এক দিনের মাথায় পেছনে পড়ে গেল আগের রেকর্ড। মহামারীর ষোল মাসে প্রথমবারের মতো এক দিনে আড়াইশ ছাড়ানো মৃত্যু দেখতে হলো বাংলাদেশকে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে রেকর্ড ৫২ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে ১৪ হাজার ৯২৫ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। আর আক্রান্তদের মধ্যে আরও ২৫৮ জনের প্রাণ গেছে এ ভাইরাসের কারণে। খবর বিডিনিউজের।
আগের দিন সোমবার সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ১৯২ নতুন রোগী শনাক্তের পাশাপাশি রেকর্ড ২৪৭ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পরদিন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সামান্য কমলেও মৃত্যুর সংখ্যা পৌঁছেছে দুঃখ জাগানো নতুন উচ্চতায়। নতুন আক্রান্তদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৯৪ হাজার ৭৫২ জনে। আর আক্রান্তদের মধ্যে মোট ১৯ হাজার ৭৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এ পর্যন্ত। সরকারি হিসেবে এক দিনে সেরে উঠেছেন আরও ১২ হাজার ৪৩৯ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হলেন ১০ লাখ ২২ হাজার ৪১৪ জন। করোনার দাপটে মৃত্যুর সংখ্যা গত ২৭ জুন থেকেই একশর উপরে থাকছিল প্রতিদিন। ৭ জুলাই তা প্রথমবারের মতো ২০০ ছাড়িয়ে যায়। এবার তা আড়াইশ ছাড়াল। ভাইরাসের বিস্তার রোধের কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেই ৬ জুলাই প্রথমবারের মতো দৈনিক শনাক্ত রোগী ১০ হাজার ছাড়ায়। তারপর ২৭ জুলাই রেকর্ড ১৫ হাজারের বেশি নতুন রোগী শনাক্তের খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত এক দিনে শুধু ঢাকা বিভাগেই ৬ হাজার ১৮৮ জনের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা দিনের মোট আক্রান্তের ৪১ শতাংশের বেশি। এই সময়ে যে ২৫৮ জন মারা গেছেন, তাদের ৮৪ জনই ছিলেন ঢাকা বিভাগের। চট্টগ্রাম বিভাগে ৬১ জন এবং খুলনা বিভাগে ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে সারা দেশে মোট ৫২ হাজার ৪৭৮টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৭৫ লাখ ৫৮ হাজার ৭১১টি নমুনা। নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় দৈনিক শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ, যা আগের দিন ২৯ দশমিক ৮২ ছিল।
গত এক দিনে চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় ১৩১০ জন, কক্সবাজারে ৩১৫ জন, ফেনীতে ১২০ জন, নোয়াখালীতে ২২১ জন, লক্ষ্মীপুরে ১৬৯ জন, চাঁদপুরে ১৮০ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৮৪ জন এবং কুমিল্লায় ৮৩৫ জন আক্রান্ত হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়।
মৃত ২৫৮ জনের মধ্যে ১৪৭ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ৫৪ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৩১ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ১৬ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ৮ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে এবং ২ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিল। তাদের মধ্যে ১৩৮ জন ছিলেন পুরুষ, ১২০ জন ছিলেন নারী। ২০২ জন সরকারি হাসপাতালে, ৩৯ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং ১৫ জন বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ২ জনকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে।
এদিকে, বিশ্বে করোনায় মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৪১ লাখ ৭১ হাজার ছাড়িয়েছে। শনাক্ত হয়েছে ১৯ কোটি ৪৮ লাখের বেশি রোগী।