পেকুয়ায় ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে পেকুয়া আলহাজ্ব কবির আহমদ চৌধুরী বাজার এলাকা। এসময় দু’গ্রুপের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় বেশ কয়েকজন ছাত্রদল কর্মী আহত হয়ে প্রথমে পেকুয়া সদর হাসপাতালে, পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল শুক্রবার সকালে পেকুয়ার সদর ইউনিয়নের পেকুয়া বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়, সম্প্রতি পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের ২১ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। কমিটি ঘোষণার পর থেকেই পদবঞ্চিত বেশ কয়েকজন ছাত্রদল নেতা ঘোষিত কমিটির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের তালা ভাঙচুর, বিক্ষোভ মিছিল সহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছিল। এ অবস্থায় ঘোষিত কমিটির আহবায়ক ফরহাদ হোসেন ও সদস্য সচিব মারুফুল ইসলামের নেতৃত্বে গতকাল সকাল ১০ টার দিকে একটি স্বাগত মিছিল বের করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, মিছিলটি মৌলভীপাড়া ব্রিজ থেকে শুরু করে পেকুয়া বাজার অভিমুখে ইসলামী ব্যাংক এলাকায় পৌঁছলে পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতা শওকত হোছাইন বিজয় ও রহিম উদ্দিনের নেতৃত্বে লাঠিসোটা নিয়ে অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে ৩০ মিনিট ধরে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় ব্যবসায়ী জানান, ঘটনার সময় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ পাওয়া গেছে। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে শওকত হোছাইন বিজয় ফেইসবুক লাইভে এসে বলেন, ‘এ মুহূর্তে পেকুয়া বাজার এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। আমি পার্টি অফিস দখলে নিয়েছি। অথর্ব কমিটিকে প্রতিহত করা হয়েছে।’ ফেইসবুক লাইভে থাকা অবস্থায় তিনি হকিস্টিকগুলো নিয়ে সবাইকে এগিয়ে হামলা চালানোর নির্দেশ দিতে শুনা যায়।
এদিকে ঘটনার পর এক সংবাদ সম্মেলনে পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব মারুফুল ইসলাম বলেন, ‘কেন্দ্র ঘোষিত কমিটির স্বাগত মিছিলে ছাত্রলীগ যুবলীগের নেতৃত্বে অতর্কিত হামলা চালানো হয়। প্রথমে শ্রমিকলীগের নেতা শাহাদাতের নেতৃত্বে চৌমুহনীতে আমাদের মিছিলের পেছনদিক থেকে হামলা চালানো হয়। পরে বাধা ডিঙ্গিয়ে আমাদের মিছিলটি পেকুয়া বাজার অভিমুখে ইসলামি ব্যাংকের সামনে পৌঁছলে আবারো হামলা চালিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করা হয়। পদবঞ্চিত দুইজন ছাত্রদল নেতা ছাত্রলীগের সাথে মিশে এ হামলা চালিয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি আরো বলেন, আহত ছাত্রদল নেতাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানেও হামলা চালায় শ্রমিকলীগের নেতারা।’
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি বাহাদুর শাহ বলেন, ‘ আমাদের দলের মধ্যে মান-অভিমান থাকবে। এটার সুযোগ নিয়ে ছাত্রলীগ যুবলীগ ছাত্রদলের মিছিলে হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজন ছাত্রদল নেতাকে আহত করেছে। মিছিলে প্রকাশ্যে গুলি চালানো হয়েছে দাবি করে আহত ছাত্রদল নেতাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেও তাদের উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।’