ভোজ্যতেলের বাজার ফের অস্থির

মণপ্রতি বেড়েছে ১৫০-২০০ টাকা

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৭ জুলাই, ২০২১ at ১১:০১ পূর্বাহ্ণ

ফের বাড়ছে ভোজ্যতেলের দাম। ঈদের পর বাজার খোলার পরপরই পাইকারিতে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম মণপ্রতি ১৫০-২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। খাতুনগঞ্জের তেল ব্যবসায়ীরা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে গত কয়েকদিনের ব্যবধানে বুকিং দর বেড়েছে। তাই মূলত আন্তর্জাতিক বাজার বাড়ার প্রভাবে পাইকারিতে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে ভোক্তারা বলছেন, ব্যবসায়ীরা বাজারের চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে দাম বৃদ্ধি করে থাকে। দেখা যায়, আমদানি মূল্যের সাথে বিক্রয় মূল্যের বিরাট ব্যবধান।
গতকাল খাতুনগঞ্জ বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোরবানির ঈদের আগে প্রতি মণ (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) পাম তেল বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ১৫০ টাকায়। ঈদের পর মণপ্রতি ২০০ টাকা বেড়ে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৩৫০ টাকায়। অন্যদিকে ঈদের আগে সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ৫০০ টাকায়। ঈদের পর মণপ্রতি ১৫০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৬৫০ টাকায়।
খাতুনগঞ্জের কয়েকজন তেল ব্যবসায়ী জানান, খাতুনগঞ্জের বাজারে পণ্য বেচাকেনা ও লেনদেনে যুগ যুগ ধরে কিছু প্রথা চালু আছে। নিজেদের সুবিধার অনেক প্রথা আছে যেগুলো আবার আইনগতভাবেও স্বীকৃত নয়। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) স্লিপ’। তেল কিংবা অন্য কোনো পণ্য কেনাবেচায় ডিও বেচাকেনার মাধ্যমে আগাম লেনদেন হচ্ছে। দেখা যায়, পণ্য হাতে না পেলেও ওই স্লিপটিই বেচাকেনা হচ্ছে। কোনো কোম্পানি বাজার থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্যের ডিও কিনে নেয়। যে দরে ডিও কেনা হয়, তার বাজার দর যদি বেড়ে যায়, তখন পণ্যটি ডেলিভারি দিতে তারা গড়িমসি করে। আবার দেখা যায়, কোম্পানির পণ্যই আসেনি কিন্তু ডিও কিনে রেখেছেন অনেক বেশি। এর ফলেও কোম্পানি বাজারে পণ্য ডেলিভারি দিতে পারে না। ফলে এসব পণ্যের দামও নিয়ন্ত্রণে থাকে না। এক্ষেত্রে তেল ও চিনির ডিও বেচাকেনা বেশি হয়। বলা যায় ডিও কারসাজির কারণে মাঝে মাঝে পণ্যের দাম আকাশচুম্বি হয়ে উঠে। এই সুযোগে কিছু মৌসুমী ব্যবসায়ী কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।
দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জের ভোজ্য তেল ব্যবসায়ী এবং ফেরদৌস ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ ইউনুস দৈনিক আজাদীকে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার প্রভাবে পাইকারিতে ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে। দাম কমলে আবার কমে যাবে। ভোজ্যতেলের বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন দৈনিক আজাদীকে বলেন, ভোগ্যপণ্যের দাম ব্যবসায়ীরা একেক সময় একেক অজুহাতে বৃদ্ধি করে থাকেন। আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং দর যদি বেড়েও থাকে, তারপরেও বাজারে এখন যেসব তেল মজুদ আছে, সেগুলো কিন্তু আগেই আমদানি হয়েছে। বুকিং দর বাড়লেও যে হারে দাম বাড়ে, বুকিং কমলে কিন্তু সে হারে দাম কমে না। বলা যায়, ভোগ্যপণ্যের বাজার সব সময়ই ব্যবসায়ীদের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। প্রশাসন মাঝে মাঝে আকস্মিক অভিযানে বের হয়ে কিছু জরিমানা করে তারপর আবার চুপ হয়ে যায়। ফলে বাজার ব্যবস্থাপনায় প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ থাকে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫১তম জন্মদিন আজ
পরবর্তী নিবন্ধনগরীর ছয় থানায় স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটি