে ওঁৎ পেতে বসে থাকে হানাদাররা।
আকাশে সূর্য উঠতেই তারা দেখতে পেল হেলিকপ্টার। নদীর পার হচ্ছে, কিন্তু দেখেও তারা ঘাঁটি ছাড়তে সাহস পেল না। ওদিকে ছুটে গেলেই আশুগঞ্জ থেকে মূল মিত্রবাহিনী ভৈরবজার-ঢাকার রাস্তা ধরবে। পাকিস্তানি বাহিনী ভুল বোঝায় মিত্রবাহিনীর সুবিধা হলো বিনা বাধায় মেঘনা পাওয়া গেল।
হেলিকপ্টারে পার হলো কিছু সৈন্য। অনেকে আবার পার হলো স্টিমার ও লঞ্চে করে। কিছু পার হলো দেশি নৌকায়। ট্যাঙ্কগুলো নিয়ে কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছিল প্রথমে। কিন্তু সেই সমস্যাও দূর হলো এক অভাবনীয় উপায়ে। নৌকায় দড়ি বেঁধে ট্যাঙ্কগুলো টেনে নদীর ওপারে নিয়ে যাওয়া হয়। একে একে শত্রুমুক্ত হতে থাকে বিভিন্ন এলাকা। বাংলাদেশের বিজয় অনিবার্য বুঝতে পেরে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে সেজন্য বাঙালিকে নেতৃত্বশূন্য করতে গোপন ষড়যন্ত্র আঁটতে শুরু করে পাকবাহিনী। আর এ পরিকল্পনার প্রধান নায়ক স্বাধীনতার প্রধান শত্রু এদেশীয় জামায়াতের রাজাকার-আলবদর-আলশামস।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরামুতে চার স্কুলছাত্রকে অপহরণ অভিযোগ দুই রোহিঙ্গার বিরুদ্ধে
পরবর্তী নিবন্ধনারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে