কাট্টলীতে হবে চট্টগ্রামের প্রথম মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ও জাদুঘর

সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সের নকশা থেকে বাদ মার্কেট, মিউজিয়াম ও জিমনেসিয়াম কথা বললেন শহীদ মিনার নিয়েও

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৮:৩৪ পূর্বাহ্ণ

বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী কাট্টলীতে ২৯ একর জায়গার উপর নির্মাণ হতে যাচ্ছে চট্টগ্রামের প্রথম মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ও জাদুঘর। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী এক মাসের মধ্যে প্রকল্পের নকশা পাঠানো হবে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন টানেল উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রীই এটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। জেলা প্রশাসনের প্রস্তাবিত এ প্রকল্পের জায়গা গতকাল শুক্রবার সকালে পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।
এ সময় মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রামের মানুষের বিরত্বগাথা তুলে ধরতে প্রধানমন্ত্রীর এ প্রচেষ্টা বলে উল্লেখ করেন তিনি। আহমদ কায়কাউস বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছি। এখন আমরা তা সরেজমিনে দেখেছি। দেখে মনে হল এটি খুবই চমৎকার জায়গা। তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রামের মানুষের অবদান অন্যতম। সে হিসেবে এ অঞ্চলের আলাদা একটি গুরুত্ব রয়েছে। ইতিহাস রয়েছে এ অঞ্চলের। নতুন প্রজন্মকে এসব জানতে হবে।
এদিকে কাট্টলীর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ও জাদুঘরের জন্য প্রস্তাবিত জায়গা পরিদর্শন শেষে দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউট সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজও পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব। এ সময় তিনি প্রকল্পের কাজ কতটুকু শেষ হয়েছে এবং তা কবে নাগাদ এর কাজ শেষ হচ্ছে সে বিষয়ে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের কাছে জানতে চান। জবাবে ভৌত অগ্রগতি ৪৬ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৪১ শতাংশ বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা মুখ্য সচিবকে জানান।
৩ একর জায়গার উপর নির্মাণাধীন ৮তলা একটি ভবন ও ১৫ তলার অপর একটি লাইব্রেরি ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে কী কী থাকছে তারও খোঁজখবর নেন। একপর্যায়ে প্রকল্প বা নকশা থেকে মার্কেট প্লাজা, মিউজিয়াম ও জিমনেসিয়াম বাধ দিতে বলেন তিনি। প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনায় তিনি বলেন, মার্কেট প্লাজার প্রয়োজন নেই। মার্কেট তো সব জায়গায় আছে। আর জিমনেসিয়ামের দরকার কী! এটা কি ইউরোপ! প্রয়োজন নেই। পাবলিক পারপাস হলে জিমনেসিয়াম করা যায়। এ প্রকল্পের অন্যতম আরেকটি অংশ হলো শহীদ মিনার পুনর্নির্মাণ। এ বিষয়ে মুখ্য সচিব বলেন, শহীদ মিনার পুনর্নির্মাণ হলে তো ভালো। নতুন করে নির্মাণ যেহেতু হবে সে ক্ষেত্রে একটু তো মেনে নিতে হবে। কিছুদিন অন্যত্র অনুষ্ঠান করলে তো সমস্যা নেই। এটি নিয়ে বিরোধিতা যুক্তিযুক্ত নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন। মিউনিসিপাল হাই স্কুল মাঠে সাময়িক সময়ের জন্য শহীদ মিনার করার জন্য মেয়রের সাথে কথা হয়েছে উল্লেখ করে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা মুখ্য সচিবকে জানান, মূল শহীদ মিনারের পুনর্নির্মাণ কাজ শেষ হলে মিউনিসিপাল স্কুলের শহীদ মিনারটি স্কুল কর্তৃপক্ষ ব্যবহার করতে পারবে। এমনিতে ওই স্কুলে কোনো শহীদ মিনার নেই। এর আগে সকাল সাড়ে আটটায় বন্দরের বে-টার্মিনাল পরিদর্শন করেন ।
গতকাল সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সফরের দ্বিতীয় দিনের এসব কর্মযজ্ঞ পরিদর্শনের সময় মুখ্য সচিবের সাথে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর, জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাবেদ আহমেদ, বিভাগীয় কমিশনার মো. কামরুল হাসান, জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম এহেছানুল হায়দর চৌধুরী বাবুলসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন ।
আজ শনিবার সফরের তৃতীয় দিন তিনি চান্দগাঁও এলাকাধীন কালুরঘাট মৌজায় বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসনের কার্যালয়সহ সমন্বিত সরকারি অফিস ভবনের জন্য প্রস্তাবিত ভূমি এবং পরীর পাহাড়ে (কোর্ট বিল্ডিং) থাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় ও জেলা প্রশাসনের কার্যালয় পরির্দশন করবেন। উল্লেখ্য গত বৃহস্পতিবার তিন দিনের সফরে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম আসেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ডা. আহমদ কায়কাউস। বৃহস্পতিবার তিনি মীরসরাইয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিল্প নগরসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৩৬০ কোটি ৭৯ লাখ টাকার বাজেট পেশ হবে
পরবর্তী নিবন্ধবে-টার্মিনাল চালু হলে গতিশীল হবে অর্থনীতি