করোনা মহামারীর মাঝেও জীবন বাজি রেখে দেশের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক এবং গতিশীল রাখায় শ্রমিকদের ১০ কোটি টাকারও বেশি প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। গতকাল তৃতীয় দফায় ৬ হাজার ৭৫২ শ্রমিককে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে ১ কোটি ৬৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। বন্দরের কার্গো ও কন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ে নিয়োজিত বার্থ অপারেটর, টার্মিনাল অপারেটর ও শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটরদের অধীনে কর্মরত এসব শ্রমিকের মাঝে বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রণোদনার এই অর্থ প্রদান করে। গতকাল বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান শ্রমিকদের হাতে প্রণোদনার চেক হস্তান্তর করেন।
সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকাণ্ড গতিশীল রাখতে বার্থ অপারেটর, টার্মিনাল অপারেটর ও শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটরদের অধীনে কর্মরত শ্রমিকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। করোনাকালে শ্রমিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে কাজ করেছেন। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের প্রণোদনা দেয়ার জন্য উদ্যোগ নেয়। পরবর্তীতে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়ার পর গত জুলাই শ্রমিকদের ১১ হাজার টাকা করে প্রণোদনা দেয়া হয়। এরপর গত বছরের মে মাসে শ্রমিকদেরকে দ্বিতীয় দফায় দেড় হাজার টাকা করে প্রণোদনা দেয়া হয়। ওই সময় শ্রমিকদেরকে খাদ্য সহায়তাও দেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। গতকাল ৬ হাজার ৭৫২ শ্রমিককে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে তৃতীয় দফায় প্রণোদনা প্রদান করা হয়।
শ্রমিকদের হাতে প্রণোদনার চেক তুলে দিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, করোনা অতিমারির সময় শ্রমিকরা নিরবচ্ছিন্নভাবে সেবা দিয়েছেন। শ্রমিকেরা ঘরে ঢুকে না গিয়ে মাঠে ছিলেন বলেই চট্টগ্রাম বন্দর ১ মিনিটের জন্যও বন্ধ হয়নি। দেশের অর্থনীতি পুরোদমে সচল রাখতে নানা প্রতিবন্ধকতার মাঝেও শ্রমিকেরা কাজ করেছেন। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসলেও শ্রমিকদের আর্থিক সঙ্গতির বিষয়টি বিবেচনায় রেখে আমরা আবারও প্রণোদনা দিচ্ছি।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম বন্দরের বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন। তিনি চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ফ্রন্টলাইনার হিসেবে করোনার টিকার ব্যবস্থা করেছেন। তাই ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছানোর যে লক্ষ্য নিয়ে তিনি কাজ করছেন, সে লক্ষ্যে পৌঁছাতে আমাদের সকলকে নিজ নিজ জায়গা থেকে একাগ্রচিত্তে কাজ করে তাঁর হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বন্দরের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মোহাম্মদ জাফর আলম, সদস্য (অর্থ) কামরুল আমিন, সদস্য (প্রকৌশল) কমডোর এম নিয়ামুল হাসান, সদস্য (হারবার এন্ড মেরিন) কমডোর মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মমিনুর রশিদ, পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম, সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক ও চিফ পার্সোনেল অফিসার নাছির উদ্দিন এবং অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।












