চট্টগ্রামে বেশ কটা প্রাইভেট হাসপাতাল আছে তারপরেও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীকে মেঝেতে থাকতে হয়। এতগুলো প্রাইভেট হাসপাতাল থাকার পরেও মেডিকেলে কেন এত চাপ, কারণ সাধারণ মানুষের জন্য সরকারি হাসপাতালই একমাত্র ভরসা। প্রচুর টাকা পয়সা খরচ করে প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার মতন ক্ষমতা তাদের নেই। তাই চট্টগ্রামে প্রাইভেট হাসপাতালের চাইতেও বেশী জরুরি পাবলিক হাসপাতাল। যেখানে সাধারণ মানুষ অল্প খরচে চিকিৎসা নিতে পারবে, বিনা চিকিৎসায় ধুকে ধুকে মারা যাবে না। যাই হোক, প্রসঙ্গ সিআরবিতে প্রাইভেট হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা। প্রকৃতি ধ্বংস করে সবুজকে অবজ্ঞা করে সাধারণ মানুষকে ধোকা দেওয়া। হাসপাতাল যদি করতেই হয় তবে চট্টগ্রামে কি আর কোনো জায়গা পাওয়া যায়নি, সিআরবিকেই খুঁজে নিতে হলো! যেদিকে তাকালে শুধু সবুজের সমারোহ,পাখিদের কলকাকলীতে মুখরিত চারিদিক, মন প্রাণ ভরে উঠে এক অজানা আনন্দে। সেই সবুজ প্রকৃতি ধ্বংস করে বাণিজ্যিক হাসপাতাল গড়ে তুলবে, তারা ভাবে কী করে এরকম একটা অসম্ভবকে সম্ভব করবে! আসলে তারা কোনদিন শিরীষতলায় বসে প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নেয়ার সময়ই পায়নি, তারা তাদের প্রিয়জনদের সাথে সেই অসাধারণ সুন্দর রাস্তাগুলো ধরে হাঁটতে হাঁটতে সবুজ প্রকৃতির অপরূপ রূপ উপভোগ করার সুযোগ পায়নি! কেননা তারা যে চারদেয়ালের বিশাল প্রাসাদে বন্দী, তারা কী করে বুঝবে সিআরবির মূল্য, তারা কী করে জানবে শতবর্ষী গাছগুলোর মধ্যে কী যে মায়া লুকিয়ে আছে! তারা কী করে দেবে সাধারণ মানুষের নিঃশ্বাসের দাম, তাইতো চট্টগ্রামের মানুষের বুক ভরে নিঃশ্বাস নেয়ার একমাত্র জায়গাটাকেও ধ্বংস করতে চাইছে। মুক্তিযুদ্ধের কত স্মৃতি বিজড়িত এই সিআরবি চাকসুর প্রথম নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আবদুর রব পরম শান্তিতে ঘুমিয়ে আছেন সিআরবির মাটিতে। তাকে অশ্রদ্ধা জানানোর সাহস তারা পায় কোথা থেকে! হাসপাতালের যদি প্রয়োজনই হয় তাহলে সেটা অন্যকোথাও হোক, সিআরবিতে কেন? এরকম সবুজ আর কোথায় আছে, এত সুন্দর প্রাকৃতিক হাসপাতাল আর কোথাও কি পাওয়া যাবে! কত বিরল প্রজাতির গাছ কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সিআরবির বুকে, শতবর্ষী গাছগুলোর নীরব কান্না কি করে মেনে নেবে চট্টগ্রামবাসী! তাইতো চট্টগ্রামের প্রাণ প্রকৃতি ধ্বংস করে সিআরবিতে হাসপাতাল তৈরির দুঃসাহস কোনদিন সফল হতে দেবে না এই বীর চট্টলা।












