হামলায় আহত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) শিক্ষার্থী মাহাদি আকিব অবশেষে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন। চিকিৎসাধীন থাকার ২০ দিনের মাথায় গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে বাবা গোলাম ফারুক মজুমদারের সঙ্গে হাসপাতাল ছাড়েন তিনি। চমেক হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স যোগে তারা কুমিল্লার গ্রামের বাড়িতে ফিরেছেন। আকিবের হাসপাতাল ছাড়ার তথ্য নিশ্চিত করে চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর আজাদীকে বলেন, সে (আকিব) এখন পুরোপুরি সুস্থ বলা যায়। ৩/৪ দিন আগে থেকেই সে চলাফেরা, খাওয়া-দাওয়া সবকিছু স্বাভাবিকভাবে করতে পারছিল। সুস্থ দেখে পরিবারের পক্ষ থেকেও তাকে বাসায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলছিল। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সিনিয়র চিকিৎসকদের নিয়ে আমরা আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে বসেছিলাম। সেখানে তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা হয়েছে। যেহেতু সে স্বাভাবিকভাবে সবকিছু করতে পারছে, তেমন জটিলতাও নেই; সেহেতু তাকে ছাড়পত্র দেয়ার বিষয়ে সবাই সম্মতি দেন। এর পরপরই আমাদের হাসপাতালের একটি অ্যাম্বুলেন্সে তাদের (বাবা-ছেলে) দুজনকে আমরা তুলে দিয়েছি। বিকেলে তার (আকিবের) বাবা ফোন করেছিলেন। তারা কুমিল্লার বাড়িতে পৌঁছে গেছেন বলে জানিয়েছেন।
সার্বিকভাবে আকিব এখন বেশ সুস্থ মন্তব্য করে চমেক হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. রঞ্জন কুমার নাথ গতকাল আজাদীকে বলেন, বেশ কয়দিন ধরেই সে মোটামুটি স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারছিল। এরপরও আমরা তাকে পর্যবেক্ষণে রেখেছিলাম। বৃহস্পতিবার তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তার বাবা তাকে বাসায় নিয়ে গেছেন। তবে অস্ত্রোপচারের পর আকিবের মাথার খুলির হাড়ের যে একটা অংশ খুলে রাখা হয়েছিল, ২/৩ মাস পর পুনরায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সেটি প্রতিস্থাপন করা হবে। এই সময়ে তাকে একটু সতর্ক থাকতে হবে। যে অংশে হাড় নেই, ওই জায়গায় যাতে চাপ বা আঘাত না লাগে।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ অক্টোবর (শুক্রবার) রাত ১১টার দিকে চমেক প্রধান ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের দুগ্রুপের মাঝে মারামারির ঘটনা ঘটে। সেখানে মাহফুজুল হক ও নাইমুল ইসলাম নামে সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী ছাত্রলীগের দুজন কর্মী আহত হয়। ২৯ অক্টোবর রাতের ওই ঘটনার জের ধরে পরদিন (৩০ অক্টোবর) সকালে চমেক প্রধান ফটক সংলগ্ন এলাকায় মাহাদি জে আকিবের উপর হামলা করে নাছির অনুসারীরা। এমবিবিএস ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহাদি আকিব উপমন্ত্রী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। গুরুতর আহত মাহাদিকে প্রথমে চমেক হাসপাতালের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। ওই দিন বিকেলেই মাহাদির মাথায় অস্ত্রোপচার করাতে হয়। অস্ত্রোপচারের পর (৩০ অক্টোবর) থেকেই আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিল মাহাদি। চিকিৎসাধীন থাকার ২০ দিনের মাথায় (গতকাল) অবশেষে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেন ওই শিক্ষার্থী।