বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের টিকার জন্য নিবন্ধনের ন্যূনতম বয়সসীমা কমিয়ে ১৮ বছর করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম।
আজ শুক্রবার (২৩ জুলাই) সকালে মুগদা জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। তবে কবে থেকে এ নিয়ম চালু হবে তা এখনও ঠিক হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। বিডিনিউজ
মহাপরিচালক বলেন, “টিকা নেওয়ার জন্য নিবন্ধনের সর্বনিম্ন বয়স ১৮ বছর করে দেওয়া হবে। এটার ব্যাপারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মহোদয় আজ সকাল বেলা আমাকে জানিয়েছেন। আমরা এটা আমাদের কমিটিতে আলোচনা করব এবং কীভাবে এটা করা যাবে সেটা আমরা জানাব।”
এক সপ্তাহ আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকও টিকার নিবন্ধনের ন্যূনতম বয়সসীমা কমিয়ে ১৮ বছর করার পরিকল্পনার কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, “করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গঠিত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি টিকার জন্য নিবন্ধনের বয়সসীমা কমিয়ে ১৮ বছর করার সুপারিশ করেছে। আমাদের ছেলেমেয়েদের তাড়াতাড়ি স্কুল-কলেজে পাঠাতে চাই। শিক্ষকদের টিকা দিচ্ছি, এখন ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে যারা আছে, তাদেরও টিকার আওতায় নিয়ে আসব।”
বাংলাদেশে গত ২৬ জানুয়ারি টিকার জন্য নিবন্ধন শুরু হয়। শুরুতে ৫৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের টিকার জন্য নিবন্ধন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। পরে তা তিন ধাপে কমিয়ে ৩০ বছরে নামিয়ে আনা হয়।
অর্থাৎ যাদের বয়স ৩০ বছর বা তার বেশি, কেবল তারাই এখন সুরক্ষা প্ল্যাটফর্মের ওয়েবসাইটে গিয়ে টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারছেন।
তবে মহামারী মোকাবেলায় সম্মুখসারির কর্মী, বেশ কিছু পেশাজীবী শ্রেণি, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, প্রবাসী কর্মী এবং প্রাধিকার তালিকায় থাকা ব্যক্তিরা নির্ধারিত বয়সসীমার বাইরেও নিবন্ধনের সুযোগ পাচ্ছেন।
খুরশীদ আলম জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা করে তারা দ্রুত সময়ের মধ্যেই তা ১৮ বছর করার বিষয়ে কাজ শুরু করবেন।
গ্রাম পর্যায়ে প্রান্তিক মানুষকে কীভাবে আরো সহজ টিকা দেওয়া যায় সে বিষয়টি নিয়ে সরকার ভাবছে বলেও জানান তিনি।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় এনে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার কথা সরকার বেশ কিছুদিন ধরেই বলে আসছে।
করোনাভাইরাস মহামারীতে গত বছরের মার্চ থেকে বন্ধ থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কয়েক দফা চেষ্টা করেও খুলে দেওয়া সম্ভব হয়নি সংক্রমণ পরিস্থিতির বার বার ওঠা-নামার কারণে।
ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে আজ শুক্রবার নতুন করে লকডাউন শুরুর বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, “ঈদের আগে দুই সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধে তেমন প্রভাব দেখা যায়নি। তবে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে সংক্রমণ কমেছে। আজকে যে কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয়েছে, সেটা কয়েকদিন গেলে বোঝা যাবে। পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় এখন কিছু বলা যাচ্ছে না। আমাদেরকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তবে এটা আমি জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই, সরকারের ব্যবস্থাপনা যথেষ্ট ভালো আছে।”
খুরশীদ আলম বলেন, “সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে অক্সিজেনের চাহিদা বেড়ে দিনে ২০০ টনে পৌঁছে গেছে। স্বাভাবিক সময়ে অক্সিজেনের চাহিদা থাকে ৭০ থেকে ৯০ টনের মতো। তবে দেশে এখনো অক্সিজেনের মজুদ আছে এবং ভারত থেকেও আমদানি হচ্ছে।”
কোভিড রোগীর চাপ সামলাতে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় ফিল্ড হাসপাতাল করার পরামর্শ এসেছে বলেও জানান তিনি।
মুগদা হাসপাতালের পর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল এবং মহাখালীর শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালও ঘুরে দেখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।