চট্টগ্রামে প্রবাসী রায়হানুল ইসলাম ওরফে সজীব (২৭) হত্যা মামলার অন্যতম আসামি আবদুর রহমান ওরফে লাল (২৪) ঘটনার দুই বছর পর অবশেষে ধরা পড়েছে পিবিআইয়ের জালে। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল সে। এর মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করতে না পেরে হাল ছেড়ে দেয় থানা পুলিশ। আবদুর রহমানের গ্রামের বাড়ি কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ৩ নম্বর ওয়ার্ড সিডিএ টেক এলাকায়। তার বাবার নাম অলি আহমেদ। আবদুর রহমানকে পলাতক দেখিয়ে মোট ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র জমা দেয় থানা পুলিশ। কিন্তু আদালত অভিযোগ পত্রটি গ্রহণ না করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) আদেশ দেন। আদালতের আদেশপ্রাপ্ত হয়ে তদন্তের মাত্র ২৬ দিনের মাথায় দীর্ঘ প্রায় ২১ মাস ধরে পালিয়ে থাকা মামলার অন্যতম আসামি আবদুর রহমানকে গত বৃহস্পতিবার রাতে কর্ণফুলী উপজেলার ডায়মন্ড সিমেন্ট ফ্যাক্টরির পাশে মৌলভীবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।
পিবিআই সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৭ জানুয়ারি কর্ণফুলী উপজেলা থেকে মুক্তিপণ আদায়ের লক্ষ্যে দুবাই প্রবাসী রায়হানকে অপহরণ করেন আসামিরা। তার দীর্ঘদিনের পরিচিত সুমী নামে এক নারীর মাধ্যমে কৌশলে ফাঁদ পেতে সজীবকে অপহরণ করে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। রায়হান যাতে চিৎকার করতে না পেরে সেজন্য আসামিরা তার গলায় একটি মাফলার পেঁচিয়ে রাখে। একপর্যায়ে রায়হান মুক্তিপণ দেবে স্বীকার করলে তার গলার মাফলার একটু খুলে দেওয়া হয়। সঙ্গে সঙ্গে রায়হান বাঁচার জন্য চিৎকার দেয়। এতে আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মরদেহ শিকলবাহা এলাকায় ফেলে চলে যায়। পরদিন ১৮ জানুয়ারি তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা আতাউর রহমান বাদী হয়ে কর্ণফুলী থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার তদন্ত শেষে গত ২২ জুন কর্ণফুলী থানার এসআই রূপক কান্তি দাশ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে তিনি হত্যাকাণ্ডে মোট আটজন জড়িত থাকার তথ্য পাওয়ার কথা জানান। কিন্তু এদের মধ্যে দুই আসামির নাম-ঠিকানা শনাক্ত করা সম্ভব না হওয়ায় তাদেরকে অভিযোগের দায় থেকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়। একই সঙ্গে অভিযোগপত্রে এক আসামিকে পলাতক উল্লেখ করে মোট ছয়জনের নাম উল্লেখ করেন। আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ না করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন। আদালতের আদেশপ্রাপ্ত হয়ে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা ইউনিটটির উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহেদুজ্জামান চৌধুরীকে তদন্ত ভার দেন। পিবিআই কর্মকর্তা জাহেদুজ্জামান গত ৪ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত ভার গ্রহণ করে গত বৃহস্পতিবার পলাতক আসামি আবদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন।












