কর ফাঁকি সংক্রান্ত পানামা ও প্যারাডাইস কেলেঙ্কারিতে উঠে আসা ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট সংস্থার পদক্ষেপ জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট। সেই সঙ্গে দেশে অর্থপাচার প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। এজন্য বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এবং পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) আগামী ৯ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছে উচ্চ আদালত। বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাই কোর্ট বেঞ্চ গতকাল সোমবার এই আদেশ দেয়। খবর বিডিনিউজের।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম। দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। কাইয়ুম বলেন, পানামা ও প্যারাডাইস পেপার্সে উঠে আসা ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ জানতে চাওয়ার পাশাপাশি আদালত দুদকের কাছেও একটি বিষয় জানতে চেয়েছে।
পানামা ও প্যারাডাইস কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে ২০১৬ ও ২০২১ সালে দুদক বিএফআইইউতে দুটি চিঠি দিয়েছিল। ওই চিঠি দুটির প্রেক্ষিতে বিএফআইইউ কী জানিয়েছে বা আদৌ জানিয়েছিল কিনা, তার একটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশের কে কত টাকা পাচার করেছে- হাই কোর্ট জানতে চাওয়ার নয় মাস পর কর ফাঁকি সংক্রান্ত পানামা ও প্যারাডাইস কেলেঙ্কারিতে উঠে আসা দেশের ৪৩ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকাসহ অর্থপাচার সংক্রান্ত প্রতিবেদন রোববার আদালতে উপস্থাপন করে দুদক। এই ৪৩ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৪টি নাম এসেছিল ‘পানামা পেপার্সে।’ আর ‘প্যারাডাইস পেপার্সে’ এসেছিল ২৯ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নাম।
পানামা পেপার্স সংক্রান্ত দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশীয়, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও সাংবাদিকদের বৈশ্বিক জোট ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে)’র তথ্য বিশ্লেষণ, পর্যালোচনা করে পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারিতে প্রথম পর্বে বাংলাদেশি ৪৩ ব্যক্তি ২টি প্রতিষ্ঠান এবং দ্বিতীয় পর্বে ১৮ ব্যক্তি ও ৫টি প্রতিষ্ঠানসহ মোট ৬১ জন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছে।
দুদক বলেছে, অনুসন্ধানের সময় এসব ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে তথ্য চেয়ে বিএফআইইউ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠি দেওয়া হয়েছিল। দুদক এখনও তাদের কাছ থেকে কোনো তথ্য পায়নি। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, গতকাল আমরা পানামা এবং প্যারাডাইস কেলেঙ্কারিতে উঠে আসা অর্থ পাচারকারী ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের দুটি তালিকা আদলতকে দিয়েছিলাম। তার মধ্যে প্যারাডাইস পেপার্সের ২৯ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নাম ঠিক আছে। কিন্তু পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে উঠে আসা মোট ৬১ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দুদক ১৪ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের তালিকা কেন দিল তা জানতে চেয়েছিলেন আদালত। আমি বলেছি, কমিশনের সাথে কথা বলে বিষয়টি জানাতে হবে।