স্থগিত হলো চসিকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

শূন্যপদ পূরণ হবে ২০২০ সালের সিদ্ধান্তে

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৮:৩১ পূর্বাহ্ণ

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আপত্তির পর স্থগিত করা হয়েছে শূন্যপদ পূরণে প্রকাশিত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। প্রকাশের ৮ দিনের মাথায় গত বৃহস্পতিবার স্থগিত করা হয়। একইসঙ্গে ১৯ মাস আগে ঘোষিত পৃথক ছয়টি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে শূন্যপদগুলো পূরণের উদ্যোগ নিচ্ছে সংস্থাটি। এর আগে ২০১৮ সালের একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে স্থগিত করেছিল চসিক।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৮০০ শূন্যপদ পূরণে ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি পৃথক ছয়টি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। এতে ৫০ হাজারের অধিক আবেদন জমা পড়ে। ওই বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। উল্টো গত ১৫ সেপ্টেম্বর ১৩ পদে ৬০ জন নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি দেয় চসিক। সেখানে ২০২০ সালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পদগুলোও রয়েছে। এছাড়া পর্যায়ক্রমে আরো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের গুঞ্জন ছিল। সর্বশেষ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয় গত ১৬ সেপ্টেম্বর। এতে ক্ষোভে প্রকাশ করেন চসিকে কর্মরত অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ওইদিন টাইগারপাসস্থ নগর ভবনে মেয়র দপ্তরের সামনে পৌনে চারঘন্টা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে চসিকের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির অস্থায়ী কমর্চারীরা। তারা বিজ্ঞপ্তির নানা অসঙ্গতি তুলে ধরেন। একইসঙ্গে অস্থায়ীদের স্থায়ীকরণের মধ্য দিয়ে শূন্যপদ পূরণের দাবি করেন।
এরপর ১৯ সেপ্টেম্বর চসিকের বিভিন্ন মাতৃসদন হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও দাতব্য চিকিৎসালয়ে অস্থায়ীভাবে কর্মরত মেডিকেল অফিসারগণ সিটি মেয়রকে স্বারকলিপি দেন। এতে তারা জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে অস্থায়ীদের দিয়ে শূন্যপদ পূরণের দাবি করেন। এছাড়া ‘চসিক অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিষদ’ও আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে অস্থায়ীদের স্থায়ী করার আল্টিমেটাম দেন। এছাড়া সিটি কর্পোরেশন শ্রমিক-কর্মচারী লীগ (সিবিএ)ও অস্থায়ীদের দিয়ে শূন্যপদ পূরণের পক্ষে অবস্থান নেন।
এ অবস্থায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর ঘোষিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি স্থগিত ঘোষণা করা হয়। চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম বলেন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি অনিবার্য করণে স্থগিত করা হল।
চসিক শ্রমিক ও কর্মচারী লীগ সভাপতি ফরিদ আহমেদ দৈনিক আজাদীকে বলেন, যতটুকু জেনেছি সম্প্রতি ঘোষিত বিজ্ঞপ্তিটি স্থগিত করে ২০২০ সালের বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে নিয়োগ দেয়া হবে। তিনি বলেন, ২০২০ সালের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, চসিকে অস্থায়ী ভিত্তিতে কর্মরতদের বয়স শিথিল করার পাশাপাশি অগ্রাধিকার দেয়া হবে। এতে দীঘদিন ধরে কর্মরত অস্থায়ীদের স্থায়ী হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। কিন্তু কিছুদিন আগে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বয়সের শর্ত দেয়া হয়। ফলে অস্থায়ীরা আবেদনও করতে পারত না। তই অস্থায়ীদের স্থায়ী হওয়ার পথও বন্ধ হয়ে যায়।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, স্থগিত হওয়া বিজ্ঞপ্তিতে থাকা পদগুলোর মধ্যে একটি করে জনসংযোগ অফিসার কাম প্রটোকল অফিসার, প্যাথলজিস্ট এবং ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা পদ রয়েছে। এছাড়া দুটি করে সহকারী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) ও সহকারী এস্টেট অফিসার, ৩টি করে সহকারী প্রকৌশলী (পুর), সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ), ১০টি চিকিৎসক (পুরুষ), ১১ টি চিকিৎসক (নারী), ৮টি উপসহকারী প্রকৌশলী (পুর), ৮টি উপসহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) ও ৫টি উপসহকারী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) পদ রয়েছে।
চসিকের সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে চসিকে ৯ হাজারের বেশি জনবল কর্মরত। সংস্থাটি বর্তমানে ১৯৮৮ সালের জনবল কাঠামো ধারা পরিচালিত হয়। এতে সৃজিত পদের সংখ্যা ৩ হাজার ১৮০ জন। এর বিপরীতে প্রায় ৯০০ পদ খালি আছে। এছাড়া ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে এক হাজার ৪৬ নতুন পদ সৃষ্টির অনুমোদন দিয়েছিল মন্ত্রণালয়। ২০১৯ সালের ডিসম্বরে বিভিন্ন ক্যাটাগরির এক হাজার ১৪৮টি পদে নিয়োগের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব করে চসিক। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ৬১২ পদের বিপরীতে সরাসরি ও ৫৩৬ পদে আউটসোর্সিং নীতিমালায় ছাড় দেয় মন্ত্রণালয়। এর প্রেক্ষিতে ২০২০ সালে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে চসিক। এর আগে ৪১ ক্যাটাগরির বিভিন্ন পদে নিয়োগে ২০১৮ সালের ১০ মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় একই বছরের জুন মাসে তা বাতিলের নির্দেশ দেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধওমানে প্রবাসী বিএনপি পরিবার ওয়ার্ল্ড অনলাইনের যাত্রা
পরবর্তী নিবন্ধরাস্তার পাশের সীমানা প্রাচীর চাপায় যুবক নিহত