ইন্দোনেশিয়ায় অগ্ন্যুৎপাতে নিহত ১৩

ছাইয়ের নিচে ১১ গ্রাম

| সোমবার , ৬ ডিসেম্বর, ২০২১ at ১০:৫৬ পূর্বাহ্ণ

ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে মাউন্ট সেমেরু আগ্নেয়গিরিতে শনিবার শুরু হওয়া অগ্ন্যুৎপাত থেকে সৃষ্ট বিশাল ছাইয়ের স্তূপের নিচে তলিয়ে গেছে ১১টি গ্রাম। আগ্নেয়গিরির ছাই বাড়িঘরের ছাদ পর্যন্ত ঢেকে দিয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, ঘন ধোঁয়ার মেঘ সূর্যকে সম্পূর্ণ ঢেকে দেয়ায় দিনের বেলায়ও আকাশ রাতের মতো ঘন অন্ধকার হয়ে আছে। এখন পর্যন্ত অন্তত ১৩ জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছে বলে দেশটির আপদকালীন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, অন্তত ৫৭ জন অগ্নিদগ্ধ হয়ে আহত হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকে গুরুতরভাবে পুড়ে গেছে। ইন্দোনেশিয়ার বিপর্যয় মোকাবেলা সংস্থা বিএনপিবি বলছে, অগ্নিদগ্ধদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। খবর বিবিসি বাংলার। অগ্ন্যুৎপাতে লুমাজাং প্রদেশের অন্তত ১১টি গ্রাম ছাইয়ের নিচে সম্পূর্ণ চাপা পড়েছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে পালানো গ্রামবাসীদের অনেকেই মসজিদ এবং অস্থায়ী কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। এলাকা থেকে এ পর্যন্ত ৯শর বেশি মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। কিন্তু উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে দম বন্ধ করা ধোঁয়া আর বিদ্যুৎ সংযোগ পুরো বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার কারণে। এছাড়া অগ্ন্যুৎপাতের পর ঝড়-বৃষ্টিতে আগ্নেয়গিরির লাভা ও ধ্বংসাবশেষ মিশে কাদায় পরিণত হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। স্থানীয় একজন কর্মকর্তা জানান, ওই এলাকার সঙ্গে নিকটবর্তী মালাং শহরের সড়ক ও সেতু যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। খুব দ্রুত পরিস্থিতি খারাপ হয়ে গেছে। ছাইয়ে চাপা পড়া ভবনগুলোতে আটকে পড়া দশজনকে ইতোমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ থেকে পাঁচ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না। অস্ট্রেলিয়ার ডারউইনে ভলক্যানিক অ্যাশ অ্যাডভাইজরি সেন্টার বলছে, আগ্নেয়গিরির ছাই জ্বালামুখ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এখন ভারত মহাসাগরের উপর দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে এগোচ্ছে। ছাইয়ের সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে এয়ারলাইন্সগুলোকে সতর্ক করা হয়। এয়ারলাইন্সগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে এই ছাই ৫০ হাজার ফুট উঁচু পর্যন্ত উঠতে পারে। বেশিরভাগ বিমান যে উচ্চতায় ক্রুজ করে, সেমেরু আগ্নেয়গিরির ছাই তার চেয়ে উপরে উঠেছে। ছাইয়ের মেঘ এড়াতে এয়ারলাইন্সগেুলোকে তাদের যাত্রাপথ পরিবর্তন করতে হবে। বিমানের ইঞ্জিনের ঠান্ডা অংশে এই ছাই ঢুকলে তা জমাট বেঁধে যায়। তাতে বাতাস চলাচল ব্যাহত হয়ে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া ছাইয়ের কারণে পাইলটরা স্পষ্ট দেখতে পান না। বিমানের ভেতরে বাতাসের মান খারাপ হয়ে যেতে পারে। তখন অঙিজেন মাস্ক পরা অপরিহার্য হয়ে উঠতে পারে। মাউন্ট সেমেরু আগ্নেয়গিরি থেকে নিয়মিত অগ্ন্যুৎপাত হয়। প্রায়শ এই আগ্নেয়গিরি থেকে ৪,৩০০ মিটার উঁচু পর্যন্ত ছাই নির্গত হয়। ছাইয়ের মেঘ ধীরে ধীরে বাতাসে মিশে চলে যাবে। ইন্দোনেশিয়ার ১৩০টি জীবন্ত আগ্নেয়গিরির একটি হলো মাউন্ট সেমেরু। এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩,৬৭৬ মিটার উপরে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানকে হত্যার চেষ্টা
পরবর্তী নিবন্ধবাঁশখালী বাণীগ্রাম মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার প্রস্তুতিসভা