দেশে তরল জ্বালানি অকটেনের সংকট দেখো দিয়েছে। এতে করে যেখানে ২৪-২৫ দিনের মজুদ থাকার কথা সেখানে মজুদ নেমেছে ৮ দিনের। হঠাৎ চাহিদা বাড়লেও আন্তর্জাতিক সরবরাহকারীরাও তাৎক্ষণিক অকটেন সরবরাহ দিতেও অপারগতা প্রকাশ করেছে। এতে বিপাকে পড়েছে রাষ্ট্রীয় জ্বালানি আমদানিকারক ও নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনে (বিপিসি)। বিপিসির কর্মকর্তারা বলছেন, সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনগুলো পিক আওয়ারে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রাইভেট গাড়ি ব্যবহারীরা অকটেনে ঝুঁকার কারণে হঠাৎ করে চাহিদা বেড়েছে জ্বালানিটির। এতে সিলেট গ্যাস ফিল্ডের কনডেনসেট ফ্রাকশনেশন প্লান্ট থেকে পেট্রোলের পরিবর্তে অকটেন নিয়ে পরিস্থিতি সাময়িক সামাল দিতে হচ্ছে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ইস্টার্ন রিফাইনারি, চট্টগ্রামের প্রধান স্থাপনা, দেশের বিভিন্ন ডিপো এবং পথিমধ্যে মিলে গত ২৬ সেপ্টেম্বর অকটেনের মজুদ ছিল ১৭ হাজার ৫শ মেট্রিক টন। অথচ বিপিসির সবমিলিয়ে ৩৬ হাজার ৮৮৬ টন অকটেন মজুদ রাখার সক্ষমতা রয়েছে। তাছাড়া চলতি সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম ২৫ দিনে অকটেন বিক্রি হয়েছে ২৪ হাজার ৩শ মেট্রিক টন। গত বছরের একই সময়ে বিক্রি হয়েছিল ১৯ হাজার ৯শ মেট্রিক টন। তথ্য মতে, বর্তমান মজুদের মধ্যে ডেট স্টক রয়েছে প্রায় ১০ হাজার মেট্রিক টন। সব মিলে ১৮ দিন ব্যবহারের অকটেন মজুদ থাকার কথা বলা হলেও বাস্তবে ডেট স্টক বাদে ৮-৯ দিনের অকটেনের মজুদ রয়েছে বলে সূত্র জানায়।
জানা গেছে, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে হু হু করে বাড়ছে জ্বালানি তেলের দাম। এতে করে স্পট মার্কেট থেকে বন্ধ রাখা হয় এলএনজি সংগ্রহ। এতে হঠাৎ করে দেশে চাহিদার বিপরীতে গ্যাস সরবরাহ কমাতে বাধ্য হয় পেট্রোবাংলা। সর্বশেষ শিল্পে গ্যাস সরবরাহ বাড়াতে সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলো গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে পিক আওয়ারে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বন্ধ করে দেয় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। এতে সিএনজিচালিত প্রাইভেট গাড়িগুলোতে অকটেনের ব্যবহার বেড়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘অকটেনের সংকট হয়নি। তবে মজুদ কমেছে। এখন যে মজুদ আছে সেগুলো ডেট স্টকও রয়েছে। বর্তমানে যে অকটেন রয়েছে, তাতে ৮-৯ দিনের চাহিদা মেটানো যাবে।’ এ বিষয়ে বিপিসির পরিচালক (অপারেশন) সৈয়দ মেহদী হাসান মঙ্গলবার দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘দেশের বেশিরভাগ প্রাইভেট গাড়িতে জ্বালানি হিসেবে সিএনজি ব্যবহার করা হয়। সন্ধ্যার পর চার ঘন্টা সিএনজি পাম্প বন্ধ থাকায় প্রাইভেট গাড়িগুলোতে অকটেন ব্যবহার শুরু হয়েছে। এতে হঠাৎ করে অকটেনের চাহিদা বেড়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সাপ্লাইয়ারদের কাছ থেকে অকটেনের একটি কার্গো চেয়েছি। তারা ৬ অক্টোবরের আগে দিতে অপারগতা জানিয়েছে। তারপরও আমরা সিলেট গ্যাস ফিল্ডের সিআরইউ থেকে অকটেন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছি। তাদের সাথে কথা হয়েছে, তারা পেট্রোল দেয়া বন্ধ রেখে অকটেন দেয়ার বিষয়ে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। কয়েকদিন পর অকটেনের কার্গো চলে আসলে আমাদের সমস্যা লাঘব হবে।’