জনবল সংকটে ব্যাহত হচ্ছে তদারকি

বন্ড ব্যবস্থাপনা

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৭ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৬:২৮ পূর্বাহ্ণ

জনবল সংকটে চট্টগ্রাম কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের দপ্তরে বন্ড ব্যবস্থাপনার নিয়মিত তদারকি ব্যাহত হচ্ছে। এই সমস্যা দীর্ঘ সময় ধরে চললেও নতুন জনবল নিয়োগে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জনবল সংকটের ফলে মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন কারখানা পরিদর্শনেও বেগ পেতে হচ্ছে বন্ড কর্মকর্তাদের। অন্যদিকে দপ্তরের যে কাজ একদিনে শেষ হওয়ার কথা সেটি শেষ হতে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় লাগছে। এতে বন্ড সুবিধার অপব্যবহার হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যাচ্ছে।
কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের আওতাধীন গার্মেন্টস বন্ড প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮৩৮টি। এছাড়া এঙেসরিজ বন্ড রয়েছে ৩১৬টি। এর বাইরে চারটি ইপিজেডের (সিইপিজেড, কর্ণফুলী ইপিজেড, কোরিয়ান ইপিজেড এবং কুমিল্লা ইপিজেড) আওতাধীন প্রতিষ্ঠান রয়েছে ২৭৪টি, মীরসরাই ইপিজেড এবং হোম কনজাম্পশন বন্ড ৪৯টি, ডিপ্লোম্যাটিক বন্ড ৪টি, ডিউটি ফ্রি শপ ২টিসহ মোট এক হাজার ৪৯৩টি বন্ডেড প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই বিপুল সংখ্যক বন্ডেড প্রতিষ্ঠান তদারকি করার মতো জনবল চট্টগ্রাম কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের দপ্তরে নেই।
কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমানে চট্টগ্রাম দপ্তরে দুটি অতিরিক্ত কমিশনারের পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন একজন। এছাড়া যুগ্ম কমিশনারের দুই পদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দুটি পদই শূন্য রয়েছে এবং উপ-কমিশনারের তিনটি পদের মধ্যে কাগজে কলমে দুইজন কর্মরত থাকলেও বর্তমানে একজন অষ্ট্রেলিয়ায় শিক্ষা ছুটিতে আছেন। অর্থাৎ ওই পদে বর্তমানে আছেন একজন। অপরদিকে সহকারী কমিশনারের সাতটি পদের বিপরীতে বর্তমানে কাজ করছেন ৩ জন, এর মধ্যে সর্বশেষ গত ২৮ ফেব্রুয়ারি একজন সহকারী কমিশনার অবসরোত্তর ছুটিতে চলে যান। অন্যদিকে সহকারী রজাস্ব কর্মকর্তার ৯২টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন ৪০ জন এবং অবশিষ্ট ৫২টি পদই শূন্য রয়েছে। এদিকে বর্তমানে একজন অতিরিক্ত কমিশনারকে এক হাজার ৪৯৩টি প্রতিষ্ঠান তদারকি করতে হচ্ছে। এছাড়া একজন উপ-কমিশনারকে ৩৭৩টি প্রতিষ্ঠান এবং একজন সহকারী কমিশনারকে ৩৭টি প্রতিষ্ঠান দেখতে হচ্ছে। প্রয়োজনের অপ্রতুল জনবল দিয়ে সবগুলো প্রতিষ্ঠান তদারকি করা দূরূহ হয়ে পড়েছে। জনবল সংকটের সমাধানের লক্ষ্যে কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট চট্টগ্রাম দপ্তরে কমিশনার মাহবুবুর রহমান ১ জন যুগ্ম কমিশনার, ২জন উপ কমিশনার এবং ১০ জন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য এনবিআরকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠিও লিখেন। এছাড়া কাস্টমস এঙাইজ ও ভ্যাট ট্রেনিং একাডেমি থেকে জরুরি ভিত্তিতে চারজন কম্পিউটার অপারেটর, উচ্চমান সহকারী, সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর সংযুক্ত করার অনুরোধও জানানো হয়। বর্তমানে এসব কাজের জন্য ২৩টি পদ থাকলেও কর্মরত আছে মাত্র ৫ জন, শূন্য পদ রয়েছে ১৮টি।
জনবল সংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট চট্টগ্রামের কমিশনার একেএম মাহাবুবুর রহমান দৈনিক আজাদীকে বলেন, জনবল সংকটের মধ্যে আমরা সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছি। এটা ঠিক যারা কর্মরত আছেন তাদের ওপর কাজের চাপ বাড়ছে। তবে কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এটি বলা যাবে না। জনবল নিয়োগের ব্যাপারে আমরা এনবিআরে চিঠি লিখেছি। নিয়োগের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত পাইনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনতুন ১০ ইঞ্জিনের ট্রায়াল শুরু
পরবর্তী নিবন্ধসু চির চার বছরের কারাদণ্ড