করোনাকালে রোগীদের চিকিৎসাসেবায় অনন্য অবদান রাখায় লায়ন্স ক্লাবস ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিক্ট ৩১৫বি-৪ এর সাবেক গভর্নর লায়ন কামরুন মালেককে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের পক্ষ থেকে বর্ণাঢ্য আয়োজনে গতকাল এই সম্মাননা প্রদান করা হয়। করোনাকালে লায়ন্স গভর্নরের দায়িত্ব পালনকালে লায়ন কামরুন মালেক বিভিন্ন ক্লাবের সহায়তায় ৫০ লাখের বেশি টাকা ব্যয় করে মা ও শিশু হাসপাতালে লায়ন্স করোনা সাপোর্ট সেন্টার প্রতিষ্ঠা করে দেন। যা করোনাকালের ভয়াল সময়ে করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। সন্তান যখন মাকে রেখে পালাচ্ছিল, স্ত্রী যখন পালাচ্ছিল করোনাক্রান্ত স্বামীকে রেখে, তখন মা ও শিশু হাসপাতাল করোনা রোগীদের চিকিৎসা শুরু করে। আর ওই চিকিৎসা সেবার শুরুতে লায়ন কামরুন মালেক এগিয়ে এসে লায়ন্স করোনা সাপোর্ট সেন্টার প্রতিষ্ঠা করে দেন। যা চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের করোনা চিকিৎসা কার্যক্রমকে অনেক বেশি গতিশীল করেছে। লায়ন কামরুন মালেকের ওই ভূমিকাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে মা ও শিশু হাসাপাতাল পরিবারের পক্ষ থেকে গতকাল এ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
লায়ন কামরুন মালেককে সম্মাননা প্রদান উপলক্ষে গতকাল সকালে হাসপাতালের লেকচার গ্যালারিতে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কার্যনির্বাহী কমিটির প্রেসিডেন্ট প্রফেসর এম এ তাহের খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কার্যনির্বাহী কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট (ডোনার) সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেন, জেনারেল সেক্রেটারি মোহাম্মদ রেজাউল করিম আজাদ, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল প্রফেসর এ এস এম মোস্তাক আহমেদ, হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মোহাম্মদ নূরুল হক বক্তব্য রাখেন। অন্যান্যের মধ্যে কার্যনির্বাহী কমিটির জয়েন্ট জেনারেল সেক্রেটারি ডা. কামরুন নাহার দস্তগীর, অর্গানাইজিং সেক্রেটারি মোহাম্মদ সাগির, সদস্য মোহাম্মদ হারুন ইউসুফ, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর জালাল উদ্দিন, জেনারেল সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর খন্দকার বোরহান উদ্দিন, অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর অলক কান্তি বিশ্বাস, এনেসথেসিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর অলক নন্দী, অনকোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. শেফাতুজ্জাহান, মেডিসিন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. যীশু দেবনাথ, লায়ন্স ক্লাব অব ইন্টারন্যাশনালের প্রাক্তন কেবিনেট সেক্রেটারি লায়ন জাহেদ হোসেন চৌধুরী প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, করোনাকালে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের ভূমিকা ইতোমধ্যে প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু বহু মানুষের সহায়তায় জনগণের এই হাসপাতাল করোনা রোগীদের পাশে দাঁড়ানোর সাহস দেখিয়েছিল। তাঁদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন লায়ন কামরুন মালেক। করোনাকালের প্রায় শুরুতেই তিনি যেভাবে এগিয়ে এসেছিলেন তা আমাদের কাজকে অনেক বেশি সহজ করে তুলেছিল।
সংবর্ধনার জবাবে লায়ন কামরুন মালেক বলেন, করোনাকালে আপনারা যেভাবে চট্টগ্রামের মানুষকে সেবা দিয়েছেন তা চট্টগ্রামবাসী আজীবন স্মরণ রাখবে। আমরা লায়ন্স ক্লাবের পক্ষ থেকে আপনাদের সাথে এই সেবা কার্যক্রমে যুক্ত হতে পেরে গর্ব বোধ করছি। সম্মাননা প্রদান করায় তিনি চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, এই সম্মান চট্টগ্রামের সকল লায়ন সদস্যের। বিভিন্ন লায়ন্স ক্লাবের মানবিক মানুষগুলো এগিয়ে এসে আমার হাত শক্তিশালী করেছিল। তিনি ভবিষ্যতেও মা ও শিশু হাসপাতালের যে কোনো কার্যক্রমের সাথে যুক্ত থাকার কথা উল্লেখ করে বলেন, লায়ন্স ক্লাবস ইন্টারন্যাশনাল এবং আজাদী পরিবার মা ও শিশু হাসপাতালের যে কোনো শুভ উদ্যোগের সাথে পাশে থাকবে।
মা ও শিশু হাসপাতালের ক্যান্সার হাসপাতাল বাস্তবায়নে লায়ন্স ক্লাবের পক্ষ থেকে তহবিল সংগ্রহের চেষ্টার কথা উল্লেখ করে লায়ন কামরুন মালেক বলেন, লায়ন সদস্যদের অনেকেই ইতোমধ্যে এই তহবিল গঠনে এগিয়ে এসেছেন। আমরা অবশ্যই ভালো কিছু করতে পারবো বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, মা ও শিশু হাসপাতাল ক্যান্সার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম অবশ্যই সফল হবে এবং চট্টগ্রামের মানুষ এর সুফল পাবে।
অনুষ্ঠানে হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের সর্বস্তরের ডাক্তার, নার্স, কর্মকর্তা, কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।
ডায়াবেটিস সচেতনতা দিবস পালন : অপরদিকে গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের উদ্যোগে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা কার্যনির্বাহী কমিটির প্রেসিডেন্ট প্রফেসর এম এ তাহের খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাক্তন লায়ন্স জেলা গভর্নর লায়ন কামরুন মালেক। বিশেষ অতিথি ছিলেন কার্যনির্বাহী কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট (ডোনার) সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেন, জেনারেল সেক্রেটারি মোহাম্মদ রেজাউল করিম আজাদ, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল প্রফেসর এ এস এম মোস্তাক আহমেদ, হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মোহাম্মদ নূরুল হক। অন্যান্যের মধ্যে কার্যনির্বাহী কমিটির জয়েন্ট জেনারেল সেক্রেটারি ডা. কামরুন নাহার দস্তগীর, অর্গানাইজিং সেক্রেটারি মোহাম্মদ সাগির, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ হারুন ইউসুফ, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর জালাল উদ্দিন, জেনারেল সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর খন্দকার বোরহান উদ্দিন, অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর অলক কান্তি বিশ্বাস, এনেসথেসিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর অলক নন্দী, অনকোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ শেফাতুজ্জাহান, মেডিসিন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ যীশু দেবনাথ, লায়ন্স ক্লাব অব ইন্টারন্যাশনালের প্রাক্তন কেবিনেট সেক্রেটারি লায়ন জাহেদ হোসেন চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডায়াবেটিস ও হরমোন রোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক (চলতি দায়িত্ব) ডাঃ মোহাম্মদ আবু বকর।
প্রধান অতিথি প্রাক্তন লায়ন জেলা গভর্নর লায়ন কামরুন মালেক বলেন, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল বর্তমানে চট্টগ্রামে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে একটি উচ্চমানের হাসপাতাল। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন একদিন চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল সারা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ মানের একটি হাসপাতাল হিসেবে রূপ লাভ করবে। তিনি বলেন, করোনাকালে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল যেভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে চট্টগ্রামবাসীর ভালোবাসার আসন লাভ করেছে, ডায়াবেটিসের মতো রোগের চিকিৎসায়ও এই হাসপাতাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি ডায়াবেটিস রোগ হু হু করে বাড়ছে উল্লেখ করে সচেতনতা ছাড়া এই রোগ থেকে নিস্তারের কোনো উপায় নেই বলে মন্তব্য করেন।