অনলাইনে ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ’ বন্ধের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মান ও মানবাধিকার আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন অথবা বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। গতকাল সোমবার ‘ভিন্নমতের স্থান নেই’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটির এই আহ্বান এসেছে। বাংলাদেশের ১০ জন নাগরিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলা পর্যালোচনা করে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেবল ‘ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের সমালোচনা’ করার কারণে তাদের ‘বিনা বিচারে আটক ও নির্যাতনের মত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার’ হতে হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, ২০২১ সালের জুলাই পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অন্তত ৪৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বেশিরভাগকেই অনলাইনে ‘ভুয়া ও আক্রমণাত্মক’ বক্তব্য প্রকাশের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় বলে এ মানবাধিকার সংগঠনের ভাষ্য। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রেপ্তারদের মধ্যে সাংবাদিক, কার্টুনিস্ট, গায়ক, অধিকারকর্মী, উদ্যোক্তা, শিক্ষার্থী, এমনকি একজন কৃষকও রয়েছেন, যিনি লিখতে বা পড়তে জানেন না। এর মধ্যে একটি মামলায় গ্রেপ্তার লেখক মুশতাক আহমেদ ১০ মাস কারাগারে থেকে সেখানেই মারা গেছেন। কারাগারে তিনি ‘নির্যাতনের শিকার’ হয়েছিলেন বলে কারাবন্দি একজনের বরাতে অভিযোগ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, ডিজিটাল নিরপাত্তা আইনে মানহানির অপরাধকে যেভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তাতে ‘মারাত্মক ত্রুটি’ রয়েছে। এর মাধ্যমে আইনটিকে ‘ভিন্নমত দমনের হাতিয়ারে’ পরিণত করা হয়েছে। মানহানির অভিযোগকে ফৌজদারি আইনের বদলে দেওয়ানি আইনে বিচারের জন্যও বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।