তদারকি জোরদার, মামলা-জরিমানা

জেলা-উপজেলায় লকডাউন

| বুধবার , ২৮ জুলাই, ২০২১ at ১১:৫৭ পূর্বাহ্ণ

সীতাকুণ্ড : সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি জানান, করোনা মহামারী প্রতিরোধে কঠোর লকডাউনে অভিযান অব্যাহত রেখেছে সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মহাসড়কে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টহল ছিল জোরদার। গতকাল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে দিনব্যাপী অভিযান পরিচালিত হয়। এসময় নবাগত উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইকবাল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এত অভিযান ও জরিমানা, এরপরও নানা ছুতোয় মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে। এ ছাড়া সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে শ্রমজীবী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও নিম্ন আয়ের মানুষের বাইরে চলাচল ছিল চোখে পড়ার মতো। উপজেলার সিটি গেইট থেকে বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত এলাকায় পরিচালিত অভিযানে সরকারি আইন অমান্য করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখায় ৯টি মামলা দায়ের করা হয়। এতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ২৩ হাজার ৫শ টাকা জরিমানা করা হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদাত হোসেন জানান, সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া লকডাউন কার্যকরে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

হাটহাজারী : হাটহাজারী প্রতিনিধি জানান, হাটহাজারীতে কঠোর লকডাউনের ৫ম দিনে উপজেলা প্রশাসন গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেছে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু রায়হান স্থানীয় বাস স্ট্যান্ড, চৌধুরীহাট বাজার, আমান বাজার, বড় দীঘির পাড় প্রভৃতি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন, সরকারি বিধিনিষেধ অমান্য করায় ৭টি মামলা ও নগদ ৫ হাজার ২শ টাকা জরিমানা করেন।
এসি ল্যান্ড আবু রায়হান বলেন, অভিযান পরিচালনার সময় লোকজনকে সচেতন করা হয়। কঠোর লকডাউন কার্যকর করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত রাখা হবে।

বাঁশখালী : বাঁশখালী প্রতিনিধি জানান, বাঁশখালী উপজেলায় লকডাউন কার্যকর করতে প্রশাসন মাঠে রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরী ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ মাযহারুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে পৃথক দুটি টিম বাঁশখালীর প্রধান সড়কসহ বিভিন্নস্থানে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। এসময় স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করায় ১০ মামলায় ১৬ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
এ ব্যাপারে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি সাধারণ জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ও লকডাউন কার্যকর করার আহবান জানান। এদিকে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন সূত্রে জানা যায়, বাঁশখালী উপজেলায় ২৭ জুলাই পর্যন্ত ৮২১ জন করোনা আক্রান্ত এবং ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার ২১ জনের করোনা পজিটিভ হয়েছে।

রাঙ্গুনিয়া : রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি জানান, বিধিনিষেধ অমান্য করায় রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ২২টি মামলায় ৮ হাজার ৮০০ টাকা জরিমানা করেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ। গতকাল মঙ্গলবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইফতেখার ইউনুস ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাজিব চৌধুরী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পৃথক এই অভিযান পরিচালনা করে মামলা ও জরিমানা আদায় করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ইছাখালী, শান্তিরহাটসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়েছেন ইউএনও ইফতেখার ইউনুস। এসময় তিনি ১৪ মামলায় ২৮০০ টাকা জরিমানা আদায় করেন। অন্যদিকে রোয়াজারহাট, মরিয়মনগর, লিচুবাগান ও দোভাষীবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব চৌধুরী। এসময় সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে দোকান খোলা রাখার জন্য ৮টি মামলায় মোট ৬ হাজার টাকার অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
এদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চললেও দিনভর সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক দেখা যায়। এমনকি সাধারণ মানুষকেও স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ঘুরাফেরা করতে দেখা গেছে।
পোমরা ইউনিয়নের মালিরহাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই নির্দিষ্ট সময়ের পরও সব দোকানপাট খোলা ছিল। সড়কে আপন মনে ঘুরে বেড়ানোর পাশাপাশি দোকানে বসে আড্ডা মারছেন সাধারণ মানুষ। একই অবস্থা ছিল রাঙ্গুনিয়ার সর্বত্র।
এই বিষয়ে ইউএনও ইফতেখার ইউনুস বলেন, অভিযানকালে অর্থদণ্ড প্রদান করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে সচেতন করা হয়। তবে সাধারণ মানুষ নিজে থেকে সচেতন না হলে বিধিনিষেধ মানানো সম্ভব নয়। তিনি সকলকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ২ হাজার লিটার চোরাই তেল জব্দ, গ্রেপ্তার ২
পরবর্তী নিবন্ধমহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন