কুমিল্লায় কোরআন অবমাননার কথিত অভিযোগ তুলে পূজামণ্ডপ এবং হিন্দু সমপ্রদায়ের ওপর হামলার চক্রান্তকারী ও ইন্ধনদাতারা সবার পরিচিত বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত সংলাপে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, কুমিল্লার ঘটনার পর থেকেই বলে এসেছি যে, এর পেছনে কোনো চক্রান্ত রয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের কোনো লোক এ কাজ করতে পারে না। নোযাখালীতে হামলার ঘটনায় কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়েছেন এবং অনেকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের জবানবন্দিতে যেসব নাম এসেছে তাদের প্রায় সবাইকে আপনারা চেনেন। খবর বিডিনিউজের।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কুমিল্লার ঘটনায়ও সে রকম নাম আসছে আর রংপুরেও একই। তবে আমরা শতভাগ নিশ্চিত হয়ে আপনাদের সামনে নাম প্রকাশ করব। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেখানে বিএনপি-জামায়াত আছে কিনা সেটা এখনই বলতে চাচ্ছি না। আমরা নিশ্চিত হয়েই আপনাদের জানাতে চাই। গ্রেপ্তারদের জবানবন্দি নেওয়া হচ্ছে, শিগগিরই সেই ইন্ধনদাতাদের নাম প্রকাশ করা হবে।
চাঁদপুর ও রংপুরের সহিংসতায় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নামও এসেছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, অপরাধীকে অপরাধী হিসেবে দেখা হয়, এখানে রাজনৈতিক পরিচয় নেই।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসামপ্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নের কথা তুলে ধরে কামাল বলেন, তিনি বলে গেছেন এদেশ সবার, এদেশে ধর্ম নিয়ে বৈষম্য হবে না। এদেশ হবে ধর্মনিরপেক্ষ। আমরা সে আদর্শই ধারণ করে চলেছি। দেশকে অস্থিতিশীল করতে সহিংসতার মাধ্যমে একটি মহল ‘সুপরিকল্পিতভাবে’ সামপ্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, সেখানে মাল্টি ইন্টারেস্ট কাজ করে। মাদক ছাড়াও ১১ লাখ রোহিঙ্গা নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তাছাড়া যারা তাদেরকে (রোহিঙ্গা) জোর করে এদেশে পাঠিয়েছে, তাদেরও ইন্ধন থাকতে পারে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারদিকে বেড়া তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে এবং বেড়া তৈরি শেষ হলে পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিষয়ে তিনি বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রের কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আনার জন্য কিছু আইনি জটিলতা রয়েছে। এজন্য আইন মন্ত্রণালয়ের স্পষ্টিকরণ চাওয়া হয়েছে।