আদর্শিক আত্মশুদ্ধির সময়োপযোগী আহ্বান

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী | শনিবার , ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৫:৫৩ পূর্বাহ্ণ

এটি সর্বজনবিদিত; যেকোন জাতিরাষ্ট্রের উন্মেষ ও চলমান প্রক্রিয়ায় ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান-সমাজের সার্বিক উন্নয়ন-জনকল্যাণের গতি-প্রকৃতির নানা জটিল মিথস্ক্রিয়ায় নির্মিত হয় রাজনৈতিক রীতি-নীতির প্রেক্ষাপট। একনায়ক-সামরিক-স্বৈর-গণতান্ত্রিক পরিক্রমায় গ্রহণ-বর্জনের নানাবিধ পন্থায় পরিচালিত হয় স্বকীয় সত্ত্বার রাষ্ট্র ব্যবস্থা। আদর্শের ঘাত-প্রতিঘাতে তৈরি হয় দল-উপদল-দলীয় নেতৃত্ব ও কর্মীর আচার-আচরণ। দল গঠনের প্রণিধানযোগ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে; ধর্ম-বর্ণ-দলমত-অঞ্চল নির্বিশেষে সমগ্র জনগোষ্ঠীর সার্বিক মঙ্গল চরিতার্থে মাটি ও মানুষের প্রতি মমত্ববোধের প্রতিফলন। আদর্শিক ভিন্নতায় বিরোধ-বিচ্ছেদ, প্রতিযোগিতা-প্রতিহিংসা-পরশ্রীকাতরতা নিধন করে সংগত-সংযত সমাজস্বীকৃত আচরণবিধির অনুশীলন-পরিচর্যা ও জনমনজয়ী চরিত্র গঠনের মাধ্যমে দেশ ও দেশবাসীকে উপকৃত করার ইস্পাতকঠিন ব্রত গ্রহণের মধ্যেই নেতৃত্বের পরিশীলিত গ্রহণযোগ্য বিকাশ। উল্লেখিত বিষয়সমূহ বা ঐতিহ্য-শিক্ষা-অভিজ্ঞতা-সততা-ন্যায়পরায়নতা-মনন ও সৃজনশীলতার দৃশ্যমান অবগাহনে রাজনৈতিক নেতৃত্বের দৃঢ়তা নির্ভর করে।
পূর্ববাংলাকে সামাজিক-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অদমনীয় নিপীড়ন-নির্যাতন-নিষ্পেষণ-বৈষম্যের পটভূমিতে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে জাতীয় আদর্শের মূলস্তম্ভ তথা বাঙালি জাতীয়তাবাদ-গণতন্ত্র-সমাজতন্ত্র-ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিতে একটি গণতান্ত্রিক-অসাম্প্রদায়িক-মানবিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রবর্তনের দীর্ঘ সংগ্রাম উজ্জীবিত থাকে। বিপুল প্রাণ সংহারের বিনিময়ে চূড়ান্ত পর্যায়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের পরিসমাপ্তী ঘটিয়ে দেশের জনগণ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে লালসবুজের স্বাধীন মাতৃভূমির স্বাদ গ্রহণ করে আসছে। দুঃখজনক হলেও সত্য; ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট সভ্যতার নৃশংস হত্যাযজ্ঞে প্রায় সপরিবারে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বরণের পরবর্তী রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে হত্যা-ষড়যন্ত্র-কূটচক্র সেনা-স্বৈর শাসকদের অবাঞ্চিত-অনভিপ্রেত রাষ্ট্রশাসন দেশকে প্রচন্ড বিপর্যয়ের মুখোমুখী করে। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসে স্বাধীনতা সংগ্রাম-মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের দায়িত্বভার গ্রহণের পর বিভিন্ন দুরূহ ও দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে দেশের অবস্থানকে বর্তমান অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল বিশ্বের মহাসড়কে যাত্রার পথ উন্মুক্ত করে। পরিসরের স্বল্পতায় বিষয়সমূহের পুনরাবৃত্তি না করে এটুকুই শুধু বলা যায়; জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ রূপান্তরে তাঁর সার্থক ও সফল নেতৃত্ব আজ বিশ্বনন্দিত।
প্রাসঙ্গিকতায় উল্লেখ্য; আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলীয় বিভিন্ন কোন্দল-প্রতিহিংসা-অর্থ-ক্ষমতালিপ্সু রাজনীতি পরিত্যাজ্যে জনগণের যথার্থ কল্যাণ সাধনে সকলের হৃদয়গভীরে প্রোথিত হওয়ার মানসে দলের নেতা-কর্মীদের প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশনা বাস্তবিকই সময়োপযোগী। বর্ণচোরা-ছদ্মবেশী-অনুপ্রবেশকারী-বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ জড়িত কুশীলব-বশংবদরা বিভিন্ন অপকৌশল-ছলচাতুরী-অনৈতিক বিনিময়ে দল এবং সরকারের মধ্যে প্রচন্ড শক্তিমান হয়েছে বলে প্রবল জনশ্রুতি রয়েছে। দেশপ্রেমিক বরেণ্য বুদ্ধিজীবীদের অনেকের মতে অন্ধকারের পরাজিত অশুভশক্তি ও তাদের অনুসারীদের অবস্থান অপরিমেয় কদাচারে দেশকে যেকোন মুহূর্তে পর্যুদস্ত করতে ইতিমধ্যে সক্ষমতা অর্জন করেছে। সকল অভিশপ্ত আবেগ তাড়না-কর্ণাশ্রীত দোষারোপ-অসত্য অভিযোগে কল্পিত অভিমানে দু:সময়ে জীবনঝুঁকির বিনিময়ে পরীক্ষিত নেতা-কর্মীদের মূল্যায়নের বিনিময়ে অবমূল্যায়ন শুধু পাপ নয়; মহাপাপও বটে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রকৃত দলীয় আদর্শের ধারক-বাহকদের যারা মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির জনকের আদর্শিক অবিনাশী চেতনার নূন্যতম বিচ্যুতি না ঘটিয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার পরম ব্রত নিয়ে প্রতিনিয়ত জীবনযুদ্ধে লিপ্ত আছে; বস্তু-সত্যনিষ্ঠ তদন্তে তাদের আবিষ্কার ও ক্ষমতায়ন অনিবার্য হয়ে পড়েছে।
গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়; গত ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে দলের সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দলে বিদ্যমান দ্বন্দ্ব-বিভেদ নিরসনে দ্রুত দলকে তৃণমূল থেকে আরো শক্তিশালী করার নির্দেশনার পাশাপাশি দলের সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের এ ব্যাপারে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি সকল স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আগে তৃণমূলের বিরোধ মিটিয়ে ফেলার এবং বিভিন্ন নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে যারা লিখিত ক্ষমা চেয়েছেন তাদের মাফ করে দিয়ে দলীয় কর্মকান্ড পর্যবেক্ষণের পরামর্শও প্রদান করেন। সাংগঠনিক প্রতিবেদনে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও দলের অন্যান্য নেতাদের মধ্যে কোন্দল-দূরত্বের বিষয়টি সুস্পষ্ট হওয়ায় এমপিদের খবরদারি করতে মানা করে তিনি বলেন, ‘এমপিরা এমপিত্ব করবে, দলও করবে। কিন্তু খবরদারি করবে না। নানা বাস্তবতায় আমরা এমপিদের মনোনয়ন দিয়ে থাকি। তার অর্থ এই নয় যে, তারাও দলে খবরদারি করবে। কমিটি কমিটির গতিতে চলবে। দলের ভেতর উপদল তৈরি করা যাবে না। ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। দলকে শক্তিশালী করতে হবে। দুর্দিনের ত্যাগীদের মূল্যায়ন করতে হবে।’
করোনা অতিমারীর সময়কালে সরকারের পাশাপাশি দলীয় নেতা-কর্মীরা যেভাবে দেশের জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে সার্বক্ষণিক সেবা করে গেছেন তার প্রশংসা করে দেশরত্ন শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের সময় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা যেভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, সেভাবে আর কোনো রাজনৈতিক দলকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেখিনি। কেউ দাঁড়ায়নি।’ দলীয় সভানেত্রীর এই ধরনের বক্তব্যে নিঃসন্দেহে বলা যায়, করোনাযুদ্ধে সকল ঝুঁকিকে উপেক্ষা করে সম্মুখ যোদ্ধার সারথি যারা ছিলেন তারা অবশ্যই পর্যাপ্ত অনুপ্রেরণা-উৎসাহ-মানসিক প্রণোদনায় অতিশয় প্রমুদিত হবেন।
বঙ্গবন্ধুর সত্যবাদিতার আদর্শ উপলব্ধিতে আমরা যদি বাস্তব বিবর্জিত হয় বা কল্পনাপ্রসূত কোন বিষয়কে অতিমাত্রায় গুরুত্ব দিয়ে এর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ উপস্থাপন করি, তাহলে এটি কখনো একটি আদর্শিক দৃষ্টান্তের প্রায়োগিক অনুধাবন হবে না। সাহস করে সত্য বলা ও প্রতিষ্ঠার যে মহান স্বরূপ বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবনের প্রতিটি ক্ষণে উম্মোচন করেছেন তা বিশ্বেও বিরল। সত্যবাদীতার আরেকটি উদাহরণ হচ্ছে আত্মসমালোচনা। ১৯৭৪ সালের ১৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশনের উদ্বোধনী ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ কর্মী ভাইয়েরা, কোনদিন তোমরা আমার কথা ফেলো নাই। জীবনে আমি কোন দিন কন্টেষ্ট করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বা প্রেসিডেন্ট হই নাই। কোন দিন স্বার্থে অন্ধ হয়ে তোমাদের ডাক দেই নাই। কোনো দিন কোন লোভের বশবর্তী হয়ে কোনো শয়তানের কাছে মাথা নত করি নাই। কোনো দিন ফাঁসির কাষ্ঠে বসেও বাংলার মানুষের সঙ্গে বেঈমানী করি নাই।’
সেদিন বঙ্গবন্ধু আরও বলেছিলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি তোমরা আমার কথা শুনবা, তোমরা আত্মসমালোচনা করো, আত্মসংযম করো। তোমরা আত্মশুদ্ধি করো। তাহলেই দেশের মঙ্গল করতে পারবা।……… কিন্তু কিছু কিছু লোক যখন মধু-মক্ষিকার গন্ধ পায় তখন তারা এসে আওয়ামী লীগে ভীড় জমায়। আওয়ামী লীগের নামে লুটতরাজ করে। পারমিট নিয়ে ব্যবসা করার চেষ্টা করে। আওয়ামী লীগ কর্মীরা, আওয়ামী লীগ থেকে তাদের উৎখাত করে দিতে হবে – আওয়ামী লীগে থাকার তাদের অধিকার নাই। তাই বলছি, আত্মসমালোচনার প্রয়োজন আছে, আজ আত্মসংযমের প্রয়োজন আছে, আজ আত্মশুদ্ধির প্রয়োজন আছে।’ এমন নির্ভীক সাহসীকতায় সত্য বলা এবং সত্যের পথে নিয়োজিত থাকার জন্য সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অমরবাণী-বার্তা ও নির্দেশ দলীয় নেতা-কর্মীদের দিতে পেরেছেন ভারতবর্ষের রাজনৈতিক ইতিহাসে কয়জন নেতাই বা আছেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি নির্দেশনা এখনও যে কতটুকু প্রাসঙ্গিক; বঙ্গবন্ধু কন্যার বক্তব্যের নির্যাস উপলব্ধিতে তা সহজে বোধগম্য।
বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী রাষ্ট্র-সমাজ চিন্তা-চেতনা বরাবরই জনগণের সুখ-সমৃদ্ধির লক্ষ্যেই স্থির; যার মূলে ছিল অসাম্প্রদায়িক-সমাজতান্ত্রিক-মানবিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা। এই জনকল্যাণমূখী রাষ্ট্র-সমাজ ব্যবস্থার টেকসই সমৃদ্ধি নিশ্চিতে দুর্নীতিকেই বঙ্গবন্ধু প্রধান প্রতিবন্ধকতা হিসেবে বিবেচনা করেছেন এবং তা পরিহারকল্পে প্রায় প্রতিটি বক্তব্য-ভাষণে জনগণকে এই ব্যাপারে সচেতন করেছেন। রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল ক্ষেত্রে দুর্নীতিমুক্ত শাসন পরিচালনায় বঙ্গবন্ধুর শপথ ছিল নিখাঁদ এবং দুর্নীতি পরিত্রাণে এসব অমিয় ঘোষণা ছিল অত্যন্ত যৌক্তিক, যুগপোযোগী এবং খোলামেলা। অকপটেই তিনি এসব বিষয়কে জনগণের সম্মূখে প্রকাশ এবং এর প্রতিকারে সহযোগিতা আহবান করেছেন। ১৯৭২ সালের ৯ এপ্রিল আওয়ামী লীগের স্বাধীনতা উত্তর প্রথম কাউন্সিল অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু বলেন, “রাজনৈতিক স্বাধীনতা পাওয়া যেতে পারে, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা না হলে রাজনৈতিক স্বাধীনতাও ব্যর্থ হয়ে যায়। কেবল আওয়ামী লীগের সরকার হলে চলবে না। সঙ্গে সঙ্গে জনগণেরও সরকার।”
বঙ্গবন্ধু আরো বলেছেন, “ক্ষমতার জন্য আওয়ামী লীগ জন্মগ্রহণ করে নাই। বাংলাদেশে শোষণহীন সমাজ গঠন করার জন্যই আওয়ামী লীগ জন্মগ্রহণ করেছে। শোষণহীন সমাজ গড়ে তুলতে হবে। লোভের উর্ধ্বে উঠতে হবে। লোভ যেখানে ধ্বংস সেখানে। একবার যদি কেউ লোভী হয়ে যান, সে জীবনে আর মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না। শুধু আপনার মুখে কালি দেবেন না, কালি দেবেন সেই সাড়ে সাত কোটি মানুষের মুখে। যেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সাড়ে ৭ কোটি মানুষ সব স্বাধীন হয়েছে।”
সোনার বাংলা বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধু স্বভাবসুলভ সাবলীল ভঙ্গিতে সোনার মানুষ সন্ধানে অবিচল এবং প্রায়শ এই দেশের নির্লোভ, নির্মোহ ও ত্যাগী ব্যক্তিদের যথাযোগ্য মর্যাদাদানে নিরন্তর প্রয়াস অব্যাহত রেখেছিলেন। ১৯৭২, ৪ জুলাই বঙ্গবন্ধু কুমিল্লায় এক জনসভায় বলেছিলেন, “সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ পয়দা করতে হবে। এই চাটার চাটার অভ্যাস ত্যাগ কর। চাটার গোষ্ঠীর জ্বালায় আমি তিতে হয়ে গেলাম। এই চাটার গোষ্ঠীকে আমি বার বার ওয়ার্নিং দিচ্ছি। চাটার গোষ্ঠী আমার দলেই হোক, অন্য দলেই হোক, অন্য জায়গাওই হও, তোমাদের আমি ক্ষমা করতে পারবো না। আল্লাহ্‌ও ক্ষমা করবে না।”
১৯৭৫ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রীত্ব ছেড়ে রাষ্ট্রপতির দায়িত্বভার গ্রহণের প্রাক্কালে ২৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেষ ভাষণে বঙ্গবন্ধু শোষিতের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আকাঙ্খা ব্যক্ত করে আত্মসমালোচনা ও আত্মশুদ্ধির প্রকৃষ্ট উপায়ে ঋদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। আত্মশুদ্ধি-আত্মসমালোচনা-আত্মসংযমের কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হয়ে দেশকে যে ভালোবাসা যায় না; বঙ্গবন্ধু বরাবরই তা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। দলের শৃঙ্খলা মেনে অভ্যন্তরীণ অপকর্মের বিরুদ্ধে সত্যকন্ঠ উচ্চারণ ছাড়া বিশৃঙ্খল অবস্থায় যে কোন জাতি মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেনা; বঙ্গবন্ধুর মতোই বঙ্গবন্ধু কন্যার কন্ঠে উচ্চকিত বার্তাসমূহ জাতিকে নতুন করে পথনির্দেশনায় সহায়ক হবে- এই প্রত্যাশাটুকু ব্যক্ত করা মোটেও অমূলক বা অযৌক্তিক নয়।

লেখক : শিক্ষাবিদ, সাবেক উপাচার্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিনিয়োগবান্ধব নীতির কারণেই রপ্তানিতে বিস্ময়কর ভিয়েতনাম
পরবর্তী নিবন্ধরাউজানে সরবরাহ লাইন ফেটে বের হচ্ছে গ্যাস